নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে আবারও ৪৮ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিতে যাচ্ছে প্রধান বিরোধী দল বিএনপি।
২২ অক্টোবর বরিশালে জনসভা থেকে সংক্ষিপ্ত ওই আলটিমেটাম দিতে পারেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। এর মধ্যে দাবি মানা না হলে ২৫ অক্টোবর ঢাকায় মহাসমাবেশ করার চিন্তাভাবনা চলছে। সেখান থেকেই চূড়ান্ত আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। সারা দেশ থেকে আসা ওই মহাসমাবেশে আগত ১৮ দলের নেতা-কর্মীরা রাজধানীতে অবস্থানও নিতে পারেন।নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে ৪ মে রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে ৪৮ ঘণ্টার আলটিমেটাম দেন বিএনপি চেয়ারপারসন। কিন্তু ওই আলটিমেটামে সরকার কর্ণপাত করেনি।
বরং পর দিন মতিঝিলে হেফাজতের ঘটনায় বিএনপিকে নানাভাবে হয়রানি করা হয়। তবে বিএনপি নেতারা মনে করেন, এ আলটিমেটাম চূড়ান্ত আন্দোলনে যাওয়ার সর্বশেষ আলটিমেটাম। এতে সরকার তাদের দাবি মানতে বাধ্য হবে। নইলে যা করার তা-ই করা হবে। সূত্রমতে, রাজধানীর কর্মসূচি সফল করার মূল দায়িত্ব থাকবে ঢাকা মহানগর বিএনপি ছাড়াও ছাত্রদল, যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের ওপর।
প্রতিটি বিভাগ থেকে ঢাকাকে বিচ্ছিন্ন করার লক্ষ্য নিয়েই আন্দোলনের কার্যক্রম শুরু হবে। ঢাকায় প্রবেশের প্রায় ৪০-৫০টি স্থানে অবরোধ করা হবে। চট্টগ্রাম, রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল, সিলেট ও রংপুর বিভাগ থেকে ঢাকায় আসার সব প্রবেশপথ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হবে। এ ছাড়া জেলা ও মহানগর পর্যায়েও কয়েকটি স্পট থাকবে। এসব স্থানে নেতা-কর্মীরা অবস্থান নিয়ে অবরোধ সৃষ্টি করবেন।
জানা যায়, নির্বাচনকালীন আন্দোলনের রূপরেখা নিয়ে বেশ কয়েক দিন ধরেই দলীয় নেতাদের ছাড়াও বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষের সঙ্গে মতবিনিময় করছেন বেগম খালেদা জিয়া। চূড়ান্ত আন্দোলনে যাওয়ার জন্য দলের সিনিয়র নেতাদের সঙ্গেও দফায় দফায় বৈঠক করে বেশ কিছু নেতাকে দায়িত্বও দিয়েছেন। এরই মধ্যে দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা জেলা ও থানা পর্যায়ের ১৮ দলীয় জোটের নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে চূড়ান্ত আন্দোলনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। এদিকে, নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি মানতে বাধ্য করার পাশাপাশি একদলীয় নির্বাচন প্রতিরোধে 'সর্বদলীয় সংগ্রাম কমিটি' গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন বিরোধীদলীয় নেতা। তার এ নির্দেশনার ভিত্তিতে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে তৃণমূলে চিঠি পাঠানো হয়।
জেলা ও থানা পর্যায়ের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক বরাবর পাঠানো এ চিঠিতে প্রতিটি ভোটকেন্দ্রভিত্তিক ১৮ দলীয় জোটের নেতাদের নিয়ে কমিটি গঠনের নির্দেশনা দেওয়া হয়। কমিটি গঠনে ১০ দিনের সময়সীমাও বেঁধে দিয়ে ১৮ অক্টোবরের মধ্যে তা কেন্দ্রে পাঠানোর নির্দেশনা দেওয়া হয়। ওই কমিটি গঠনের পর সরকারবিরোধী আন্দোলনে ভূমিকা পালনকারী নেতাদের মধ্য থেকেই আগামী নির্বাচনের জন্য বিএনপির প্রার্থী নির্ধারণ করা হবে বলে জানা গেছে।
এ প্রসঙ্গে দলের দফতরের দায়িত্বপ্রাপ্ত যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী জানান, একতরফা নির্বাচন প্রতিহত করতেই বিএনপি চেয়ারপারসনের নির্দেশনা অনুযায়ী এই চিঠি পাঠানো হয়েছে। তিনি আশা করেন, একদলীয় নির্বাচন প্রতিহতের পাশাপাশি এর মাধ্যমে নির্দলীয় সরকার দাবি আন্দোলন আরও জোরদার হবে।
নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি নিয়ে ২২ অক্টোবর বরিশাল যাচ্ছেন বিএনপি চেয়ারপারসন। সোমবার রাতে গুলশান কার্যালয়ে বিরোধীদলীয় নেতার সঙ্গে বৈঠক করে বরিশালের জনসভা চূড়ান্ত করেন বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মজিবর রহমান সরোয়ার এমপি। জনসভার সময় নির্ধারণের সত্যতা নিশ্চিত করে এমপি সরোয়ার বলেন, ২২ অক্টোবর বরিশাল বিভাগীয় জনসভা চূড়ান্ত হয়েছে। ওই জনসভা থেকে বেগম জিয়া নির্দলীয় সরকার দাবিতে কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করতে পারেন।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।