একদা একজন জ্ঞানী ব্যক্তি বলেছিলেন: 'অন্ধকারকে অভিশাপ দেয়ার পরিবর্তে রাস্তায় একটি মোমবাতি জ্বালানোর চেষ্টা করো। '
কিছু মানুষ আছে যাদেরকে আমি বলি ‘পৃথিবীর সত্যিকারের অসুখী মানুষ’। এই মানুষগুলো কোন কিছুতেই তৃপ্ত হয় না। মনে মনে তৃপ্ত হলেও প্রকাশ্যে তৃপ্ততা প্রকাশ করে না। মনের গভীর থেকে কি করে ধন্যবাদ দিতে হয় তাও জানে না।
জীবনের বিভিন্ন পর্যায়ে তারা অনেক মানুষের থেকে ‘অনুগ্রহ’ বা ‘উপকার’ নেয়, কিন্তু তাদের প্রতি সে হয়ত মনে মনে কৃতজ্ঞ থাকলেও প্রকাশ্যে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ বা একটু হাসিমুখে সম্মান জানানোর ‘সাহস’টুক দেখায় না। যেই বাস্তবতার মধ্যে তারা প্রতিনিয়ত বাস করছে, তাকেও তারা মানতে চায় না।
এসব মানুষ সত্যিকার অর্থে ‘কৃতজ্ঞ’ হতে ভয় পায়। অপমানিত বা ছোট হওয়ার ভয়ে নয়, বরং মনের গহীনে ও অবচেতনে এরা যে সংকীর্ণতায় জর্জারিত, সেই সংকীর্ণতা থেকেই এই ভয়। আমার মতে এটা একটা মানুসিক রোগ, যার ফলে এরা অন্যদের থেকে অনুগ্রহ বা উপকার নেয়াটাকে ‘ছোট হওয়া’ মনে করে এবং সহজে কারো কাছ থেকে উপকার নিতে চায় না।
সমাজ বলে সিস্টেমটা যে পরস্পর লেনদেনের একটা কাঠামো তা তারা উপলব্ধি পর্যন্ত করে না। আর যেহেতু তারা উপকার নিতে তেমন আগ্রহী নয়, তাই সহজে কাউকে উপকারও করতে চায় না। এর ফলাফলটা দাড়ায় ভয়াবহ। যেহেতু তারা অন্যান্য মানুষের মতই সামাজিক জীব, সেহেতু তাদেরকেও সমাজে চলতে হয়। আর তাদের এই সংকীর্ণ মানুসিক রোগ নিয়ে মনের গভীরের যন্ত্রণা লালন করতে করতে সমাজের সাথে মেশে।
তারা চায় অন্যরাও তাদের মত যন্ত্রণা লালন করুক। যার জন্য কোন সামান্য ও অতি তুচ্ছ বিষয় নিয়ে তারা এমনই চর্বিত চর্বন করে বেড়ায় যে তাদের প্রতিপক্ষকে ততটা যন্ত্রণা দেয়ার আগ পর্যন্ত তারা ক্ষান্ত হয় না, যেমনটি যন্ত্রণা তারা মনের মধ্যে বহন করে বেড়ায়। (যেহেতু তাদের চলাফেরার গণ্ডি সীমিত, চর্বিত চর্বন করার মত বিস্তৃত কিছু তাদের নেই, তাই সামান্য ব্যাপারই তাদের কাছে মহা গুরুত্বপূর্ণ। ) এবং এধরণের যন্ত্রণাদায়ক পরিবেশেই তারা নিজেদের সফল মনে করে। বলাবাহুল্য যে, এসব যন্ত্রণাদায়ক পরিবেশ কিভাবে শেষ হবে, বা যন্ত্রণাদায়ক পরিবেশ না করেও এসব সমস্যার সমাধান কিভাবে সম্ভব তা তাদের জানা নাই।
এধরণের সমস্যাগ্রস্থ মানুসিকতার জন্য জীবনের পদে পদে তাদের বন্ধুর সংখ্যা না বেড়ে বরং ক্রমেই তাদের বন্ধুর সংখ্যা কমতে থাকে। বরাবরের মতই এর কারণ হিসেবে প্রতিপক্ষকেই দায়ী মনে করে। তাদের যুক্তি, অন্য মানুষ খারাপ, তাই তাদের সাথে এদের বন্ধুত্ব হয় না।
অথচ তারা যদি সহজভাবে অন্তত নিজের আকাংখা ও প্রত্যাশার সমান করে অন্যের দু:খটাকে সমানভাবে উপলব্ধি করার চেষ্টা করত, তাহলে তাদের জীবনটা সহজেই ঝামেলামুক্ত হয়ে যেতো। তারা সত্যিকারের সুখী হতো ও অন্যদেরও সুখে রাখতে পারত।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।