সরকার জেনে শুনে লাখ লাখ মানুষের জীবনকে বিপদের মুখে ঠেলে দিচ্ছে কার স্বার্থে?
পাবনা জেলার ঈশ্বরদী উপজেলার রূপপুরকে কেন্দ্র করে ৩০ কিলোমিটার ব্যাসার্ধের প্রায় ৩০ লক্ষ মানুষের জীবনকে ভয়াবহ ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দিয়ে পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। আগামী ২ অক্টোবর এই প্রকল্পের ভৌত অবকাঠামো নির্মাণের কাজ শুরু হবে। এর বিরুদ্ধে স্থানীয় জনগণের প্রতিবাদ বিক্ষোভকেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে দমন করার চেষ্টা করা হচ্ছে। কেন আমরা এই প্রকল্পের বিরোধিতা করছি তা স্পষ্ট করা দরকার।
পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের বিপদটা কোথায়?
পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে বিপজ্জনক অনিয়ন্ত্রিত রাসায়নিক বিক্রিয়া নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে যে তাপ শক্তি পাওয়া যায় তা দিয়ে পানিকে বাষ্প করে বিদ্যুৎ উৎপাদনের টারবাইন-জেনারেটর চালানো হয়।
অনিয়ন্ত্রিত বিক্রিয়াটি নিয়ন্ত্রণ করার জন্য এক বিশেষ ধরণের কন্ট্রোল রড ব্যবহার করা হয়। এগুলো থাকে মারাত্মক রকম তেজস্ক্রিয়। উৎপাদন বন্ধ থাকলেও এই তেজস্ক্রিয় দণ্ড থেকে ক্রমাগতভাবে তেজস্ক্রিয় রস্মি নির্গত হয় এবং এই দণ্ডগুলো স্বতঃস্ফুর্তভাবে ভয়ানক গরম হয়ে যায়। এগুলো যদি ঠিক সময়ে ঠিক পরিমাণে ঠান্ডা না করা হয় তাহলে খুব তাড়াতাড়ি আভ্যন্তরীণ তাপের প্রভাবে জ্বলে উঠবে এবং তখন জ্বালানী দণ্ডগুলো একসাথে অনেকগুলো পারমাণবিক বোমায় পরিণত হবে। যাতে তারা গরম হয়ে পারমাণবিক বোমায় পরিণত না হয়ে ওঠে তাই এদেরকে বিশেষ ধরণের পানি ও অন্যান্য বিশেষ ধরণের তরল পদার্থ দিয়ে ক্রমাগত ধুয়ে ধুয়ে ঠান্ডা করতে হয়।
এই শীতল রাখার প্রক্রিয়া চলে কমপক্ষে ৭০ বছর, ক্ষেত্র বিশেষে ১২০ বছর। একাজে বিপুল পরিমাণ পানির প্রয়োজন হয় বলেই পৃথিবীর অধিকাংশ পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে সমুদ্র তীরে। রূপপুরে পানির মূল উৎস পদ্মা নদী। ভারতের ফারাক্কা বাঁধের কারণে পদ্মা নদী আজ প্রায় পানিশূন্য। গ্রীষ্মকালে নদীর পানির ৭৫ শতাংশই উজানে সরিয়ে নেয়ার ফলে পদ্মায় পলি জমে ভরাট হয়ে যাচ্ছে।
এই মৃতপ্রায় পদ্মার পানির উপর নির্ভর করার মানে হচ্ছে রূপপুরে একটি বিশালকায় পারমাণবিক বিস্ফোরণের আয়োজন তৈরী করা।
যে বিশেষভাবে তৈরী আধারে পারমাণবিক বিক্রিয়া চালানো হয় তাকে রিঅ্যাক্টর বলে। রূপপুরে রাশিয়ার তৈরী ঠঠঊজ-১০০০ প্রযুক্তির রিঅ্যাক্টর ব্যবহার করা হবে। এই রিঅ্যাক্টরে পানি সরবরাহে সামান্য তারতম্য হলেই দুর্ঘটনা অবশ্যম্ভাবী। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে পদ্মার পানি এবং পদ্মা শুকিয়ে গেলে ভূ-গর্ভস্থ পানি ব্যবহারের কথা বলা হচ্ছে।
পানির উৎস বারবার পরিবর্তনের দরকার হবে বলে এতে দুর্ঘটনার সম্ভাবনা আরো বাড়বে। তাছাড়া পানির পাম্প নষ্ট হয়ে গেলে বা তাতে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে গেলে তখন কী হবে?
VVER-১০০০ নিয়ে যত অভিযোগ
রূপপুরে VVER-১০০০ নামের যে প্রযুক্তির রিঅ্যাক্টর ব্যবহার হবে তা ১৯৭০-এর দশকের ডিজাইনের সংশোধিত রূপ। প্রকল্প বাস্তবায়নকারী রাশিয়ান সংস্থা রোসাটম-এর পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে এতে দুর্ঘটনা ঘটার কোন সম্ভাবনা নেই ও এটি ১০ মাত্রার ভূমিক¤প এবং বিমানের আঘাত সহ্য করার ক্ষমতা রাখে। কিন্তু ইউরোপের বেশ কয়েকটি দেশে VVER-১০০০/৩২০ কেনার জন্য করা ১১টি চুক্তি (হাঙ্গেরী ২, ইউক্রেন ৩, জার্মানী ৪, চেক রিপাবলিক ২) বাতিল করা হয়েছে। কারণ এই মডেলের রি-অ্যাক্টর ইউরোপীয় নিরাপত্তা মানদন্ড অনুযায়ী যথেষ্ঠ নিরাপদ নয়।
খোদ রাশিয়ার বেলাকোভোয় এই ধরণের দুটি এবং ইরানে VVER-১০০০/৪৪৬ মডেলের একটি রিঅ্যাক্টরের নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। পরিবেশবাদী সংগঠন গ্রীনপিস এর বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন এ ধরনের রিঅ্যাক্টর ৭০-দশকের জার্মান প্রযুক্তিতে নির্মিত রিঅ্যাক্টরের চাইতেও অনিরাপদ।
ফুকুশিমার দুর্ঘটনার পর রাশিয়ান সংস্থা রোসাটম ২০১১ সালে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে, সেখানে শীতলীকরণ-প্রক্রিয়া কোন কারণে বন্ধ হয়ে গেলে তাদের রিঅ্যাক্টরগুলো নিরাপদ থাকবে না বলা হয়েছে। রিপোর্টে আরো বলা হয় যে, শীতলীকরণ-প্রক্রিয়া বন্ধ হয়ে গেলে পাওয়ার ব্যাকআপ সিস্টেমও কাজ করবে কি না তার কোন নিশ্চয়তা নেই।
স্থায়ী মরণফাঁদ : পারমাণবিক কেন্দ্রের বর্জ্য
পারমাণবিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনার সঠিক উপায় এখনও আবিষ্কার করা যায়নি।
প্রতিটি পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে গড়ে প্রতি মাসে ২০-৩০ টন উচ্চমাত্রার পারমাণবিক বর্জ্য নির্গত হয়। এই পারমাণবিক বর্জ্য পরিবেশের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর এবং এর আয়ুষ্কাল কয়েক হাজার বছর থেকে কয়েক লক্ষ বছর পর্যন্ত। বাংলাদেশে আমরা এই পারমাণবিক বর্জ্য পুঁতে রাখব কোথায়? ঘনবসতিপূর্ণ এ দেশে এমন কোনো পরিত্যক্ত অঞ্চল নেই যেখানে আমরা পারমাণবিক বর্জ্য সরিয়ে রাখতে পারি। মাটির গভীরে পুঁতে রাখলে ভূগর্ভস্থ পানি দূষিত হয়ে দেশে বিরাট বিপর্যয় নামিয়ে আনবে।
দুনিয়া জুড়ে দুর্ঘটনা
দুনিয়ার উন্নত দেশগুলোতেই ছোট বড় মিলিয়ে অসংখ্য পারমাণবিক দুর্ঘটনা ঘটেছে যার অনেকগুলোই তারা চাপা দিয়েছে।
পারমাণবিক দুর্ঘটনার যে তালিকা রয়েছে তাতে কানাডায় ৫টি (১৯৫২ থেকে ১৯৮৬), ফ্রান্সে ১২টি (১৯৬৯ থেকে ২০১২), জার্মানিতে ৪টি (১৯৮৬ থেকে ১৯৮৯), ভারতে ৬টি (১৯৮৭-২০০২), জাপানে ১২টি (১৯৭৮-২০১১), পাকিস্তানে ১টি (২০১১), ইউক্রেইনে ১টি (১৯৮৬), যুক্তরাজ্যে ৩টি (১৯৫৭-২০০৫) এবং যুক্তরাষ্ট্রে ৪৬টি (১৯৫৫-২০১০)। ১৯৭৯ সালে যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভানিয়ার থ্রি মাইল আইল্যান্ড কেন্দ্র এবং ১৯৮৬ সালে সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের ইউক্রেনে অবস্থিত চেরনোবিল কেন্দ্রের ভয়াবহ দুর্ঘটনার কথা সবারই জানা। চেরনোবিল দুর্ঘটনায় তাৎক্ষণিক মৃত্যু নেই, কিন্তু আজ পর্যন্ত আক্রান্ত ৮০ লাখের বেশি মানুষ। জাতিসংঘের রিপোর্ট অনুসারে এদের মধ্যে ৪৬ লক্ষ মানুষ বেলারুশের। তীব্র তেজষ্ক্রিয়তার দরুণ খুব দ্রুত মারা গেছেন ১০ হাজার লোক, এখনও অবধি মোট মৃত্যুর সংখ্যা ৩০ হাজার যার মধ্যে ৩০০০ মারা গেছেন আত্মহত্যা করে।
৪০ লক্ষ মানুষ গৃহহারা ও কর্মহারা হয়েছেন। বেলারুশ, ইউক্রেন ও রাশিয়ার ১,২৫,০০০ বর্গকিলোমিটার অঞ্চল কয়েক হাজার বছরের জন্য ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। বেলারুশে জন্মখুঁত নিয়ে জন্মানো শিশুর সংখ্যা ইউরোপে সর্বাধিক। ২১ শতাংশ চাষযোগ্য জমি তেজস্ক্রিয় মৌল দ্বারা দূষিত হয়ে চাষের অযোগ্য হয়ে পড়েছে।
কম খরচের মিথ্যা গল্প
সরকার প্রচার করছে যে, রূপপুরের ১০০০ মেগাওয়াট ক্ষমতা স¤পন্ন একটি রিঅ্যাক্টরের দাম ১২ হাজার থেকে ১৫ হাজার কোটি টাকা হবে।
এটি মিথ্যা কথা। ২০১১ সালে ভিয়েতনাম নিন্ থুয়ান পারমাণবিক বিদ্যুকেন্দ্রের জন্য রাশিয়া থেকে ১০০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার দুটি রিঅ্যাক্টর প্রতিটি ৩৬ হাজার কোটি টাকায় কেনার চুক্তি করেছে। তুরস্ক আক্কুয়ু পারমাণবিক বিদ্যুকেন্দ্রের জন্য রাশিয়ার থেকে মোট ৪৮০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার রিঅ্যাক্টর ক্রয় করছে ১.৬ লক্ষ কোটি টাকায়; অর্থাৎ প্রতি ১০০০ মেগাওয়াটে ব্যয় প্রায় ৩৩ হাজার ৩০০ কোটি টাকা। ২০১২ সালে বেলারুশ অস্ত্রভেৎস পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য রাশিয়া থেকে ৮০ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে ২৪০০ মেগাওয়াটের রিঅ্যাক্টর ক্রয়ে চুক্তি করেছে। প্রতি ১০০০ মেগাওয়াটে ব্যয় হচ্ছে ৩৩ হাজার ৩০০ কোটি টাকা।
অর্থাৎ, আধুনিক প্রযুক্তি স¤পন্ন ১০০০ মেগাওয়াটের প্রতিটি কেন্দ্র স্থাপনে ব্যয় হয় ৩০-৩৫ হাজার কোটি টাকা। সুতরাং রাশিয়া অর্ধেকেরও কম দামে বাংলাদেশকে পরমাণু চুল্লি সরবরাহ করবে এটা ভাবার কোন কারণ নেই। রূপপুর প্রকল্পের প্রতিটি চুল্লির দাম ৩৩ হাজার কোটি টাকার কম হবে না। সরকার এই তথ্য গোপন রেখেছে।
বিদ্যুৎ ঘাটতির অজুহাত : দুর্নীতির কবলে বিদ্যুৎ খাত
রূপপুরে বিপদজনক পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণে যে ব্যয় হবে তার থেকে অনেক কম খরচে অন্য উৎস থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা সম্ভব।
বাংলাদেশের বন্ধ থাকা রাষ্ট্রায়ত্ব সব বিদ্যুৎ কেন্দ্র চালু এবং আরো কিছু কেন্দ্র সংস্কার ও সুসজ্জিত করলে সবমিলিয়ে ২৪০০ মেগাওয়াট অতিরিক্ত বিদ্যুৎ বর্তমান অবকাঠামো থেকেই পাওয়া সম্ভব। কিন্তু তা না করে স্বল্পমেয়াদে বিদ্যুৎ সংকট সমাধানের নামে রেন্টাল ও কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কাছ থেকে ৮ গুণ বেশি দামে বিদ্যুৎ কিনে ভয়াবহ ঋণের বোঝা তৈরি করেছে সরকার। দুর্নীতি ও দলীয়করণের ফলে রেন্টাল-কুইক রেন্টাল থেকে যে পরিমাণ বিদ্যুৎ পাওয়ার কথা ছিল তার অর্ধেকও পাওয়া যায়নি, উপরন্তু প্রতি বছর জনগণের পকেট কেটে ৪,০০০ কোটি টাকা ভর্তুকি দেয়া হচ্ছে যা বিদ্যুৎ খাতের মোট ভর্তুকির ৯০ শতাংশ। প্রতিমাসে কুইক রেন্টাল পাওয়ার প্ল্যান্টের নামে সরকারি কোষাগার থেকে লুট করে নেয়া হচ্ছে কয়েকশত মিলিয়ন ডলার। লুটকৃত অর্থের ঘাটতি পূরণ করতে সরকার বারবার বিদ্যুতের দাম বাড়িয়েছে।
বলা যায় বিদ্যুৎ সংকট সমাধানের নামে জনগণের অর্থ কেড়ে নিচ্ছে সরকার।
রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নিয়ে রাশিয়ার সাথে চুক্তির ক্ষেত্রেও রয়েছে দুর্নীতির নোংরা খেলা। সরকার রাশিয়ার কাছ থেকে ৫০ কোটি ডলার (৪০০০ কোটি টাকা) ঋণ নিয়েছে রূপপুরে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের বিভিন্ন দিক পরীক্ষা করে সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের জন্য। অথচ জাপান এটমিক পাওয়ার কোম্পানী ভিয়েতনামের নিন্ থুয়ানে দ্বিতীয় চুল্লি বসানোর জন্য ১৮ মাসব্যাপী যে সমীক্ষা করছে তাতে ব্যয় ধরা হয়েছে ২৬ মিলিয়ন ডলার। বাংলাদেশে রাশিয়া কোন সমীক্ষা চালালে তার ব্যয় হতে পারে ১৫-২০ মিলিয়ন, ১২০ কোটি থেকে ১৬০ কোটি টাকা।
বোঝাই যাচ্ছে এই সমীক্ষা প্রকল্পে ব্যাপক দূর্নীতি হবে। এই সমীক্ষা রিপোর্ট তৈরির কাজ এখনও শেষ হয়নি। তার আগেই তাড়াহুড়ো করে বিশাল ব্যয়সাপেক্ষ রূপপুর পারমাণবিক শক্তি কেন্দ্র স্থাপনের জন্য কার্যকর পদক্ষেপ সরকার গ্রহণ করেছে।
আমরা বিদ্যুত চাই, কিন্তু মানুষ হত্যা করে নয়
ফুকুসিমায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনাকে জাপানের একটি স্বাধীন তদন্ত কমিটি “মানুষ-সৃষ্ট ধ্বংসযজ্ঞ” বলে অভিহিত করেছে। আগে থেকে সতর্ক করার পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি মুনাফার স্বার্থে।
তাঁরা দুর্নীতি ও মুনাফাকে দায়ী করেছেন এই দুর্ঘটনার জন্য। চেরোনবিল থেকে থ্রি মাইল, ফুকুশিমা থেকে রাজস্থান সব জায়গায় নিউক্লিয়ার ইন্ডাস্ট্রির মুনাফার লোভের বলী হয়েছেন সাধারণ মানুষ।
পুঁজিবাদের ধরণই এমন। তাকে মুনাফার জোরে ক্রমাগত বাড়তে হয়। এটি তার বাঁচা মরার প্রশ্ন।
নিজেকে বাঁচাতে গিয়ে লক্ষ মানুষের মৃত্যু ঘটায় পুঁজিবাদ। মানুষের চেয়ে মুনাফা, প্রকৃতির চেয়ে প্রকল্পই পুঁজিবাদী ব্যবস্থায় বড়। মানব জাতিকে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষার জন্য পুঁজিবাদ উচ্ছেদ করে সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে শামিল হওয়া আজ ছাত্র-তরুণদের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব। পুঁজিবাদ একটি বিশ্ব ব্যবস্থা। লড়াইটা তাই দেশীয় নয় বৈশ্বিক।
১৯৭২ সালে থেকে বাংলাদেশের লুটেরা শাসক শ্রেণী, তাদের সরকার ও রাজনীতি এখানে যে শোষণ ও লুটপাটের রাজত্ব তৈরী করেছে তারই ধারাবাহিকতায় আজ রূপপুরে বিপদজনক পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের তোরজোর চলছে এবং এই প্রকল্পকে ঘিরে চলছে দুর্নীতির মচ্ছব। ফুলবাড়ি-বড়পুকুরিয়ার উন্মুক্ত কয়লা খনি, সাগরের গ্যাস ব্লক বিদেশী কো¤পানির কাছে ইজারা, কুইক রেন্টালের নামে ১৪ থেকে ১৭ টাকা দরে বিদ্যুৎ ক্রয়, রামপালে সুন্দরবন ধ্বংস করে কয়লা বিদ্যুৎ নির্মাণ করা ইত্যাদি সবকিছুই এই মুনাফা ও লুটপাটের আয়োজনের অংশ। এর বিরুদ্ধে লড়াইটা রাজনৈতিক লড়াই। এই বিপদজনক পারমাণবিক কেন্দ্র প্রতিরোধ করা, মানুষ ও প্রকৃতিকে রক্ষা করার লড়াইটাও তাই রাজনৈতিক। এই লড়াইয়ে অংশ নিন, রূপপুরে বিপজ্জনক পারমাণবিক বিদ্যু॥কেন্দ্র প্রকল্প বাতিলের দাবীতে আন্দোলন গড়ে তুলুন।
প্রচারে : রূপপুরে বিপজ্জনক পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র প্রতিরোধ ছাত্র-যুব আন্দোলন
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।