এক্সট্রা এনার্জি এক্সচেঞ্জার
তিনটা ছেলে হাতে লিফলেট নিয়ে ঘুরছে। তিনজনই ঢাকা কলেজ এ পড়ে। শিক্ষিত ভদ্র গোছের তিনটা ছেলে মানুষের কাছে টাকা চেয়ে বেড়াচ্ছে- এই দেখে কৌতুহল আছে গেলাম। স্বভাবতই জিজ্ঞেস করলাম কেন? বলল তারিকের জন্য ওরা টাকা জোগাড় করছে। আমি তারিক এর ব্যাপারে ব্লগ এ এবং ফেসবুক এ অনেক লেখালিখি দেখেছি।
সব উদ্যোগ ই আমার কাছে সমন্বয়হীন মনে হয়েছে। আমি ওদের জিজ্ঞেস করলাম ওরা তারেকের বন্ধু কিনা? বলল ওরাও ফেসবুক ও বন্ধুদের মাধ্যমেই তারিক এর কথা জানতে পেড়েছে। আরো বলল সারাটা বিকেল এবং সন্ধ্যা ঘুরে ওরা ৮০০ টাকা জোগাড় করেছে। যদিও ওদের প্রেচেষ্টার কোনো তুলনা নাই তারপরেও ওদের বললাম এইভাবে টাকা জোগাড় করে কি লাভ? কত টাকাই বা ঊঠান যাবে এভাবে রাস্তায় ঘুরে ঘুরে। এটা বলতেই ওদের তিন জনকেও বেশ চিন্তিত মনে হল।
ওদের মধ্যে একজনের নাম রাজু। রাজু বলল ভাইয়া আমিও তাই ভেবেছি। কিন্তু এটা ছাড়া তোঁ আর কোনো উপায় ও নেই। আমরা বাচ্চারা আর কত টুকুই বা কি করতে পারি। আলবাত, খাটি সত্য কথা।
ওরা নিজেরদের সামর্থের শেষ বিন্দু দিয়ে চেষ্টা করছে। ওদের সীমাবদ্ধতার ক্ষুদ্রতার কথা জানার পরেও। তবে এটা ঠিক যে সল্প পরিসরে অনেকেই অনেক ভাবে সাহায্য করার চেষ্টা করছে। কিন্তু একটি মৃত্যু পথযাত্রি কলেজ পড়ুয়া শিশু যার কিনা উচ্চ্য শিক্ষার জন্য কয়েক লক্ষ টাকা প্রয়োজন, তার জন্য আমাদের এই প্রচষ্টা কতটুকু ফলপ্রসূ হবে? উন্নত চিকিৎসার জন্য তারেকের হাতে খুব বেশি হলে ২০-৩০ দিন সুযোগ আছে। তার পরই দুর্ঘটনা ঘটার সম্ভবনা বেড়ে যাবে।
তাই আরো সমন্বিত এবং বড়ো পরিসরের প্রয়াস দরকার এবং সেটা অবশ্যই হওয়া উচিত আমাদের বড়োদের কাছ থেকে। শুধু তবেই তারেক নামক আরেকটা সবুজ প্রাণ বাঁচান সম্ভব। এবং কলেজ পড়ুয়া ছাত্র ছাত্রীদের এই বার্তা পৌঁছে দেয়া সম্ভব যে তাদের প্রতিটা প্রয়োজনে আমরা পাশে আছি।
তারেকের নিজের ভাষায় ই শুনুন আমাদের কাছে সে কতটা দাবি রাখছে-
আপনি যখন এই লেখাটি পড়ছেন আমি তখন হাসপাতালের বেডে শুয়ে শুয়ে যাপিত জীবন যাপন করছি। আপনার জীবনে কি কখনো এমন সময় এসেছে যে, আপনার পূর্ণাঙ্গ অবসরে আছেন বেশ কিছুদিন? যদি এসে থাকে তবে আপনি নিশ্চয়ই জানেন এমন একটা দিন শুরু করার যন্ত্রণা যেদিন সতিকার অর্থে আপনার কোন নির্দিষ্ট কাজ থাকেনা।
এটা হয়তো সবচেয়ে ভালো বুঝতে পারবে একজন বেকার, একজন অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কিংবা একজন কয়েদী। হ্যাঁ! ঠিক ধরেছেন। আরকজন সবচেয়ে ভালো বুঝতে পারবে। সেটা হলো একজন মৃত্যু নিশ্চিত জেনে যাওয়া রোগী, যার দিন কাটছে হাসপাতালে ডাক্তার বেধে দেয়া সময় ফুরিয়ে না যাবার তীব্র আকাঙ্ক্ষায়। আমি সেই শেষোক্ত ব্যক্তিদের একজন।
আমার বয়স ১৭ বছর। আপনার বয়সও হয়তো এর কাছাকাছি, কিংবা আপনার ছোট ভাই বা আপনার ভাগিনা বা আপনার পুত্র। আমার বন্ধুরা হয়তো এখন তারুণ্যে টগবগ করে ফুটছে। আর আমি এক তরুণ বৃদ্ধ। ব্যাপারটা যে কি দুঃসহ তা কয়েকদিন আগে আমিও বুঝতাম না।
কয়দিন? এইতো সেদিনও আমি কলেজে ভর্তি হয়ে জীবনকে বেশ উপভোগ্য মনে করছিলাম। মৃত্যু নামে যে একটা জিনিস আছে সেটা ভাবনার দূর সীমানাতেও আসেনি কোনদিন। অথচ কি আশ্চর্য! মাত্র কয়েকটা দিনের ব্যবধানে, কয়েকটা মেডিক্যাল রিপোর্টের লেখনীতে এখন আমার আর আমার মা’র প্রতিটা দিন কাটছে জীবন-মৃত্যুর পুলসিরাতে। আমার বোন ক্যান্সার ধরা পড়ে যেদিন সেদিন বুঝেছি খেয়ে হোক না খেয়ে হোক, বেঁচে থাকার আকুলতা কি জিনিস। বিশ্বাস করুন আমার এখন ইচ্ছা করে আমার প্রতিটা অংগ-প্রতঙ্গের বিনিময়ে হলেও আর ক’টা দিন বেশী বেঁচে থাকি, নিজের জন্য না হোক আমার মায়ের জন্য অন্ততঃ।
আপনারা হয়তো কিছুটা হলেও আঁচ করতে পারবেন যে কতটা বেদনাদায়ক নিজের জীবনের জন্য, চিকিৎসার জন্য অন্যের কাছে হাত পাতা। আমার মায়ের ইচ্ছায় আমি আজ লিখছি।
আমি আপনাদের কাছে সাহায্য চাইছি। আল্লাহ আপনাদের মঙ্গল করুন।
আমার অপারেশানের জন্য প্রায় ৩০ লক্ষ টাকার প্রয়োজন, সেটাও আবার ২৮ দিনের মত।
টাকা এবং সময়সীমা দু'টোর অঙ্কই আঁতকে উঠার মত। দিনে প্রায় ১ লক্ষ টাকার চাইতেও বেশী।
কিন্তু অনেকের প্রচেষ্টায় সেটা হয়তো সামন্যে পরিণত হবে।
আমাকে সাহায্য পাঠানোর ঠিকানাঃ
রেবেকা সুলতানা (আমার মা)
একাউন্ট নাম্বার : 1506201807961001
BRAC Bank, Dhaka. (আসাদ গেট ব্রাঞ্চ)
Phone No : 01827823052 , 01674777830 (Imran)
Ibne Sina Hospital,Dhanmondi. (Cabin No : 212)
[ছেলেটির নাম তারেক, ক্যান্সার এর বিষ দেহে নিয়ে সে এগিয়ে যাচ্ছে মৃত্যুর দিকে, ওর চিকিৎসার জন্য মাত্র ৩০ লাখ টাকা প্রয়োজন, আমরা কি জোগাড় করতে পারব না ??] ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।