কেনিয়ার রাজধানী নাইরোবির বিপণিবিতানে জঙ্গি-তাণ্ডবের অবসান হয়নি। গতকাল সোমবারও বিপণিবিতানের ভেতরে গুলি ও বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। জঙ্গিরা বিপণিবিতানের ভেতরে অনেক মানুষকে জিম্মি করে রেখেছ। তারা তাদের হত্যার হুমকি দিচ্ছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কেনিয়ার নিরাপত্তা বাহিনীর একজন কর্মকর্তা জানান, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বিপণিবিতানে সেনা অভিযানের বিষয়টি বিবেচনা করা হচ্ছে।
বন্দুকধারীরা গত শনিবার ওয়েস্টগেট নামের ওই বিপণিবিতানে ঢুকে তাণ্ডব চালানো শুরু করে। তাদের এলোপাতাড়ি গুলিতে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ৬৯ জন নিহত ও ১৭০ জনের বেশি আহত হয়েছে। হামলার সময় সেখানে এক হাজার মানুষ ছিল বলে ধারণা করা হয়। বিপণিবিতানে এখনো ১০ থেকে ১৫ জন বন্দুকধারী রয়েছে।
আন্তর্জাতিক সংস্থা রেডক্রস বলছে, জঙ্গি-তাণ্ডবে ৬৯ জন নিহত হওয়ার পাশাপাশি নিখোঁজ রয়েছে ৬৩ জন।
সোমালিয়ার জঙ্গিগোষ্ঠী আল-শাবাব ওই হামলার দায় স্বীকার করেছে।
প্রত্যক্ষদর্শী সাংবাদিকেরা জানান, গতকাল সোমবারও বিপণিবিতানের ভেতরে গুলি ও বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। একপর্যায়ে টানা ১৫ মিনিট গুলি চলে। বিপণিবিতানের চারপাশে সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।
কেনিয়ার প্রতিরক্ষা বাহিনী খুদে ব্লগ লেখার ওয়েবসাইট টুইটারে জানিয়েছে, ‘যত দ্রুত সম্ভব পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।
’
সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বিপণিবিতানে অভিযানের পাশাপাশি এই মুহূর্তে জিম্মিদের উদ্ধারকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিচ্ছে। কেনিয়ার নিরাপত্তা বাহিনীর একটি সূত্র জানায়, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে তারা বিদেশি সহায়তা নিচ্ছে। সূত্রটি যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলি সহায়তা পাওয়ার কথা উল্লেখ করেছে।
কেনিয়ার প্রেসিডেন্ট উহুরু কেনিয়াত্তা গত রোববার সংবাদ সম্মেলনে বলেন, দুর্ভাগ্যজনক এই পরিস্থিতিতে জাতি ঐক্যবদ্ধ রয়েছে। বন্দুকধারীদের পরাজিত করা সম্ভব হবে।
তিনি জানান, নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে তাঁর এক ভাগনে রয়েছেন।
বিপণিবিতানে জঙ্গিদের হামলায় ব্রিটেন, কানাডা, ভারতসহ কয়েকটি দেশের নাগরিক নিহত হয়েছেন বলে গণমাধ্যমের খবরে বলা হচ্ছে। যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন গতকাল টুইটারে এক বার্তায় জানান, কেনিয়ার পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করতে তিনি জরুরি বৈঠকে বসছেন। যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে তাদের দেশের তিনজন নাগরিক রয়েছে। এই সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠী আল-কায়েদার মদদপুষ্ট জঙ্গিগোষ্ঠী সোমালিয়াভিত্তিক আল-শাবাব। সোমালিয়া সরকার আল-শাবাব দমনে কেনিয়ার সহায়তা চায়। ২০১১ সালে কেনিয়ার চার হাজার সেনা সোমালিয়ায় মোতায়েন করা হয়। এরপর থেকে আল-শাবাব হুমকি দিচ্ছিল, কেনিয়া সেনা প্রত্যাহার না করলে হামলা চালানো হবে।
নিজেকে আল-শাবাবের প্রধান আবু ওমর পরিচয় দিয়ে এক ব্যক্তি বিবিসি বেতারকে বলেন, ‘কেনিয়ার সরকার বিপণিবিতানে অবস্থান নেওয়া আমাদের মুজাহিদদের আলোচনার প্রস্তাব দিয়েছে।
কিন্তু আমরা কোনো আলোচনায় যাব না। ’ বিবিসি ও এএফপি। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।