আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

রূপপুরে নিরাপত্তা নিয়ে দুশ্চিন্তা নেই: প্রধানমন্ত্রী



এ প্রকল্পের নিরপত্তা নিশ্চিতে সব ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেছেন, এর মধ্য দিয়ে প্রযুক্তি ব্যবহারের ক্ষেত্রেও বাংলাদেশ এটি নতুন মাইল ফলকে পৌঁছাল।
প্রধানমন্ত্রী আশা করছেন, এ প্রকল্পের দুই ইউনিটের কাজ শেষে ২০২১ সালের মধ্যে দুই হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যোগ হবে।
এ জন্য ব্যয় হবে তিন থেকে চারশ কোটি ডলার।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বুধবার সকাল ১১টা ২১ মিনিটে রূপপুর প্রকল্পের মাঠে এই ‘স্বপ্নের প্রকল্পের’ প্রথম পর্যায়ের ভিত্তিফলক উন্মোচন করেন।  
রাশিয়ান ফেডারেশনের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও রাশিয়ার আনবিক শক্তি কর্পোরেশন রোসাটমের মহা পরিচালক সের্গেই ভি কিরিয়েনকোও এ সময় উপস্থিত ছিলেন।


সকাল সাড়ে ১০টার দিকে হেলিকপ্টারে করে রূপপুরে নামার পর সরাসরি প্রকল্প মাঠে আয়োজিত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দেন প্রধানমন্ত্রী। ভিত্তি ফলক উন্মোচনের পর তিনি মুনাজাতে অংশ নেন।    
প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি উপদেষ্টা তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী, পরিকল্পনামন্ত্রী এ কে খন্দকার, পররাষ্ট্র মন্ত্রী দীপু মনি, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী ইয়াফেস ওসমান ও স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ইয়ফেস ওসমান অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আজ শুধু রূপপুর বা পাবনাবাসীর স্বপ্ন পূরণ হয়েছে তা নয়, আজ পুরো জাতির স্বপ্ন পূরণ হয়েছে বলে আমি মনে করি। ”
শেখ হাসিনা বলেন, এ প্রকল্পের জন্য ‘দীর্ঘদিন ধরে জমি দিয়ে বসে থাকা’ রূপপুরবাসীরও অপেক্ষার অবসান হলো বলে উল্লেখ করেন তিনি।


সরকারপ্রধান বলেন, রূপপুর প্রকল্পের ক্ষেত্রে সরকার সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েছে নিরাপত্তা নিয়ে।
“এর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আমরা আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থা- আইএইএর সব নিয়ম অক্ষরে অক্ষরে অনুসরণ করেছি। স্বাধীন নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠা করেছি। এই কর্তৃপক্ষ আইএইএর সঙ্গে যোগাযোগ রেখে প্রতিটি ক্ষেত্রে নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে। নাকশাও সেভাবে করা হবে।


পদ্মা নদীর তীরে এই পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণে বাংলাদেশকে সহযোগিতা দিচ্ছে রাশিয়ার পারমাণবিক জ্বালানি সংস্থা রোসাটম। তাদের সঙ্গে চুক্তি অনুয়ায়ী, অবকাঠামো উন্নয়নসহ বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণে সব ধরনের সহযোগিতা দেবে রুশ সরকার। কেন্দ্র পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় জ্বালানিও তারা সরবরাহ করবে এবং বর্জ্য ফেরত নেবে।
শেখ হাসিনা বলেন, “আমর দৃঢ় বিশ্বাস, রাশিয়া আন্তর্জাতিক মান বজায় রেখে, নিরাপত্তা নিশ্চিত করে সাশ্রয়ী মূল্যে এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে। বর্জ্য অপসারণের ক্ষেত্রেও রাশিয়া সব ধরনের সহযোগিতা করবে।

  তারা নিজেরাই বর্জ্য ফেরত নিয়ে যাবে, এতে আমাদের দেশের কোনো ক্ষতি করবে না - এটা রাশিয়া নিশ্চিত করেছে। ”
কাজেই এ নিয়ে কোনো ‘দুশ্চিন্তা নেই’ বলেও উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।
বক্তব্যের শুরুতে প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, জাতীয় চার নেতা এবং একাত্তরের লাখো শহীদদের স্মরণ করেন, যাদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে।
রূপপুর প্রকল্পে সহযোগিতা দেয়ায় রাশিয়া সরকার ও প্রধানমন্ত্রী ভ্লাদিমির পুতিনকেও ধান্যবাদ জানান তিনি।
১৯৬১ সালে পরামাণু কেন্দ্র স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়ার পর ১৯৬৩ সালে প্রস্তাবিত ১২টি এলাকার মধ্য থেকে বেছে নেয়া হয় রূপপুরকে।


বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর পারমাণবিক বিদ্যুত কেন্দ্র স্থাপনের জন্য প্রায় ৫০ বছর আগের নেয়া উদ্যোগ সক্রিয় করে তোলা হয়। দ্রুত পারমাণবিক বিদ্যুত কেন্দ্র স্থাপনের জন্য ২০১০ সালে সংসদে প্রস্তাবও পাস করা হয়, গঠন করা হয় একটি জাতীয় কমিটি।  
ওই বছরই রাশিয়ার সঙ্গে একটি কাঠামো চুক্তি করে সরকার এবং ২০১১ সালের নভেম্বরে বাংলাদেশে একটি পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ দুই দেশ চুক্তি করে। দুই ইউনিটের দুই হাজার মেগাওয়াট উতপাদন ক্ষমতার প্রস্তাবিত এ কেন্দ্রের জন্য আগেই অধিগ্রহণ করা হয় ২৬২ একর জমি।
রাশিয়া থেকে পাঁচ স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা সম্বলিত সর্বাধুনিক তৃতীয় প্রজন্মের প্রযুক্তি দিয়ে রূপপুরে এই বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ করা হচ্ছে।

নিরাপত্তা ও প্রযুক্তির মানের ওপর নির্ভর করে বিদ্যুৎ কেন্দ্রের দুটি ইউনিটের প্রতিটি স্থাপনে ১৫০ থেকে ২০০ কোটি ডলার ব্যয় হতে পারে বলে সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
এই নির্মাণ ব্যয়ের ১০ শতাংশের অর্থায়ন করবে বাংলাদেশ সরকার, বাকি ৯০ শতাংশ রাশিয়া ঋণ হিসাবে দেবে।  
বিদ্যুৎ কেন্দ্রের মেয়াদ হবে ৬০ বছর। পরে তা আরো ২০ বছর তা বাড়ানো যাবে।


সোর্স: http://bangla.bdnews24.com     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।