আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

নাটকীয় জয়ে মোহামেডান শীর্ষে

জয়ের জন্য মোহামেডানের শেষ ওভারে প্রয়োজন ৫ রান। স্ট্রাইকিং এন্ডে মুক্তার আলী। নন স্ট্রাইকিং এন্ডে ১০৫ রানে অপরাজিত থাকা শামসুর রহমান শুভ। বোলার আলাউদ্দিন বাবু। ডট করেন প্রথম ও দ্বিতীয় বল।

তৃতীয় বলের আগে শামসুর এসে মুক্তারকে দেখিয়ে দেন কোথায়, কিভাবে খেলতে হবে। প্রথম দুই বলে কোনো রান না দেওয়া আত্মবিশ্বাসী আলাউদ্দিন বাবুর তৃতীয় বলটি ছিল ফুলটস। ফুলটস দেখেই সজোরে ব্যাট চালান মুক্তার। গালিতে ক্যাচ ওঠে। কিন্তু বল নিচু হওয়ায় ধরতে পারেননি বদলি ফিল্ডার আল-আমিন।

এমনকি থামাতেও পারেননি। বল চলে যায় সীমানার বাইরে। বাউন্ডারি। শেষ ৩ বলে জয়ের জন্য মোহামেডানের দরকার তখন ১ রান। আলাউদ্দিনের চতুর্থ ও পঞ্চম বলে কোনো রান নিতে পারেননি মুক্তার।

দুই দলের রান তখন সমান, ২৮২। টাই হওয়ার উত্তেজনায় কাঁপছে দুই দলের শিবির! শেষ বল কোনোরকমে ঠেকিয়েই প্রান্ত বদল করে নেন দুই ব্যাটসম্যান। এই প্রান্তবদলেই চির প্রতিদ্বন্দ্বী আবাহনীর বিপক্ষে জয় ছিনিয়ে নেয় মোহামেডান। টানটান উত্তেজনার ম্যাচটি ৩ উইকেটে জিতে মোহামেডান এখন এককভাবে পয়েন্ট তালিকার শীর্ষে। আর দুই হারে আবাহনীর অবস্থান তলানিতে।

চার বছর আগে একইভাবে শেষ বলে জয় পেয়েছিল মোহামেডান। সেবার শেষ বলে দরকার ছিল ৩ রান। বাউন্ডারি মেরেছিলেন মোহামেডানের বর্তমান কোচ খালেদ মাসুদ পাইলট। সেই পাইলটের দলই গতকাল জয় পেয়েছে আবারও।

টস হেরে গতকাল ব্যাট করতে নামে শিরোপা প্রত্যাশী আবাহনী।

৩২ রানে দুই ওপেনার শাহরিয়ার নাফিস ও নাজিমুদ্দিনকে হারিয়ে কোনঠাসা হয়ে পড়ে ধানমন্ডি পাড়ার দলটি। তৃতীয় উইকেট জুটিতে দুই শ্রীলঙ্কান ইন্ডিকা ডি শরম ও থারাঙ্গা পারানভিথানা ৬৫ রান যোগ করে দলকে একটি ভিত দেন। ইন্ডিকা ৩৩ রানে আউট হলেও পারানাভিথানা খেলেন ৬১ রানের ইনিংস। ৮৭ রানে তৃতীয় উইকেট হারানোর পর চতুর্থ উইকেট জুটিতে পারানাভিথানা ও মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত ৯৩ রান যোগ করেন ১৫.৪ ওভারে। সৈকত দলীয় সর্বোচ্চ ৭৬ রান করে মাত্র ৬৭ বলে ৩ চার ও ৪ ছক্কায়।

সৈকত ও আরেক শ্রীলঙ্কান থিলান কান্দাম্বী ৩৩ বলে ৭৬ রান যোগ করলে আবাহনীর স্কোর দাঁড়ায় ২৮২। এরমধ্যে কান্দাম্বী ৪৯ রান করেন মাত্র ২২ বলে ৩ চার ও ৪ ছক্কায়। অবশ্য বাংলাদেশের সাবেক অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা অসাধারণ বোলিং করেন গতকালের দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীর লড়াইয়ে। দুই স্পেলে বোলিং করে ৪০ রানে নেন ৪ উইকেট। এরমধ্যে ৬ বলের ব্যবধানে সৈকত ও কান্দাম্বীকে সাজঘরে ফিরিয়ে আবাহনীর রানের গতিকে টেনে ধরেন।

২৮৩ রানের টার্গেটে খেলতে নেমে ৪২ রানে দুই উইকেট হারিয়ে কোনঠাসা হয়ে পড়ে কিছুটা। দলীয় ৭৬ রানে শ্রীলঙ্কার সাবেক অধিনায়ক তিলকরত্নে দিলশান সাজঘরে ফিরলে ম্যাচ হেলে পড়ে আবাহনীর দিকে। ছক্কা মেরে হাফসেঞ্চুরি করা দিলশান আউট হন নাবিল সামাদকে সুইপ খেলতে যেয়ে। দিলশানের বিদায়ের পর শামসুর চতুর্থ উইকেট জুটিতে রাজিন সালেহকে নিয়ে ৪৯ এবং পঞ্চম উইকেট জুটিতে আফগানিস্তানের মো. নবীকে নিয়ে ১২.৪ ওভারে ৭৯ রান যোগ করেন। এই জুটিই মোহামেডানের জয়ের পথ তৈরি করে দেয়।

প্রাইম দোলেশ্বরের বিপক্ষে ৯০ বলে ১৪৬ রান করা আফগান গতকাল করেন ৪৭ রান। ৪৫ বলের ইনিংসটিতে ছিল ৩টি চার ও ২টি ছক্কা। ম্যাচ সেরা শামসুর রহমান শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থাকেন ১০৫ রানে। ১১৫ বলের ইনিংসটিতে লি ৮টি বাউন্ডারি ও ২টি ওভার বাউন্ডারি।

 

সংক্ষিপ্ত স্কোর

* আবাহনী: ২৮২/১০, ৪৯.৫ ওভার (নাজিমুদ্দিন ৯, শাহরিয়ার নাফিস ১৯, থারাঙ্গা পারানাভিথানা ৬১, ইন্ডিকা ডি শরম ৩৩, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত ৭৬, থিলান কান্দাম্বী ৪৯, আলাউদ্দিন বাবু ১০, অতি. ১৩।

মাশরাফি ৪/৪০, মুক্তার আলী ৩/৪৬, মো. নবী ২/৪০)।

* মোহামেডান: ২৮৩/৭, ৫০ ওভার (তিলকরত্নে দিলশান ৫১, উপল থারাঙ্গা ১১, শামসুর রহমান শুভ ১০৫*, রাজিন সালেহ ২১, মো. নবী ৪৭, মাশরাফি ১৮, মুক্তার আলী ১৬*। আল-আমিন ২/৫১, নাবিল সামাদ ৩/৫৪, রেজাউল ১/৪৭)।

 

 

সোর্স: http://www.bd-pratidin.com/

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।