... মুবারক হো-
আজ সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, সাইয়্যিদাতু নিসায়ি ইয়াওমিল ক্বিয়ামাতি, সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ, উম্মুল ইমামাইনিল হুমামাইন, আহাব্বুন নাসি ইলান নাবিইয়ি, সাইয়্যিদাহ, ত্বাহিরাহ, যাহরাহ, যাকিয়াহ, রদ্বিয়াহ, মারদ্বিয়াহ, বতুল, উম্মু আবীহা হযরত ফাতিমাতুয যাহরা আলাইহাস সালাম উনার সুমহান বিলাদত শরীফ
আজ ২০শে জুমাদাল উখরা শরীফ। সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, সাইয়্যিদাতু নিসায়ি ইয়াওমিল ক্বিয়ামাতি, সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ, উম্মুল ইমামাইনিল হুমামাইন, আহাব্বুন নাসি ইলান নাবিইয়ি, সাইয়্যিদাহ, ত্বাহিরাহ, যাহরাহ, যাকিয়াহ, রদ্বিয়াহ, মারদ্বিয়াহ, বতুল, উম্মু আবীহা হযরত ফাতিমাতুয যাহরা আলাইহাস সালাম উনার সুমহান বিলাদত শরীফ।
বিশুদ্ধ বর্ণনা মতে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার দুনিয়াবী ৩৭ বছর বয়স মুবারকে এবং উনার আনুষ্ঠানিক নুবুওওয়াত প্রকাশের প্রায় তিন বৎসর পূর্বে ২০শে জুমাদাল উখরা জুমুয়ার দিন ছুবহি ছাদিকের সময় তিনি যমীনে আবির্ভূত হন।
মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন, “নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক উনার বান্দাগণের মাঝে খুব কম সংখ্যক বান্দাই শোকর গোজার করে। ”
অন্য আয়াত শরীফ উনার মধ্যে মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “নিশ্চয়ই আলিমরাই মহান আল্লাহ পাক উনাকে ভয় করেন।
ভয় এবং শোকর একে অপরের পরিপূরক। ”
অর্থাৎ শুকরিয়া করতে হলে দরকার ভয় এবং তারও পূর্বে দরকার ইলম। যেহেতু কম সংখ্যক বান্দাই শোকর-গোজার করে সেহেতু কম সংখ্যক বান্দাই মূলত ইলম উনার প্রকৃত হিস্যার অংশীদার হয়।
প্রসঙ্গত বলতে হয়, সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ, সাইয়্যিদাতু নিসায়ি ইয়াওমিল ক্বিয়ামাতি, উম্মু আবীহা হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনার সম্পর্কে খুব কম লোকই প্রকৃত ইলম রাখে। উনার হাক্বীক্বত সম্পর্কে জানে।
উনার আলোচনা করে। উনার ফাযায়িল-ফযীলত মুবারক বর্ণনা করে। উনার অনুসরণ অনুকরণের গুরুত্ব অনুধাবন করে। অথচ উনি মহান আল্লাহ পাক উনার গুপ্তভেদ। মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব, আখিরী রসূল, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার গুপ্তভেদ বরং এক অর্থে অজুদ মুবারক।
(সুবহানাল্লাহ)
স্বয়ং সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন- “হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনি আমার হতে। ”
অন্য পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে, নূরে মুজাসসাম হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম তিনি আমার কলিজা মুবারক উনার টুকরা মুবারক। উনি আমার মনের কথা মুবারকই বলেন। ” (সুবহানাল্লাহ)
এই পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে উম্মু আবীহা হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনাকে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনি কত বেশি মুহববত মুবারক করতেন সে আলোচনা মুবারক উনার উল্লেখ করা হয়। কিন্তু আসলে এই মুহব্বত মুবারক উনার কথা ভাষায় অব্যক্ত।
কারণ নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহু হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনি মুহব্বত মুবারক উনার মূল। কাজেই উনিই যদি কাউকে চূড়ান্ত মুহব্বত মুবারক করেন সে মুহব্বত মুবারক উনার প্রাবল্য যে কত বেশি তা সাধারণের অনুধাবনের জন্য অকল্পনীয় এবং ভাষায় প্রকাশেরও অব্যক্ত।
পক্ষান্তরে হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনিও স্বীয় আব্বাজান নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে কত বেশি মুহব্বত মুবারক করতেন তাও ভাষা প্রকাশে অক্ষম। তাই বিছাল শরীফ উনার বিরহে উনার মর্মস্পর্শী উক্তি মুবারক যে এই বিরহ মুবারক যদি দিনের মধ্যে প্রবেশ করানো হতো তবে তা রাত হয়ে যেতো।
মূলত: এই নিছবত মুবারক, তায়াল্লুক মুবারক, মুহব্বত মুবারক অনুধাবনের যোগ্য শুধু যামানার ইমাম ও মুজতাহিদ, যামানার মহান মুজাদ্দিদ, মুজাদ্দিদে আ’যম আলাইহিস সালাম এবং সম্মানিত আহলে বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের।
মূলত, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে উম্মু আবীহা হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনার এমন অবর্ণনীয়, অবিচ্ছেদ্য, অনবদ্য মুহব্বতের সম্পর্ক ছিল যেন দুই ধনুকের সম্মিলনীর অবস্থা। (সুবহানাল্লাহ)। চরিত্রগতভাবে যেন একজন অপরজনের আয়না। (সুবহানাল্লাহ)
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনার সীরত-ছূরত মুবারক সর্বোত অংশেই ছিল নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার হুবহু অনুরূপ। যা হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালামগণ উনারা দ্ব্যর্থহীন কণ্ঠে এবং ভূয়সী ছানা-ছিফত মুবারক করে বর্ণনা করেছেন।
(সুবহানাল্লাহ)
বলার অপেক্ষা রাখে না সরকার অথবা জনগণ তথা সাধারণ মুসলমান, এসব বিষয় উপলব্ধি না করার কারণেই আজ ওৎপ্রোতভাবে বিবিধ গযবে ভারাক্রান্ত। অতি সম্প্রতি ঘটে যাওয়া সাভার ট্রাজেডি এর একটি উদাহরণ বটে।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, শতকরা ৯৭ ভাগ মুসলমানের দেশ বাংলাদেশ- যেখানে বৌদ্ধ শতকরা ১ ভাগও নেই। তারপরও বাতিল একটি ধর্ম বৌদ্ধদের বুদ্ধপূর্ণিমা উপলক্ষে সরকারিভাবে ছুটির ব্যবস্থা করা হয়।
সেক্ষেত্রে যিনি নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনারই কলিজা মুবারক উনার টুকরা মুবারক সাইয়্যিদাতুন নিসা হযরত ফাতিমাতুয যাহরা আলাইহাস সালাম উনার সুমহান বিলাদত শরীফ উনাকে উপলক্ষ করে সরকারের কি প্রধান দায়িত্ব-কর্তব্যের মধ্যে পড়ে না যে, এ উপলক্ষে বিশেষভাবে সরকারি ছুটি ঘোষণা করা।
অপরদিকে সাধারণ মুসলমানেরও কী উচিত নয় যে, উনাকে যথাযথ মুহব্বত করে আজিমুশ শানভাবে বিশেষ ভাবগাম্ভীর্যতার সাথে সারাদেশব্যাপী মীলাদ শরীফ ও ওয়াজ মাহফিলের ব্যবস্থা করা। উনার শান-মান, তা’যিম-তাকরীম জেনে-বুঝে উনাকে উত্তমভাবে অনুসরণ করে হাক্বীক্বী রহমত হাছিল করার জন্য তথা এই দিবসের যে বারাকাত, ফুয়ুজাত, নিয়ামত, রহমত, বরকত, ছাক্বীনা, মাগফিরাত রয়েছে তা লাভ করার জন্য একান্তভাবে নিবেদিত হওয়া?
উল্লেখ্য, নূরে মুজাসসাম হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কোনো পুত্র সন্তান আলাইহিমুস সালাম উনারা কেউই জীবিত থাকেননি, তদ্রপ উনার অপরাপর কন্যাদের থেকে উনার বংশীয় ধারা জারি হয়নি। কেবল সাইয়্যিদাতুন নিসা হযরত ফাতিমাতুয যাহরা আলাইহাস সালাম উনার থেকে বংশধারা মুবারক চালু হয়েছে।
প্রসঙ্গত, পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে- নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “মহান আল্লাহ পাক তিনি তোমাদেরকে যে নিয়ামত দান করেছেন তার জন্য মহান আল্লাহ পাক উনাকে মুহব্বত করো। আর আমাকে মুহব্বত করো মহান আল্লাহ পাক উনার সন্তুষ্টি মুবারক লাভ করার জন্য।
আর আমার আহলে বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে মুহব্বত করো আমার সন্তুষ্টি মুবারক লাভের জন্য। ”
মূলত, উনার ফাযায়িল-ফযীলত, মর্যাদা-মর্তবা ও বুযূর্গী সম্পর্কিত ইলম না থাকার কারণেই অনেকে উনাকে যথাযথ মুহব্বত ও অনুসরণ করতে পারছে না। যার ফলে তারা মহান আল্লাহ পাক ও উনার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের খাছ রেযামন্দি হাছিলে ব্যর্থ হচ্ছে। তাই উনার সম্পর্কে জানা সকলের জন্যই ফরয। কেননা যে বিষয়টা আমল করা ফরয সে বিষয়ে ইলম অর্জন করাও ফরয।
অথচ আশ্চর্যের বিষয় হলো ৯৭ ভাগ মুসলমানের দেশ বাংলাদেশের মাদরাসা, স্কুল-কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্যসূচিতে উনার সম্পর্কে কোনো আলোচনাই নেই। তাহলে মুসলমানগণ কি করে হাক্বীক্বী মুসলমান হবে?
আর মহান আল্লাহ পাক তিনি আহলে বাইত আলাইহিমুস সালাম সম্পর্কে ইরশাদ মুবারক করেন, “হে হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনি (উম্মতদেরকে) বলুন, আমি তোমাদের নিকট কোনো প্রতিদান চাই না। তবে আমার নিকটজন তথা আহলে বাইতগণ উনাদের প্রতি তোমরা সদাচরণ করবে। ” (পবিত্র সূরা শূরা শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ২৩)
অতএব, গোটা মুসলিম উম্মাহর উচিত, উম্মু আবীহা হযরত ফাতিমাতুয যাহরা আলাইহাস সালাম উনার বিলাদত শরীফ অত্যন্ত জওক-শওক ও আদবের সাথে যথাযথ পালনে সর্বোতভাবে নিবেদিত হওয়া। মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদের কবুল করুন।
(আমীন) ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।