আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বিদেশি আগ্রাসনে ৬০ হাজার পোলট্রি খামার বন্ধ,১০ লক্ষাধিক কর্মী বেকার

আমি উচ্চারিত সত্যের মতো স্বপ্নের কথা বলতে চাই বিদেশি কোম্পানির দাপটে ধ্বংসের মুখে পড়েছে দেশীয় পোলট্রি শিল্প। বিগত তিন বছরে বন্ধ হয়েছে দেশের প্রায় ৬০ হাজার খামার। উচ্চ হারে ব্যাংক সুদ, অসম প্রতিযোগিতা, প্রযুক্তিগত সুবিধার অভাব এবং সরকারি প্রণোদনার অভাবে হারিয়ে যাচ্ছেন দেশীয় উদ্যোক্তারা। বেকার হয়ে পড়েছেন এ শিল্প খাতের ১০ লক্ষাধিক কর্মী। যার নেতিবাচক প্রভাবে বেড়েই চলেছে ডিম, মুরগির দাম।

বাংলাদেশ সরকারের ২৫ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগে গত ২০ বছরে গড়ে ওঠেছে সম্ভাবনাময় এ খাত। দেশের পোলট্রি শিল্পের এমন পরিস্থিতিতে সরকার নতুন করে বাংলাদেশে ব্যবসা করার অনুমতি দিতে যাচ্ছে আরো আটটি বিদেশি কোম্পানিকে। বছরের পর বছর ধরে দেশীয় খামারিরা নিজেদের পরিশ্রম, চেষ্টা আর অর্থ বিনিয়োগ করে পোলট্রি খাতকে যখন একটি শক্তিশালী অবস্থানে নিয়ে এসেছেন ঠিক তখনই সম্পূর্ণ ‘রেডিমেড’ একটা মার্কেটকে বিদেশিদের হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন পোলট্রি ব্যবসায়ীরা। সংশ্লিষ্টদের আশঙ্কা, এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন হলে ধ্বংসপ্রায় এ শিল্পের সম্ভাবনার দুয়ার চিরতরে বন্ধ হয়ে যাবে। সেই সাথে পোলট্রি শিল্পের ৭৫ থেকে ৮০ ভাগই চলে যাবে বিদেশিদের হাতে।

তাই দেশীয় স্বার্থ সংরক্ষণে বিদেশি কোম্পানির আগ্রাসন ঠেকাতে পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি বলে মনে করছেন তারা। জানা যায়, বর্তমানে সরকারের অনুমতি নিয়ে সাতটি বিদেশি কোম্পানি এ দেশে ব্যবসা করছে। এর মধ্যে রয়েছে ভারতের পাঁচটি এবং থাইল্যান্ড ও চীনের একটি করে কোম্পানি। ভারতীয় কোম্পানিগুলোর মধ্যে হলো সেগুনা, ভিএইচ গ্রুপ, গোদরেজ, টাটা ও অমৃত গ্রুপ। এ ছাড়া রয়েছে থাইল্যান্ডের কোম্পানি সিপি ও চীনা কোম্পানি নিউ হোপ।

অনুসন্ধানে দেখা যায়, দেশি খামারগুলোকে বসিয়ে দিতে প্রতিনিয়ত নিত্যনতুন কৌশল অবলম্বন করছে বিদেশি কোম্পানিগুলো। বিপুল পরিমাণ পুঁজির মালিক হওয়ার সুবাদে তারাই কখনো উৎপাদন কমিয়ে দিয়ে কৃত্রিম সঙ্কট সৃষ্টি করে ডিম, মুরগি, বাচ্চার দাম বাড়িয়ে দিচ্ছে। তাদের আগ্রাসনে ১৪ হাজার ৭৬৩ টি খামারের মধ্যে বিগত তিন বছরে ৫৯ হাজার ৩০০ খামার বন্ধ হয়ে গেছে। খামার মালিকেরা অভিযোগ করেন, বিদেশি কোম্পানিগুলো মাত্র তিন থেকে ৪ শতাংশ সুদে বিদেশি ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে এ দেশে বিনিয়োগ করছে। অথচ দেশীয় খামারিদের ১৫ থেকে ১৬ শতাংশ সুদে ঋণ নিতে হচ্ছে।

স্বাভাবিকভাবেই বিদেশি কোম্পানিগুলোর উৎপাদন খরচ কমে যাচ্ছে ১০ থেকে ১১ শতাংশ। এ অসম প্রতিযোগিতা এবং বিদেশি কোম্পানিগুলোর অনৈতিক কার্যকলাপ বন্ধে সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তারা। এছারাও সরকারের নিয়মনীতিকে অবজ্ঞা করে গোপনে নিষিদ্ধ ওষুধের ব্যবহার করছে বিদেশি কোম্পানিগুলো। সেই সাথে পরিকল্পিতভাবে বাজার নিয়ন্ত্রণ এবং দেশীয় খামারিদের এ ব্যবসায় থেকে সরিয়ে দেওয়ার নীল নকশার অভিযোগ উঠেছে বিদেশি কোম্পানিগুলোর বিরুদ্ধে। আবার সুযোগ বুঝে উৎপাদন বাড়িয়ে বিপাকে ফেলছে দেশি খামারিদের।

চট্টগ্রামের বিখ্যাত নাহার এগ্রোর স্বত্বাধিকারী রকিবুর রহমান টুটুল অভিযোগ করেন, “বিদেশি কোম্পানিগুলো বাচ্চা উৎপাদন থেকে শুরু করে কমার্শিয়াল লেয়ার পালন, ব্রয়লার মুরগি ও ডিম উৎপাদন, ফিড ইন্ডাস্ট্রি সব ধরনের ব্যবসায় গ্রাস করতে শুরু করেছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে অচিরেই দেশীয় কোম্পানিগুলো বিদেশি কোম্পানির পেটের ভেতর চলে যাবে। ” পোলট্রি শিল্প খাতের উদ্যোক্তা নেতৃবৃন্দ বলেন, “বিদেশি কোম্পানিগুলো দেশীয় বাজার দখলে যেভাবে দাপটের সাথে এগোচ্ছে তাতে দেশীয় কোম্পানিগুলো ব্যবসায় বন্ধ করে দিতে বাধ্য হবে এবং আমাদের পোলট্রি শিল্প বিদেশি কোম্পানিগুলোর নিয়ন্ত্রণে চলে যাবে। Click This Link ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।