াি
‘সিল্ক রোড’ নামের সঙ্গে লুকিয়ে রয়েছে নজরদারির আড়ালে এক বিশাল অন্ধকার জগত্। অস্ত্র, মাদকসহ নানা অবৈধ পণ্যের বিশাল এক অনলাইন বাজার সিল্ক রোড। সম্প্রতি ‘সিল্ক রোড’ নামের এই অনলাইন বাজার বন্ধ করে দিয়ে এর রহস্য উন্মোচন করলেন মার্কিন গোয়েন্দারা। বিবিসি অনলাইনের এক খবরে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এফবিআইয়ের দাবি, এই সাইটটি থেকে মাদক ও অবৈধ বিভিন্ন পণ্যের লেনদেন করা হয়।
এফবিআইয়ের একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন, সিল্ক রোড সাইটটি বন্ধের পাশাপাশি ২ অক্টোবর যুক্তরাষ্ট্রের সান ফ্রান্সিসকো থেকে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ ছাড়াও প্রায় ৩৬ লাখ মার্কিন ডলার আর্থিক মূল্যের বিটকয়েন নামের ভারচুয়াল মুদ্রাও জব্দ করেছে এফবিআই।
এফবিআই দাবি করেছে, এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি বিটকয়েন জব্দ হওয়ার ঘটনা এটি।
সিল্ক রোড নামের এই সাইটটিতে প্রবেশ করতে ব্যবহারকারীদের ‘টর’ নামে একটি ব্রাউজিং সিস্টেম ব্যবহার করতে হতো। ‘টর’ হচ্ছে বিশেষ সফটওয়্যার যার মাধ্যমে নিজের পরিচয় গোপন রেখে ওয়েব ব্রাউজিং করার সুযোগ পেতেন সিল্ক রোড ব্যবহারকারীরা।
এফবিআইয়ের হাতে ধরা পড়া উইলিয়াম আলব্রিচট নামের ব্যক্তির বিরুদ্ধে মাদক, কম্পিউটার হ্যাকিং পরিকল্পনা, মানি লন্ডারিংয়ের মামলা হয়েছে।
সিল্ক রোড কী?
এশিয়া, ইউরোপ ও ভূমধ্যসাগর অঞ্চলকে সংযুক্ত করে একটি প্রাচীন বাণিজ্যিক পথ। প্রায় চার হাজার মাইল দীর্ঘ এই পথের নামকরণ করা হয়েছে সিল্ক ব্যবসার নামে, যা চীনের হান রাজত্বকালে আরম্ভ হয়েছিল। যদিও সিল্কই ছিল প্রধান পণ্য কিন্তু অন্যান্য আরও অনেক ধরনের পণ্যও এই পথে আনা-নেওয়া করা হত। চীনা, ভারতীয়, ফারসি,আরব ও ইউরোপীয় সভ্যতার উন্নয়নে এই বাণিজ্য পথের বিশাল প্রভাব ছিল।
বিশেষ এই বাণিজ্যপথ সিল্ক রোডের নাম থেকে সিল্ক রোড ওয়েবসাইটটির নামকরণ করা হয়েছে। গোপনে ইন্টারনেট ব্যবহারের এ সাইটটি রীতিমতো কুখ্যাতিও অর্জন করেছিল। কেবল ‘টর’ নামের বিশেষ ব্রাউজিং ব্যবস্থায় সিল্ক রোডের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া সম্ভব ছিল। যুক্তরাষ্ট্রের নেভাল রিসার্চ ল্যাবরেটরি ‘টর’ নামের এ বিশেষ সফটওয়্যারের উদ্ভাবক যা গোপন তথ্য আদান-প্রদানে ব্যবহার করা যায়।
ইন্টারনেটে অবৈধ কার্যক্রম লুকিয়ে রাখার এ পদ্ধতিটির আরেকটি নাম হচ্ছে ‘দ্য ডার্ক ওয়েব’।
অন্ধকার জগতের এ সাইটটি থেকে পণ্য কিনতে হলে এক ধরনের ভারচুয়াল মুদ্রার ব্যবহার করতে হতো যার নাম বিটকয়েন। এ বিটকয়েনের লেনদেন সহজে নজরদারি করা সম্ভব হয় না।
এফবিআইয়ের তথ্য অনুযায়ী, সিল্ক রোড সাইটটিতে ১০ লাখের বেশি নিবন্ধিত ব্যবহারকারী রয়েছে। এর আগে কার্নেগি মেলন বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষণায় বলা হয়েছিল, সিল্ক রোড সাইটটিতে প্রতি মাসে প্রায় ১৩ লাখ মার্কিন ডলারের লেনদেন হয় যা থেকে বিপুল পরিমাণ লাভ করে সাইটটির পরিচালকেরা।
অনলাইন কালোবাজার
অবৈধ পণ্য কেনাবেচার জন্য অনলাইনের কালোবাজার হিসেবে কুখ্যাতি অর্জন করেছিল সিল্ক রোড।
২০১১ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে সিল্ক রোড যাত্রা শুরু করলেও এর আরও আগে থেকে এর প্রস্তুতি চলছিল। আমাজন ডটকম বা ইবে ডটকম যেমন ই-কমার্স সাইট হিসেবে খ্যাত তেমনি অনলাইনে মাদক কেনাবেচার সাইট হিসেবে সিল্ক রোড দ্রুত পরিচিতি পেয়েছিল। কিন্তু ২ অক্টোবর এফবিআই এ সাইটটি বন্ধ করে দিয়েছে। বন্ধ করে দেওয়ার আগ পর্যন্ত ব্যবহারকারীরা এ সাইটে বিনামূল্যে নিবন্ধন করতে পারতো। তবে কেউ কিছু বিক্রি করতে চাইলে অর্থ খরচ করে অ্যাকাউন্ট খুলতে হতো।
এখানে মাদক ছাড়াও পর্নোগ্রাফি, চুরি করা ক্রেডিট কার্ডের তথ্যসহ নানা অবৈধ জিনিসের লেনদেন হতো।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।