স্থানীয় সময় শনিবার বিকালে জাতিসংঘ সদরদপ্তরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠকে তিনি এ কথা বলেছেন বলে জানান জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ড. এ কে এ মোমেন।
বৈঠক শেষে মোমেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী সাধারণ অধিবেশনে বক্তৃতার পরই সাধারণ অধিবেশন কক্ষের একটি বুথে পূর্ব ওই বৈঠক হয়। সে সময় বাংলাদেশের আসন্ন জাতীয় নির্বাচন এবং অন্যান্য প্রসঙ্গ স্থান পায়।
মনমোহন সিংকে উদ্ধৃত করে তিনি বলেন, “বাংলাদেশে রাজনৈতিক স্থিতি থাকলে, বাংলাদেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নত হলে, বাংলাদেশ জঙ্গিবাদ মুক্ত থাকলে- আমরাও স্বস্তি পাই। কারণ সে পরিবেশে জঙ্গি বা সন্ত্রাসীরা বাংলাদেশে অবস্থান নিয়ে ভারতে কিংবা আশপাশের দেশে নাশকতা চালানোর সুযোগ পায় না।

”
প্রথম বৈঠকে উভয় দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং জাতিসংঘে উভয় দেশের স্থায়ী প্রতিনিধিরা উপস্থিত থাকলেও পরবর্তী ২০ মিনিটে দুই নেতা একান্তে কথা বলেন।
বৈঠকে শেখ হাসিনা বিগত ৪ বছরে বিভিন্ন নির্বাচনের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে মনমোহন সিংকে জানান, প্রায় ৭ হাজার নির্বাচনের একটি নিয়েও কোন অভিযোগ কেউ করেনি। প্রায় সবকটি নির্বাচনেই প্রধান বিরোধী দল বিএনপিরও প্রার্থী ছিল।

“আসন্ন জাতীয় নির্বাচন নিয়ে বিএনপি নানা বক্তব্য দিলেও ভেতরে ভেতরে তারা দলীয় প্রার্থী বাছাইসহ নির্বাচনের আনুষঙ্গিক প্রস্তুতি চালাচ্ছে। ”
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ওই বক্তব্যের পর মনমোহন সিং তাদের কাছেও এ ধরনের খবর থাকার কথা জানিয়েছেন বলে জানান এ কে এ মোমেন।


মনমোহন সিং বলেন, “স্বচ্ছ-সুন্দর ও সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে তা শুধু বাংলাদেশের জন্যেই কল্যাণের হবে না, সেই গণতন্ত্রের সুবাতাস দক্ষিণ এশিয়ার সকল দেশে বিস্তৃত হবে। ”
বৈঠকে বাংলাদেশের বর্তমান সরকারের বহুমুখী পদক্ষেপের পরিপ্রেক্ষিতে জঙ্গি এবং সন্ত্রাসবাদ নির্মূল হয়েছে এবং বাংলাদেশের আপামর মানুষ এখন জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছে বলে মত দেন করেন মনমোহন সিং।
পাশাপাশি একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচার আন্তর্জাতিক মান অনুযায়ী হচ্ছে জেনে সন্তোষ প্রকাশ করেন তিনি।
দুই নেতার মধ্যে সীমান্তে নানা বিষয়ে বিদ্যমান অসন্তোষ নিয়ে কথা হয়েছে বলে জানান এ কে এ মোমেন।
এ সময় মনমোহন সিং বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আশ্বস্ত করেন, আসন্ন অধিবেশনে সীমান্ত সম্পর্কিত একটি এজেন্ডা রয়েছে।

বিরোধীরা সোচ্চার থাকলেও তারা সেটি পাস করার বিষয়ে আশাবাদি।
দুই পর্বে প্রায় ৪৫ মিনিটের বৈঠকের শুরুতেই মনমোহন সিং শেখ হাসিনাকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানান। সাধারণ অধিবেশনে চমৎকার বক্তব্য উপস্থাপনের জন্যে শেখ হাসিনাকে মনমোহন সিং ধন্যবাদ জানান।
বৈঠকটি হোটেল প্যালেসে হওয়ার কথা থাকলেও একই সময়ে উভয় নেতা জাতিসংঘ সদর দপ্তরে অবস্থান করায় সাধারণ অধিবেশন কক্ষ সংলগ্ন একটি বুথে সেটি অনুষ্ঠিত হয়।
।