অনেক সময় অনেকেরই নাকের দুর্গন্ধ হয়ে থাকে। নাকের এই দুর্গন্ধ কারও ক্ষেত্রে সাময়িক, কারও ক্ষেত্রে স্থায়ী রূপ লাভ করে। যেসব কারণে সাধারণত নাকে দুর্গন্ধ হয় সেগুলো হচ্ছে- সাইনোসাইটিস, নাকের প্রদাহ বা ইনফেকশন, নাকের মধ্যে কোনো জিনিস ঢুকানো এবং এট্রোফিক রাইনাইটিস, যে রোগে নাকের ঝিলি্ল ধীরে ধীরে মরে যায়। যে রোগের কারণে নাকে দুর্গন্ধের সৃষ্টি হয় তা এট্রোফিক রাইনাইটিস।
এট্রোফিক রাইনাইটিস : এটি নাসারন্ধ্রের ঝিল্লি এবং নাকের ভেতরের দুই পাশের হাড় বা টারবিনেটগুলোকে আবৃত করে রাখা ঝিল্লির দীর্ঘমেয়াদি এমন একটি রোগ, যাতে ঝিলি্লগুলো ক্রমশ মরে গিয়ে চুপসে যেতে থাকে।
ফলে নাকের মধ্যকার জায়গা বাড়ে এবং মরা ঝিল্লি খসে পড়ে পচে তা থেকে দুর্গন্ধ ছড়ায়। এট্রোপিক রাইনাইটিস সাধারণত প্রাইমারি এবং সেকেন্ডারি দুই ধরনের হয়।
প্রাইমারি এট্রোফিক রাইনাইটিস : প্রাইমারি এট্রোফিক রাইনাইটিসের কারণ এখনো অজানা। তবে কারণ অনুসন্ধানের জন্য কিছু তত্ত্বকে এক্ষেত্রে দায়ী বলে গণ্য করা হয়। যেমন- হরমোনজনিত বিঘ্নতা, অপুষ্টিজনিত কারণ, ইনফেকশন, স্ববিরোধী দেহপ্রতিরক্ষা ইত্যাদি নাকের এই সংবেদনশীল প্রতিক্রিয়াকে উস্কে দেয়।
রোগে ক্ষতিগ্রস্ত নাসারন্ধ্র : এই রোগে নাকে উঁচু স্তরীভূত স্তরটি ক্ষয় হয়ে অপেক্ষাকৃত পাতলা স্তরে পরিবর্তিত হতে থাকে। সে সঙ্গে পানির মতো তরল (সেরাস) পদার্থ নিঃসরণকারী গ্ল্যান্ড, ব্লাড সাইনোসয়েড, স্নায়ু বা নার্ভ মরে যেতে থাকে। একই রকম পরিবর্তন দেখা
দেয় রক্তনালীগুলোতে। রক্তনালীর প্রান্তগুলো বন্ধ হয়ে মরে যেতে থাকে। এছাড়া নাসারন্ধ্রের দুই পাশে ঢাকনার মতো হাড়গুলো ক্রমশ ছোট হতে থাকে।
ফলে নাসারন্ধ্রের পথ প্রশস্থ হতে থাকে।
উপসর্গ ও লক্ষণ : সাধারণত মেয়েদের এই সমস্যা বেশি হয়। যৌবনের শুরুতেই এই রোগের লক্ষণ প্রকাশ পেতে থাকে। নাকের ঘ্রাণশক্তি বহনকারী স্নায়ু নষ্ট হওয়ার কারণে রোগী এই দুর্গন্ধের কিছুই অনুভব করে না। রোগীর নাকের মধ্যে মরা চামড়ার অনেক খণ্ড বা বস্টি আটকে থাকে, ফলে নাক বন্ধ মনে হয়।
এই বস্টিগুলো টেনে বের করার সময় নাক দিয়ে রক্ত পড়তে পারে।
চিকিৎসা : শুধু ওষুধে এই রোগ পুরোপুরি সারবে এমনটি নিশ্চিত করে বলা যায় না। তবে টিচকিৎসার উদ্দেশ্য হচ্ছে নাককে পরিষ্কার ও পরিচ্ছন্ন জীবাণুমুক্ত রাখা। এ জন্য নাক পরিষ্কারের ব্যবস্থা করা হয়। একটি বিশেষ সিরিঞ্জের (হিগিনসন্স সিরিঞ্জ) সাহায্যে ক্ষার জাতীয় বিশেষ দ্রবণ দিয়ে নাক দৈনিক ২-৩ বার পরিষ্কার করা যায়।
এ ছাড়া গি্লসারিনে ২৫% গ্লুকোজ মেশানো সলিউশন নাক পরিষ্কার করার পর নাকে দিতে হয়। এছাড়া ইয়াংস মাধ্যমে নাকের ছিদ্র অন্ত ছয় মাসের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়। তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই নাক খুলে দেওয়ার পর ফের একই অবস্থা দেখা দেয়।
লেখক : সহযোগী অধ্যাপক, হলি ফ্যামিলি রেড ক্রিসেন্ট মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। ফোন:০১৬৭২৭৬৫৭৩৯
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।