আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মিটফোর্ডে অভিযান

বাংলাদেশের বাজারে প্রতিদিন কী পরিমাণ ভেজাল, অবৈধ, নিম্নমানের ও মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ বিক্রি হয়, তার কোনো হিসাব নেই। তবে গত শনিবার পুরান ঢাকার মিটফোর্ড এলাকায় একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে ও র‌্যাব সদস্যদের সহযোগিতায় একটি ভ্রাম্যমাণ আদালতের ঝটিকা অভিযান থেকে স্পষ্টভাবে ধারণা করা যায়, পরিমাণটি বিপুল হবে।
কিন্তু যে প্রক্রিয়ায় মার্কেটগুলোর ফটক বন্ধ করে অভিযান চালিয়ে আতঙ্ক ছড়ানো হয়েছে, তাতে এর লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন ওঠাটা স্বাভাবিক। বিচ্ছিন্ন ঘটনায় একজন র‌্যাব সদস্য আহত হওয়ার পর অভিযানে ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে কি না, তা-ও খতিয়ে দেখা দরকার।
ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট অভিযানের পর প্রথম আলোকে জানিয়েছেন, অভিযানে প্রচুর পরিমাণ মেয়াদোত্তীর্ণ, ভেজাল, অবৈধ ও নিম্নমানের ওষুধ, নানা রকমের সম্পূরক খাদ্য ও ব্যথানাশক ওষুধ উদ্ধার করা হয়েছে।

খোদ রাজধানীর পাইকারি ওষুধের বাজারের চিত্রই যদি এ রকম হয়, তাহলে গ্রামগঞ্জ ও মফস্বলের অবস্থা ভেবে উদ্বিগ্ন হতে হয়।
কিন্তু ব্যবসায়ীরা বলছেন, ভেজাল ও নিম্নমানের ওষুধ তৈরি করে বিভিন্ন কারখানা। সেখানেই প্রথম অভিযান চালানো উচিত। তা ছাড়া পরীক্ষাগারে ওষুধের গুণমান পরীক্ষা না করে অনুমানের ভিত্তিতে অভিযানটি পরিচালিত হয়েছে। এর প্রতিবাদে এবং গ্রেপ্তারকৃত ব্যবসায়ীদের মুক্তির দাবিতে গতকাল রোববার ব্যবসায়ীরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে ধর্মঘট করেছেন।


মিটফোর্ডে এই ঝটিকা অভিযানে ১০৩ ওষুধ ব্যবসায়ীকে আটক করা হয়। তাৎক্ষণিকভাবে বিচার করে এক বছর করে কারাদণ্ডের আদেশ দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়েছে তাঁদের মধ্যকার ২০ জনকে। বাকি ৮৩ জনকে বিভিন্ন অঙ্কের জরিমানা করা হয়েছে।
ওষুধ ব্যবসায়ী নেতারা বলছেন, অসাধু ব্যবসায়ীদের বিষয়ে র‌্যাব-পুলিশকে সহায়তা করতে তাঁদের আপত্তি নেই। আগে তাঁরা সহায়তা করেছেনও।

কিন্তু শনিবার যেভাবে গণহারে জেল-জরিমানা করা হয়েছে, তা উদ্বেগজনক। দুটি বিদেশি সাবান রাখার দায়ে দুই লাখ টাকা জরিমানা করা অস্বাভাবিকও বটে।
আমরা মনে করি, ভেজালবিরোধী অভিযান আরও চালানো উচিত। কিন্তু যে প্রক্রিয়ায় অভিযান চালানো হয়েছে, তা সমর্থনযোগ্য নয়। ওষুধের বাজারে অভিযান যদি একটি নিয়মিত ও যৌক্তিক পদক্ষেপ হয়, তাহলে অসাধু ওষুধ ব্যবসায়ীদের দৌরাত্ম্য কমতে পারে।

কিন্তু অভিযানের নিরপেক্ষতা নিয়ে সতর্ক থাকতে হবে, যাতে লঘু পাপে কারও গুরু শাস্তি না হয়।
মিটফোর্ডে অভিযানটির মধ্য দিয়ে স্পষ্ট হলো, ভেজাল ও নিম্নমানের ওষুধ এত বিপুল পরিমাণ বিক্রি হওয়ার অর্থ এগুলো কোথাও না কোথাও উৎপাদন করা হচ্ছে। অভিযান চালাতে হবে সেই কারখানাতেও, যেখানে এগুলো উৎপাদিত হচ্ছে। উৎপাদনের সব সুযোগ বন্ধ করে দেওয়া গেলে বাজারে আর সেগুলো আসতে পারবে না।



সোর্স: http://www.prothom-alo.com

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।