”সব রাজাকারদের বিচার চাই”
রাজধানীর রমনা কালী মন্দির ও মা আনন্দময়ী আশ্রম প্রাঙ্গণে কথিত গণশ্রাদ্ধের সঙ্গে বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ ও বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের কোনো সম্পৃক্ততা নেই বলে দাবি করেছে সংগঠন দুটি।
সোমবার সকালে ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সংগঠন দুটি তাদের এ অবস্থান স্পষ্ট করে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি কানুতোষ মজুমদার, বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অধ্যাপক ড. নিমচন্দ্র ভৌমিক, কাজল দেবনাথ, বাসুদেব ধর, জয়ন্ত সেন দীপু, মঞ্জু ধর, মিলন কান্তি দত্ত, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রানা দাশগুপ্ত, পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মনীন্দ্র কুমার নাথ, মহানগর পূজা কমিটির সাধারণ সম্পাদক নির্মল চ্যাটার্জি, মহিলা ঐক্য পরিষদের সভানেত্রী জয়ন্তী রায় প্রমুখ।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, কয়েকদিন ধরে ‘মুক্তিযুদ্ধে নিহত ও নিখোঁজ হিন্দু শহীদদের আত্মার শান্তির উদ্দেশ্যে গণশ্রাদ্ধ ’৭১ এবং সব শহীদদের জন্য সর্বধর্মীয় প্রার্থনা’ শীর্ষক একটি বিজ্ঞাপনের প্রতি আমাদের দৃষ্টি আকৃষ্ট হয়েছে।
তারা বলেন, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ের ৪২ বছর অতিক্রান্ত হয়েছে।
এই সুমহান অর্জনের জন্য ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে ৩০ লাখ নারী-পুরুষ-শিশু আত্মাহুতি দিয়েছে। তাদের এই আত্মদান আমাদের চলার পথে অবিনাশী প্রেরণা হয়ে রয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের অমর শহীদদের ধর্মীয়ভাবে বিভাজন করে দেখার অবকাশ আদৌ ছিল না। এখনো নেই বলেই আমরা মনে করি।
১৯৭১ সালে পাকিস্তানি বর্বর হানাদার বাহিনী এ ধরনের সাম্প্রদায়িক বিভাজন সৃষ্টির অপচেষ্টা চালায়।
তাদের সে উদ্দেশ্য মোটেই সৎ ছিল না। স্বাধীন বাংলাদেশেও এই অপচেষ্টা আমরা বিভিন্ন সময়ে লক্ষ করেছি। বর্তমান নাজুক পরিস্থিতিতে কারা, কী উদ্দেশ্যে হঠাৎ করে ‘গণশ্রাদ্ধ’ আয়োজনে উদ্যোগী হয়েছেন, সেটা বিজ্ঞাপন থেকে স্পষ্ট নয়। তবে এ ধরনের পদক্ষেপ মুক্তিসংগ্রামে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে শরিকদের মধ্যে বিভাজন সৃষ্টি করতে পারে বলেই আমরা মনে করি।
নেতৃবৃন্দ বলেন, হিন্দু ধর্মে পূর্বপুরুষ ও স্বজনদের মৃত্যু হলে মৃতের আত্মার সদ্গতি কামনায় শ্রাদ্ধ অনুষ্ঠানের বিধান রয়েছে এবং এর অধিকার কার ওপর বর্তায় সেটাও স্পষ্টভাবে উল্লিখিত আছে।
এখানে ‘গণশ্রাদ্ধ’ বলে কিছু নেই। স্বাধীনতার দীর্ঘ চার দশকেরও বেশি সময় পরে মুক্তিযুদ্ধে আত্মদানকারী স্বজনদের আমরা স্মরণ করতে পারি এবং এ জন্য স্মরণসভা ও প্রার্থনার আয়োজনে কারো আপত্তি থাকতে পারে না। কিন্তু, শহীদদের ধর্মীয় বিভাজন অগ্রহণযোগ্য।
যারা এ ধরনের উদ্যোগ নিয়েছেন তারা প্রকৃত পক্ষে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের স্বার্থেরই ক্ষতি করছে। পাশাপাশি জাতিকে বিভক্ত করতে চাইছে।
এ কারণে এ ধরনের পদক্ষেপ থেকে নিবৃত্ত হওয়া উচিত বলে আমরা মনে করি।
সংগঠনের দপ্তর সম্পাদক দীপংকর ঘোষের পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ সব কথা বলা হয়েছে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।