নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলার বোতলাগাড়ী ইউনিয়নের চান্দিয়ার ডাঙ্গায় বড়ুয়া সড়কসেতুর নিচ থেকে বিএনপির স্থানীয় এক নেতা অবৈধভাবে বালু তুলছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ কারণে সেতুটি হুমকির মুখে পড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এদিকে ওই সেতু থেকে সৈয়দপুর শহরের বাইপাস সড়ক পর্যন্ত ছয় কিলোমিটার এলাকায় কমপক্ষে ১৫টি পয়েন্ট থেকে স্থানীয় লোকজন অবৈধভাবে বালু তুলছে।
গত শনিবার সরেজমিনে দেখা গেছে, সেতুর নিচ থেকে বালু তোলার পর ট্রাক্টরে করে তা পরিবহন করা হচ্ছে। স্থানীয় লোকজন জানান, ওই ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি জয়নাল আবেদীন সেতুর নিচ থেকে বালু তুলছেন।
একটি ট্রাক্টরের চালক হায়দার আলী বলেন, ‘আমরা হুকুমের গোলাম। জয়নাল ভাই আমার ট্রাক্টর ভাড়ায় নিয়েছেন। নদী থেকে বালু তুলে তা শহরে নেওয়া হচ্ছে। প্রতিদিনের ভাড়া হিসেবে তিনি এক হাজার টাকা দেন। ’
চান্দিয়ার ডাঙ্গা গ্রামের বাসিন্দা আনোয়ার আলী বলেন, কেবল জয়নাল নন, ওই সেতু এলাকা থেকে সৈয়দপুর শহরের বাইপাস সড়ক পর্যন্ত ছয় কিলোমিটার এলাকায় কমপক্ষে ১৫টি পয়েন্ট থেকে বালু তোলা হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, সেতুর নিচ থেকে বালু তোলায় সেতুটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠছে।
দক্ষিণ দিকে নদীর পাড় ধরে আরও কিছুদূর এগিয়ে গেলে বেশ কয়েকটি স্থানে বালু তুলতে দেখা যায়। রাফিউল ইসলাম নামের উপজেলার এক আইনজীবী জানান, বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন ২০১০-এ নীতিমালা মেনে বালুমহাল ইজারার নির্দেশনা রয়েছে। কেউ নদী খুঁড়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করলে তাঁর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে। খড়খড়িয়া নদী থেকে বালু উত্তোলনের ক্ষেত্রে এ নীতিমালা মানা হচ্ছে না।
উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শফিকুল ইসলাম গত ২ জুন ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে মাসুদুর রহমান নামের একজন অবৈধ বালু ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করেন। এর আগে ভ্রাম্যমাণ আদালত খড়খড়িয়া নদী থেকে বালু উত্তোলনে ব্যবহূত দুটি ট্রাক্টর, ১০টি খননযন্ত্র ও ৫০০ ফুট পাইপ জব্দ করেন।
সেতুর নিচ থেকে অবৈধভাবে বালু তোলার ব্যাপারে জানতে চাইলে জয়নাল আবেদীন বলেন, ‘নদী থেকে সবাই বালু তোলে, আমিও তুলছি। এ ছাড়া নদীর পাড়ে আমার পৈতৃক জমি রয়েছে। বালু তুলতে বালুমহাল ইজারা নিতে হয়, তা আমার জানা নেই।
’
বোতলাগাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ছাইদুর রহমান সরকার বলেন, সেতুর নিচ থেকে বালু তোলায় এটি ঝুঁকিতে রয়েছে। তিনি বারবার নিষেধ করেও ফল পাননি। অবৈধ বালু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি হয়ে পড়েছে।
ইউএনও বলেন, কেউ কেউ বেপরোয়া হয়ে নদী থেকে বালু তুলছেন। এ জন্য তাঁরা বেশ কয়েকবার ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেছেন।
বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে। অবৈধ বালু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।