আমি সততা ও স্বচ্ছতায় বিশ্বাস করি।
শ্রীমঙ্গলে প্রশাসনের নাকের ডগায় দাঁড়িয়ে একের পর এক খুন হয়েই চলেছে। বেড়েছে চুরি, ছিনতাই, চাদাবাজী বিভিন্ন ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকান্ড। এবার মোবাইল ফোনের একটি মেমোরি কার্ডের মালিকানা নিয়ে ঝগড়াঝাটির জের ধরে প্রতিপরে হামলায় এক যুবক নিহত হয়েছে। এ নিয়ে শ্রীমঙ্গলে ২৫ দিনে ৫টি খুনের ঘটনা ঘটেছে।
পুলিশি তৎপরতায় ভাটা পড়েছে। এদিকে পরপর খুনের ঘটনায় গোটা শহরে আতঙ্ক ছরিয়ে পড়েছে।
জানা যায়, গত সোমবার শ্রীমঙ্গল উপজেলার আশিদ্রোণ ইউনিয়নের খাসগাঁও গ্রামের বাসিন্দা মো. দিদার মিয়ার ছেলে মো. আইয়ুব আলী (১৯) মর্মান্তিকভাবে খুন হয়েছে। সোমবার দুপুরে প্রতিপরে হাতে গুরুতর আহত হবার পর সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আইয়ুব মৃত্যুবরণ করে। এ ব্যাপারে শ্রীমঙ্গল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে।
মামলার এজাহার ও নিহতের পারিবারিক সূত্র জানায়, একটি মোবাইল ফোনের মেমরি কার্ড ক্রয় বিক্রয়ের ঘটনাকে কেন্দ্র করে সোমবার দুপুরে আইয়ুব আলীকে শহরের শাপলাবাগ রেল গেইট সংলগ্ন এলাকায় মো. ছাত্তার মিয়ার পুত্র সজল মিয়া (১৯) ও তার ভাই ভূট্টো ওরফে গিট্টু (২১) কাঠের বর্গা দিয়ে আইয়ুবকে উপর্যুপরী আঘাত করে। এতে আইয়ুব আলী গুরুতর আহত হয়। এলাকাবাসী গুরুতর আহত আইয়ুব আলীকে প্রথমে শ্রীমঙ্গল হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখান থেকে তাকে মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। সেখানে তার অবস্থার অবনতি ঘটলে বিকেলে তাকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়।
সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় সেখানে চিৎিসাধীন অবস্থায় আইয়ুব আলী মারা যায়। গতকাল মঙ্গলবার সকালে নিহতের লাশ ময়না তদন্তের জন্য মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়। আইয়ুব আলী খুনের ঘটনায় তার মা পারভীন বেগম বাদী হয়ে ভূট্টো ও সজলসহ অজ্ঞাতনামা আরো কয়েকজনকে আসামী করে শ্রীমঙ্গল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।
উল্লেখ্য, এর আগে গত ১৪ এপ্রিল সন্ত্রসীদের ছুরিকাঘাতে নিহত ৩নং শ্রীমঙ্গল ইউনিয়নের সন্ধানী আবাসিক এলাকার বাসিন্দা কলেজছাত্র পুলক হত্যার পর মাত্র দু’দিনের মাথায় ১৬ এপ্রিল হত্যা করা হয় আশিদ্রোণ ইউনিয়নের গাজীপুর গ্রামের মৃত তোরাব আলীর ছেলে আলতাফ হোসেন (৩৬) কে। তারও দু’দিন পর গত ১৮ এপ্রিল কালিঘাট ইউনিয়নের ফিনলে টি কোম্পানীর লাখাই ছড়া চা বাগানের ভারতীয় সীমান্তবর্তী এলাকায় এক খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বী আদিবাসী কিশোরীর গলাকাঁটা লাশ পাওয়া যায়।
ঘটনার তদন্তে জানা যায়, খ্রিষ্টান ধমালম্বী চা শ্রমিক ধনু কন্দের মেয়ে রেজিনা কন্দ (২০) কে ধর্ষণের তাকে গলা কেঁটে হত্যা করা হয়। রেজিনার মস্তকবিহীন দেহ বস্তাবন্দী করে ফেলে রেখে পালিয়ে যায় দুস্কৃতিকারীরা। এদিকে গত ৩০ মে লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের ভেতরে রেল ক্রসিংয়ের পাশে উত্তম কুমার দাস (২৫) নামের এক যুবকের লাশ পাওয়া যায়। উপজেলার মিজৃাপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা উপনন্দ দাসের ছেলে উত্তম কুমার দাসকে তার বন্ধুরা খুন করেছে বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়। এ ব্যাপারে উত্তমের বাবা বাদী হয়ে গত ৮ মে মৌলভীবাজার চীপ জুডিসিয়্যাল আদালতে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
উত্তম হত্যা মামলার কার্যক্রম হাতে নেওয়ার আগেই দু’ুদনের মধ্যে আরেকটি খুনের ঘটনায় সন্ত্রাসীদের লাঠির আঘাতে গত ৯ মে নিহত হয় আইয়ুব। এভাবে শ্রীমঙ্গল উপজেলায় ২৫ দিনে ৫ টি খুনের ঘটনা ঘটলেও পুলিশি তৎপরতায় কোন উদ্যোগ পাওয়া যাচ্ছে না। সাধারণ জনগনের দাবী থানা প্রশাসনের আসকারি পেয়েই শহরে বেড়ে ওঠেছে নানা অপরাধ কর্মকান্ড। অনেকে আবার এসকল খুনের পেছনে পুলিশের সমঝোতা থাকতে পারে বলে সন্দেহ করছেন। ফলে আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি আর সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের চক্করে সমাজে শান্তিতে বসবাস করতে হিমশিম খাচ্ছেন সাধারণ জনগন।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।