আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ফেসবুক স্ট্যাটাস, রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা এবং প্রাসঙ্গিক কিছু কথা (?)

হালার এতো ক্ষিদা লাগে ক্যা, ক্ষিদার জ্বালায় মনে কয় পাথর চাবাইয়া খাই...

ফেসবুক স্ট্যাটাস, রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা এবং প্রাসঙ্গিক কিছু কথা (?) ০৩ রা জুন, ২০১২ সকাল ৭:৩২ প্রকাশিত তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইন সম্পর্কে একটি পুরানো লেখা৷ জানতে হলে পড়তে হবে, তাই পড়ার অনুরোধ রইলো৷ এ বছরের (২০১২) শুরুর দিকে অস্ট্রেলিয়ার প্রাক্তন পররাষ্ট্রমন্ত্রী, (যিনি পূর্বে নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রীও ছিলেন) মিঃ ক্যাভিন রাড পররাষ্ট্রমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী জুলিয়া গিলার্ডকে লিডারশীপ চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেন। এবং তাঁর প্রতি অনাস্থা প্রস্তাব এনে লেবার পার্টির ককাস সভার আহবান জানান। পরবর্তীতে অবশ্য ককাসদের (নির্বাচিত লেবার পার্টির পার্লামেন্ট সদস্য) ভোটে তিনি পরাজিত হন। অনাস্থা প্রস্তাবটিতে, (অস্ট্রেলিয়ান লেবার পার্টির নীতি অনুযায়ী বৈধ) মিঃ ক্যাভিন রাড শুধু যে নিজ দলীয় দেশের প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব এনেছিলেন তা কিন্তু নয়। তিনি এটাও বলেছেন যে, লেবার পার্টি, কিছু অদৃশ্য মুখোস পরা লোক দ্বারা পরিচালিত হয়, এবং তিনি এও দাবী করেন ঐ মুখোশ পরা লোকরাই লেবার পার্টিকে পরিচালনা করছেন।

বস্তুতপক্ষে তিনি দাবী করেন যে, অস্ট্রেলিয়ার বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর নিজের কোন ক্ষমতা নেই। পরোক্ষভাবে এ কথার অর্থ এই দাড়ায় যে অস্ট্রেলিয়া মূলত মুখোশ পরা কিছু অসাংবিধানিক, অনির্বাচিত লোক দ্বারাই শাসিত হচ্ছে। তাঁর এই ঔদ্ধত্যপূর্ণ বক্তব্যের অর্থ মূলত যে কোন দেশের জন্য রাষ্ট্রদ্রোহিতার সামিল। একটি দেশের শাসন ব্যবস্থার উপর সম্পূর্ণ অনাস্থা এনে নির্বাচিত লোকদের স্থলে, অবৈধ, অসাংবিধানিক, অনির্বাচিত, মুখোশ পরা লোকবলের মাধ্যমে দেশ পরিচালিত হওয়ার দাবী অত্যন্ত সাংঘাতিক। মিঃ নরম্যান মুড়, যিনি ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়া অঙ্গরাজ্যের একজন খনিজ মন্ত্রী, গত বছর একটি টেলিভিশন সাক্ষাৎকারে মত দেন যে, ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়া, অস্ট্রেলিয়ান ফেডারেশন থেকে বের হয়ে একটি আলাদা রাষ্ট্র গঠন করা উচিত।

তাঁর দাবী এ রাজ্যের খনিজ আয়ের সিংহভাগ অন্যান্য রাজ্যে চলে যাচ্ছে। যে লক্ষ্যে অস্ট্রেলিয়া ফেডারেশন গঠিত হয়েছে, সে অনুযায়ী তাঁর মতামত অস্ট্রেলিয়া ফেডারেশন সংবিধানের বিপক্ষে যায় বলে, তিনি ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়াকে একটি আলাদা স্বাধীন রাষ্ট্র গঠনের পক্ষে মত দেন। এবং তিনি সে রাষ্ট্রের সম্ভাব্য দুটি নামও প্রস্তাব করেন। মি. ক্যাভিন রাড, মুখোশ পরা যে অদৃশ্য লোকদের দ্বারা দেশ পরিচালনার দাবী করেছেন। অথবা মিঃ নরম্যান মুড়ের ফেডারেশনের বিরুদ্ধে টেলিভিশনে দেয়া মতামত দিয়েছেন, সেগুলো কি রাষ্ট্র-বিরোধী বলে বিবেচিত হয়েছে? উত্তর হচ্ছে, না।

মিঃ রাডের ঔদ্ধত্যপূর্ণ এই বক্তব্যের জন্য তাঁর বিরুদ্ধে কোন রাষ্ট্র-দ্রোহিতার মামলা তো হয়ই নি এবং মিঃ মুড়ের মন্ত্রণালয় পর্যন্ত চলে যায়নি। নিজ দলের বিরোধীদের দ্বারা মিঃ রাড কিছুটা তিরস্কৃত হলেও মিঃ মুড়ের মন্তব্যের জন্য নিজের অথবা অন্য কোন দল থেকেও তিরস্কৃত হননি। মিঃ রাড এবং মিঃ মুড়, তাঁদের নিজস্ব মতামত ব্যক্ত করেছেন মাত্র, যেমন একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে প্রতিটি নাগরিকেরই মতামত ব্যক্ত করার স্বাধীনতা আছে। যা গণতন্ত্রের একটি অন্যতম স্তম্ভ। ট্রিজন Treason এবং সেডিশান Sedition দুটি মধ্যযুগীয় আইন, যার প্রয়োগ হত মূলত রাজাদের ক্ষমতা রক্ষার জন্য, প্রথমে ছিল শুধু ট্রিজন, সহজ ভাষায় রাজ্য-বিরোধী যে কোন কাজ, যেমন রাজাকে হত্যা করার চেষ্টা, প্রজাদেরকে নির্যাতনের মাধ্যমে ঠাণ্ডা করার জন্যই এই ট্রিজন আইনের উদ্ভব হয়।

সপ্তদশ শতাব্দীতে এসে শাসকরা দেখল যে শুধু ট্রিজন আইন দিয়ে জনগণকে দাবিয়ে রাখা যাচ্ছে না। কিছু কিছু বিরোধী বুদ্ধিমান মানুষ শুধু রাজার বিরুদ্ধেই নয়, তাঁরা রাজতন্ত্রেরও বিরোধী। তাছাড়া তাঁরা সরাসরি রাজাকে উৎখাত করার চেষ্টা না করেও, দেশের মাথা ব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। যেমন চেতনা জাগরণের ভাষণ দেয়া, কলমের মাধ্যমে বিভিন্ন চেতনা মূলক জ্বালাময়ী গদ্য লেখা, ইত্যাদির মাধ্যমে জনগণকে খেপিয়ে তুলছে। ট্রিজন আইনের মাধ্যমে যেমন গুটিকয়েক রাজ্য বিরোধীদের সায়েস্তা করতে পারলেই হত।

কিন্তু এই আইনের আওতায় আর হাজার হাজার মানুষকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া সম্ভব হচ্ছে না। এরা আরো সাংঘাতিক কেননা এখন দলে দলে জনগণ একত্র হয়ে আন্দোলন করছে। সুতরাং সবাইকে তো আর গণহারে মৃত্যুদণ্ড দেয়া সম্ভব নয়। তাই দলনেতাকে সায়েস্তা করতেই তৈরি হল sedition act, রাজ্যের ভারসাম্য নষ্ট হয়, রাজ্যের বিরুদ্ধে যায়, sedition act এর আওতায় বিরোধীদের সায়েস্তা করতেই এই আইনের প্রচলন, প্রয়োগ শুরু হয়। উপনিবেশিক সাম্রাজ্য বিস্তারের হাত ধরে এই আইন আমাদের উপমহাদেশেও আগমন ঘটে।

গত বছর থাইল্যান্ডের আদালত sedition act এর আওতায় সে দেশের এক নাগরিককে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করে। তাঁর অপরাধ সে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে সে দেশের রাজার সমালোচনা করেছে, এবং রাজতন্ত্রের পুরোপুরি অবসান চেয়েছে। থাইল্যান্ডের রাজা তথা রাজবংশকে সে দেশের সৌভাগ্যের প্রতীক বলে বিবেচনা করা হয়। এমন কি থাইল্যান্ডের রাজাদেরকে সে দেশের জনগণ তাঁদের প্রভু বলেও দাবী করে এবং মনেপ্রাণে তা বিশ্বাসও করে। তাই, যদি কেউ থাই রাজা অথবা রাজ্যের সমালোচনা করে, তাঁকে চরম শাস্তি ভোগ করতে হয়।

সে দেশে sedition act এর আওতায় সমালোচনা কারীদের শক্ত হস্তে বিচার করা হয়। থাইল্যান্ডের সংবিধানেও রাজা ও তাঁদের রাজতন্ত্রকে অত্যন্ত শক্ত ও পাকা-পোক্ত স্থান দিয়েছে। তবে প্রশ্ন হচ্ছে, একটি আধুনিক গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে এই sedition act এর প্রয়োজন ও উপযোগিতা আছে কিনা অথবা একটি স্বাধীন গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে মত প্রকাশের ক্ষেত্রে কোন শাস্তি হতে পারে কিনা। সেডিশান একটি স্পর্শকাতর, রাজনৈতিক ভাবে ব্যবহার যোগ্য একটি act, যা বাক-স্বাধীনতা ও অন্যমত প্রদানের বিরুদ্ধে ব্যবহৃত একটি আইন। গণতন্ত্রের একটি মৌলিক স্তম্ভ হচ্ছে বাক-স্বাধীনতা, আর আইন করে এই বাক-স্বাধীনতার হস্তক্ষেপ করার অর্থ হল, গণতন্ত্রের আড়ালে ফ্যাসিবাদকে লালন করা, বাক-স্বাধীনতাকে নিয়ন্ত্রণ করে এমন আইন, তার ঊর্ধ্বে স্থান দেয়া।

যেখানে গণতন্ত্র নিজেই অযাচিত বাক স্বাধীনতাকে নিয়ন্ত্রণের জন্য যথেষ্ট, সেখানে sedition এর মত বিতর্কিত আইনের আদৌ কোন প্রয়োজন আছে কিনা তা বিশ্লেষণের দাবী রাখে। সাম্প্রতিককালে বাংলাদেশে sedition act এর অপ্রত্যাশিত ব্যবহারের ফলে এই বিষয়টি বহুলভাবে আলোচনায় এসেছে। এর মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক জনাব আসিফ নজরুলের ব্যাপারটি অন্যতম। এরিমধ্যে জনাব আসিফ নজরুলের বিষয়টি হাই কোর্টে বিচারাধীন। বিচারের রায় কি হয় সুশীল সমাজ সেদিকে নজর রাখছেন।

একটি টেলিভিশনের টক শো’তে বাংলাদেশের রাজনীতি ও তৃতীয় শক্তির আবির্ভাব সম্পর্কিত মন্তব্যের ফলে তাঁর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলা হয়েছে। তাছাড়া জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের খণ্ড কালীন শিক্ষক মুহাম্মদ রুহুল আমীন খন্দকারের ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাসের কারণে রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলাটিও দেশে ও বিদেশে বহুলভাবে আলোচিত হয়েছে। গত বছর ১৩ আগস্ট সড়ক দুর্ঘটনায় তারেক মাসুদ ও এটিএন নিউজের প্রধান সম্পাদক মিশুক মুনির’সহ পাঁচজনের মৃত্যুতে তিনি ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেন,”পরীক্ষা ছাড়া ড্রাইভিং লাইসেন্স দেয়ার ফল তারেক ও মিশুক মুনিরসহ নিহত ৫, সবাই মরে, হাসিনা মরেনা কেন?” এই মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে রাষ্ট্র-পক্ষ তাঁর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা করেছে। প্রশ্ন হচ্ছে কারো মৃত্যু কামনা করলেই কি তাঁর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ অপরাধে মামলা করা যায় কিনা। সন্দেহ নেই যে কারো মৃত্যু কামনা নিম্ন-রুচির মানসিকতা, শুধু যে দেশের প্রধানমন্ত্রী তা নয়, সেক্ষেত্রে যে কোন মানুষের মৃত্যু কামনা করা অরুচি বোধের শামিল।

আর আইনের চোখে নিম্ন-রুচি মানসিকতা কোন শাস্তিযোগ্য অপরাধ নয়। কাণ্ড জ্ঞানসম্পন্ন মানুষেরা সম্ভবত এ ব্যাপারেও একমত হবেন যে তারেক মাসুদ ও মিশুক মুনিরের মৃত্যুতে কোটি কোটি বাংলাদেশীদের মতো ক্ষুব্ধ রুহুল আমীনও আবেগের বশবর্তী হয়ে এই স্ট্যাটাসটি দিয়েছেন। ভব্যতার মাপকাঠিতে স্ট্যাটাসটি অবশ্যই অশোভন, কিন্তু এই স্ট্যাটাসের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাঁকে সামান্য তিরস্কার করার অধিকার রাখেন কি না, সেটাও তর্ক সাপেক্ষ। ধরা যাক বাংলাদেশের বিরোধী দলের গতকাল হরতাল ছিল। সেই হরতালে পুলিশের হস্তক্ষেপে বিরোধী দলের একজন নেতা নিহত এবং কিছু নেতা নেত্রী আহত হয়েছেন।

তাঁর ফলে বিরোধী দলের নেতা যদি বলেন, প্রধানমন্ত্রী একজন হত্যাকারী ফ্যাসিস্ট, জালিম ও দুর্নীতিগ্রস্থ, তাই অচিরেই তাঁর ফাঁসি হওয়া উচিৎ। অথবা কোন একটি সড়ক দুর্ঘটনায় দেশের একজন সাধারণ মানুষ যদি তাঁর পরিবারের সবাইকে হারিয়ে আর্তনাদ করে বলে, হে আল্লাহ যারা সড়ককে নরক করেছে, সে দেশের প্রধানমন্ত্রীর যেন মৃত্যু হয়। তাহলে এগুলো কি দেশদ্রোহিতায় শামিল হবে? তবে এগুলো যদি রাষ্ট্রদ্রোহ হয় তাহলে, যারা দিনের পর দিন দেশের প্রধানমন্ত্রীকে ভারতের দালাল, এই দল, দেশটা ভারতের কাছে বিক্রি করে দিচ্ছে, সেই দল দেশটাকে পাকিস্তান বানাতে চায়, বলে হরহামেশাই রাজনীতির মাঠ গরম করে রাখেন, তাঁরা কি রাষ্ট্রদ্রোহর মধ্যে পরেন না? একটি বিস্ময়কর ব্যাপার হল, আজ (১ জুন, ২০১২) যখন প্রথমআলো অনলাইন সংস্করণে, জাতীয় কবি কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন ছাত্রের ফেসবুকের স্ট্যাটাসকে কেন্দ্র করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী সম্পর্কে এমন কটূক্তি বা মন্তব্য অবশ্যই রাষ্ট্রদ্রোহের শামিল। এ ধরনের আপত্তিকর মন্তব্যের ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ে অরাজকতার সৃষ্টি ও পড়াশোনার পরিবেশ নষ্ট হয়। তিনি বলেন, ‘এই ছাত্র যে অপরাধ করেছে তা শাস্তিযোগ্য অপরাধ, যে কারণে আমরা তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

ভবিষ্যতে প্রধানমন্ত্রী সম্পর্কে যারাই এ ধরনের অশোভন কটূক্তি করবে, তাদের বিরুদ্ধে একই ব্যবস্থা নেওয়া হবে’। বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্টার ও সহ-উপাচার্য দাবী করলেন যে সেই ছাত্রের প্রত্যক্ষ মদতে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে বিধায় তাঁর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলা করার জন্য রাষ্ট্রকে অনুরোধ জানিয়েছেন। একজন ছাত্র যদি প্রধানমন্ত্রীর বিরোধে কটূক্তি করার অপরাধে অথবা একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ নষ্ট করার অপরাধে, তাঁর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদোহীর মামলা হয়। তাহলে যারা বছরের পর বছর অপ-রাজনীতির আড়ালে দেশকে নরকে পরিণত করেছেন, দেশটাকে ধ্বংস করে দিচ্ছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা হতে পারে কি না। আরো বিস্ময়কর ব্যাপার হল অনলাইন পত্রিকার পাঠকগণ প্রতিনিয়ত হরহামেশা এর চেয়ে বহুগুণ আক্রমণাত্মক ও কুৎসিত মন্তব্য করেন।

তবে কি বিচক্ষণ রাজনীতিবিদ, বিচারকগণ অনলাইনে পত্রিকার পাঠক প্রতিক্রিয়ার ব্যাপারে ওয়াকিফ হাল নন? যদি এগুলো প্রতিদিন প্রতিনিয়তই তাঁদের গোচরে আসে তাহলে কীসের ভিত্তিতে এই গুটিকয়েক নাগরিককে অভিযুক্ত করা হল। তাহলে এগুলো কীসের আলামত। তাহলে আমরা কি একটি মধ্যযুগীয় রাজতন্ত্রে বসবাস করছি? যেখানে রাজা বা রানীর বিরুদ্ধে কোন কথা বলা যাবে না? ভার্চুয়াল বিশ্বে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের একটি স্ট্যাটাস যদি রাষ্ট্রদ্রোহিতা হতে পারে তাহলে, দেশ পাকিস্তান হয়ে যাচ্ছে, দেশ ভারত হয়ে যাচ্ছে, দেশ আমেরিকা, ব্রিটেনের কাছে বিক্রি হয়ে গেছে, এসব মন্তব্যের কারণে কেন রাষ্ট্রদ্রোহ বলে দণ্ডিত হবে না? যদি গণতন্ত্রের আড়ালে মধ্যযুগীয় অবৈধ আইনের ব্যাবহার করে জনগণকে নির্যাতন করা হয়। তাহলে দেশই সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। কারণ বিশ্ব আমাদেরকে দেখছে, আমরা কি গণতন্ত্রের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই, নাকি গণতন্ত্রের আড়ালে ফ্যাসিবাদকে লালন করে দেশকে ধ্বংস করতে চাই সেটাই দেখার বিষয়।

তবে ঘুণে ধরা সনাতনী মানসিকতার পরিবর্তন না হলে দেশ ও গণতন্ত্র সামনের দিকে এগুবে বলে মনে হয় না।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.