বিশ্বের এক নম্বর হন্তারক রোগ হিসেবে শনাক্ত করা হয়েছে হৃদরোগকে। প্রতি বছর ১৭ দশমিক ৩ মিলিয়ন বা প্রায় পৌনে দু্ই কোটি মানুষ মারা যাচ্ছেন এ রোগে। তাই আন্তর্জাতিক হার্ট দিবসে বিশ্বেই এ বিষয়টির প্রচারণার সুযোগ গ্রহণ করে থাকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। এমন একটি ধারণা প্রায় মিথ হিসেবেই প্রচলিত রয়েছে যে কার্ডিওভাস্কুলার ডিজিজ (সিভিডি) বা হৃদরোগ এবং স্ট্রোকের শিকার সাধারণত বয়স্ক এবং মূলত পুরুষ। এটি যে সত্য নয় তা বলাই বাহুল্য।
পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, শিশু এবং নারীরাও অধিকতর হৃদরোগের ঝুঁকির ভেতরে অবস্থান করছে। আর সে কারণেই এবারের বিশ্ব হার্ট দিবসে শিশু ও নারীর ওপর বিশেষ দৃষ্টিদানের কথা বলা হচ্ছে। এবারের থিম বা প্রতিপাদ্য হলো_ 'টেক দ্য রোড টু এ হেলদি হার্ট' বা 'সুস্থ হার্টের লক্ষ্যে পথ চলা'। মূলত হৃদরোগ প্রতিরোধ এবং নিয়ন্ত্রণের ওপরেই জোর দেওয়া হয়েছে। সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বদলাচ্ছে হৃদরোগের বিভিন্ন চিকিৎসা পদ্ধতি।
এরকম একটি পদ্ধতি হলিস্টিক। এ চিকিৎসা হলো আধুনিক প্রযুক্তি ও প্রাচীন প্রাকৃতিক পদ্ধতির আশ্চর্য সমন্বয়। এ চিকিৎসার মূল চাবিকাঠি হলো খাদ্যাভ্যাস, যোগব্যায়াম, প্রাণায়াম, মেডিটেশন ও নিউরোবিক। রোগীর বয়স এবং রোগের ধরন এবং তার বর্তমান অবস্থার ওপরই নির্ভর করে তার প্রতিদিনের খাদ্যগ্রহণ। পুষ্টিকর ও পরিমিত আহার তাকে ফিট রাখে।
আর ব্যায়ামের ব্যাপারটি বিবিধ। তার আগে মন নিয়ন্ত্রণের জন্য চাই সঠিক উপায়ে মেডিটেশন। মানসিক চাপই মানুষের অসুখ ও অশান্তির মূল কারণ। মানসিক চাপ কমানোর বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। মহাজাগতিক শক্তি থেকে জ্যোতি বা প্রাণরস আহরণের কথাও বলা হয়ে থাকে।
এসব অর্জনের কাজটি কিন্তু অত সহজ নয়। তার জন্য নিয়মিত সময় দিতে হয়, চর্চা করতে হয় সঠিক নিয়ম মেনে।
মানসিক উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা, আবেগের আগ্রাসন, কাজের বাড়তি চাপ, জীবনযাপনের চাপ প্রভৃতি হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায়। হলিস্টিক চিকিৎসায় সোল-মাইন্ড-বডি বা আত্দ-মন-দেহ সব কিছুর ওপরেই লক্ষ্য রেখে প্রোগ্রাম দেওয়া হয়। অথচ প্রথাগত পদ্ধতির চিকিৎসা ব্যবস্থায় কেবল দেহ বা শরীরের ওপরেই ফোকাস করে থাকে।
এখানেই হলিস্টিক চিকিৎসার অগ্রসরতা।
বিশ্ব হার্ট দিবসে আমরা অবশ্যই হৃদয়ের কথা শুনবো। ফিরে তাকাবো আমাদের হার্টের সুস্থতার দিকে। হার্ট সুস্থ রাখার জন্য যা যা করা দরকার তা করতে সচেষ্ট হব। কিন্তু ইতোমধ্যেই যারা হৃদরোগের শিকার হয়েছেন তাদের সামনে প্রচলিত চিকিৎসার পাশাপাশি এ চিকিৎসার দিকটিও তুলে ধরতে হবে।
বর্তমানে এ পদ্ধতিও একটি আধুনিক ও গ্রহণযোগ্য। তথ্যপ্রযুক্তির যুগে তথ্যভাণ্ডার উন্মুক্ত করে দিতে হবে মানুষের সামনে। হৃদরোগ থেকে রেহাই পাওয়ার জন্য সচেতনভাবেই সুস্থ হার্টের লক্ষ্যে এখনই যোগব্যায়াম, প্রাণায়াম, মেডিটেশন ও নিউরোবিক পথ চলা শুরু করতে হবে। এতে সব শ্রেণী, পেশা ও বয়সের মানুষের হৃদরোগ প্রতিরোধ ও যথাযথ নিয়ন্ত্রণ করা ত্বরান্বিত হবে।
ডা. গোবিন্দ চন্দ্র দাস, হলিস্টিক হেলথ কেয়ার
সেন্টার, ঢাকা।
ফোন : ৮১২৯৩৮৩, ০১৮৪৩৭০৮৯৪৫
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।