আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

প্রিয়ার হাতে নীলপদ্ম

সারা বিশ্ব তন্ন তন্ন করে খুঁজে প্রিয়ার হাতে হয়তো তিনি তুলে দিতে চেয়েছিলেন এক শ নীলপদ্ম। কিন্তু তাঁকে নামতে হয়েছে ভিন্ন খোঁজে। ৭৭ বছর বয়সে চড়া রোদে হেঁটে হেঁটে তিনি খুঁজেছেন তাঁর স্ত্রীর জন্য একটি কিডনি।

যুক্তরাষ্ট্রের ট্রাকচালক উইলিয়াম ল্যারি সুইলিং স্ত্রী জিমি সুর হাত ধরেছিলেন ৫৫ বছর আগে। জিমি জন্মেছিলেন একটি কিডনি নিয়েই।

প্রথম সন্তান জন্মের সময়ই জানতে পারেন তা। চিকিৎসকেরা ভেবেছিলেন জিমি মা হতেই পারবেন না। কিন্তু একে একে তিন সন্তান আসে তাঁদের ঘরে। মাথার ওপর শঙ্কার ছায়াটা অবশ্য ছিলই জিমির। গত বছর তাঁর একমাত্র কিডনিটি কাজ করা বন্ধ করে দেয়।

এখন প্রয়োজন কিডনি প্রতিস্থাপন। ল্যারি যদি পারতেন নিজের দুটো কিডনিই জিমিকে দিয়ে দিতেন। কিন্তু দুর্ভাগ্য, তাঁর স্বামী ও সন্তান কারও সঙ্গে তাঁর রক্তের মিল নেই। তাঁর প্রয়োজন ছিল বাইরের কোনো কিডনিদাতা।

‘সেই রাতে ঘুমানোর আগে জিমি আমাকে বলল, “এখন কী করব আমরা?” আমি বললাম, আমি এখন জানি না, কিন্তু কোনো না কোনো উপায় ঠিকই বের করে ফেলব।

আর সেটা আমার মাথায় আসে মাঝরাতে। ’ বলেছেন ল্যারি।

পরদিন কাজ থেকে তাড়াতাড়ি ছুটি নিয়ে নেন ল্যারি। তারপর বেরিয়ে পড়লেন তাঁর নিজের শহর অ্যান্ডারসন, সাউথ ক্যারোলিনার রাস্তায়।

‘আমি প্রায় সাড়ে ১৫ মাইল হেঁটেছি, প্রচণ্ড গরমে, হাঁটুতে ভাঙা কার্টিলেজ নিয়ে।

মানুষ আমাকে টাকা দিতে চেয়েছে কিন্তু আমি তাদের বলেছি টাকা আমার চাই না, আমার দরকার একটি কিডনি। ’ বলেছেন ল্যারি। স্থানীয় এক টিভি চ্যানেলে প্রচারিত হয় ল্যারির খবর। আর তার পরই যোগাযোগ করতে থাকে প্রচুর মানুষ। কিন্তু তাদের কারও রক্তের গ্রুপই মিলছিল না জিমির সঙ্গে।

ল্যারি আবার বেরিয়ে পড়েন। এবার এক দিনে প্রায় ৫৪ মাইল হাঁটেন তিনি।

‘আমার বাবার এই পরিকল্পনার কথা জানতে পারি মায়ের কাছ থেকে। আমি এবার পানি নিয়ে যাই তাঁর জন্য। ’ বলেছেন ল্যারি জুনিয়র।

ল্যারির এই চেষ্টায় অবশেষে সাফল্য মেলে। ভার্জিনিয়ার কেলি উইভারলিং এই খবর পড়ে ল্যারির সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তাঁর সঙ্গে মিলে যায় জিমির রক্ত। ৪১ বছর বয়সী এই নারী নিজের একটি কিডনি দেন জিমিকে। এ মাসেই হওয়া এই অস্ত্রোপচার সফলও হয়েছে।

সুস্থ আছেন তাঁরা দুজনই। এর বিনিময়ে অবশ্য কেলি কিছুই নেননি এই দম্পতির কাছ থেকে। ‘মানুষের জন্য কিছু করা আর তাদের আশা জাগিয়ে রাখার অনুভূতি খুবই ভালো। ’ বলেছেন কেলি।

রুহিনা তাসকিন

সূত্র: ইয়াই শাইন, নিউজ ডট কম/ অস্ট্রেলিয়া।

সোর্স: http://www.prothom-alo.com

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।