রিয়াদ চৌধুরী নিজেকে পরিচয় দেয় ব্যবসায়ী, শিক্ষিত রাজনীতিক হিসেবে। তবে ফতুল্লার মানুষ তাকে চেনে একজন ভয়ংকর চাঁদাবাজ হিসেবে। ওর নজর যার উপর পড়ে তাকে হয় চাঁদা দিতে হবে নয়তো এলাকা ছাড়তে হবে। আর এ দুইটির একটিও যে করবে না তাকে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করবে সে। চাঁদা না দেয়ায় লালপুরের এক ব্যক্তিকে ১২/১৩ টি মামলা দিয়েছে সে।
হত্যা মামলা সহ পিটিয়ে মানুষ মেরে ফেলার অভিযোগ আছে তার বিরুদ্ধে। এসব অভিযোগ, অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার হলেও কোন কিছুই মনে করে না জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ন আহ্বায়ক রিয়াদ চৌধুরী। তার একটাই কথা- টাকার দিলেই সব ম্যানেজ করা যায়।
জানা গেছে, চাঁদাবাজি করে রিয়াদ চৌধুরী বর্তমানে প্রায় ১ শ’ কোটি টাকার মালিক। ২ শ’ ৫০ শতাংশের উপর জায়গা আছে তার।
ঢাকা ও দুবাইতে আছে ফ্লাট।
জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ন আহ্বায়ক রিয়াদ চৌধুরীর উথ্থান ঘটে পলাতক সন্ত্রাসী জাকির খানের হাত ধরে। ফতুল্লা থানা ছাত্র দল সভাপতি থাকাকালেই রিয়াদের সন্ত্রাসী জীবনের দেখা পায় মানুষ। চারদলীয় জোট সরকারের আমলে তার সন্ত্রাসী বাহিনীর কাছে জিম্মি ছিল ফতুল্লাবাসী। মৃত বাসেদ চৌধুরীর ছেলে রিয়াদ পৈত্রিক ওয়ারিশ সূত্রে কিছু সম্পদ পেলেও তার তুলনায় এখন অনেক সম্পদের মালিক বলে জানা গেছে।
তার নিকটতম এক সূত্র জানিয়েছে, বর্তমানে দুবাই ১টি ও ঢাকাতে ১ টি ফ্লাট আছে রিয়াদের। ফতুল্লার লাল খাঁয় ১ শ’ শতাংশ জায়গা, পৌষার পুকুর পাড়ে ১ টি ৬৫ শতাংশ ও ১ টি ৬০ শতাংশ জায়গা আছে। একটি জায়গায় ৫০/৬০ টি টিনসেড রুম করছে সে।
বৃহস্পতিবার রাতে এই বাড়িতেই সোহেল নামে এক ব্যক্তিকে অপহরন করে নিয়ে আটক করে রাখে। তার মামা কবির ২০ লাখ টাকা দিলে সোহেলকে ছেড়ে দেয়া হবে।
এক পর্যায়ে র্যাবের একটি টহল দল খবর পেয়ে সোহেলকে উদ্ধার করে, জব্দ করে ২ টি হোন্ডা। র্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে পালিয়ে যায় রিয়াদ চৌধুরী ও তার ক্যাডাররা। এ ঘটনায় ফতুল্লা থানায় মামলা হয়েছে। তবে এলাকাবাসীর ধারনা পুলিশ রিয়াদকে ধরবে না। ফতুল্লা থানার তদন্ত ওসি সাইফুল, দারোগা আতাউর, শফিকসহ আরো কয়েকজন এসআইয়ের সাথে রিয়াদের সম্পর্ক আছে।
প্রতি মাসে তাদেরকে টাকা দেয় রিয়াদ।
জানা গেছে, গত ১২ আগস্ট যুবলীগ নেতা মাসুম হত্যার ঘটনায় রিয়াদকে গ্রেপ্তার করেছিল ডিবি পুলিশ। ৪/৫ বছর আগে দাপার এক যুবককে চোর আখ্যা দিয়ে সারা রাত মারধর করে রিয়াদ। পরের দিন সকালে খবর পেয়ে ফতুল্লা থানার এসআই ফিরোজ এসে ওই যুবককে উদ্ধার করলেও সে হাসপাতালে মারা যায়। টাকার জোরে ওই হত্যাকান্ডের ঘটনা থেকে বেঁচে যায় রিয়াদ।
ওয়ান ইলেভেনের সময় র্যাবের হাতে অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার হয়েছিল রিয়াদ। এক শিল্পতির কৃপায় ওই যাত্রায় রক্ষা পায় সে।
এলাকাবাসী জানায়, ফতুল্লায় রিয়াদের সন্ত্রাসী বাহিনী আছে। যাদের কাজ পৌষারপুকুর পাড়সহ বিভিন্ন এলাকায় নুতন জায়গা ক্রয়কারী মালিকের নাম ও মোবাইল নম্বর জোগানো। এরপর চলে রিয়াদের চাঁদা নিয়ে দর কষাকষি।
এসব এলাকায় বাড়ি করতে রিয়াদকে চাঁদা দিতেই হবে। বর্তমান মহাজোট সরকারের আমলে আওয়ামীলীগের দুই গ্র“পের দ্বন্দ্ব থাকায় ক্ষমতাবান একটি পক্ষের আশ্রয়ে এখনো চাঁদাবাজির মহোৎসব করছে রিয়াদ চৌধুরী।
তার কথা কেউ না শুনলে মিথ্যা মামলায় হয়রানি হতে হয়। ফতুল্লার লালপুরের জালাল শেখ তাদের একজন। সে জায়গা কিনে বাড়ি করার পরেও রিয়াদকে চাঁদা না দেয়ায় ক্ষেপে যায় সে।
এরপর মতিঝিল, সাভার, কেরানীগঞ্জসহ বিভিন্ন থানায় জালাল শেখের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দেয় রিয়াদ। তবে বরাবরই এসব অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে রিয়াদ চৌধুরী।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।