১০ ট্রাক অস্ত্র মামলায় সাক্ষ্য গ্রহণ সমাপ্ত করেছেন আদালত। ২৩ অক্টোবর ফৌজদারি কার্যবিধির ৩৪২ ধারায় আসামিদের পরীক্ষার দিন ধার্য করা হয়েছে। ওই দিন আসামিরা দোষী কি নির্দোষ, সে ব্যাপারে তাঁদের বক্তব্য দেওয়ার সুযোগ দেওয়া হবে।
রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আজ বৃহস্পতিবার মহানগর দায়রা জজ এস এম মজিবুর রহমান শুনানি শেষে সাক্ষ্য গ্রহণ সমাপ্ত করে এ আদেশ দেন। আদালতের এ আদেশের বিরুদ্ধে আসামিরা উচ্চ আদালতে আবেদন করবেন বলে জানিয়েছেন।
রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি (পিপি) কামাল উদ্দিন আহাম্মদ প্রথম আলো ডটকমকে বলেন, সাক্ষ্য গ্রহণ সমাপ্ত করতে রাষ্ট্রপক্ষে ৩ অক্টোবর আদালতে আবেদন করা হয়। ওই দিন আসামিপক্ষের আইনজীবীরা ১০ অক্টোবর অসমাপ্ত জেরা সম্পন্ন করবেন বলে আদালতে জানিয়েছিলেন। কিন্তু তাঁরা সময়ক্ষেপণ করতে মামলার প্রথম তদন্ত কর্মকর্তার অসমাপ্ত জেরা সম্পন্ন করার আবেদন করেন। বারবার বলা সত্ত্বেও তাঁরা বর্তমান তদন্ত কর্মকর্তার অসমাপ্ত জেরা শুরু করেননি। তাই আদালত সাক্ষ্য গ্রহণ সমাপ্ত করে আগামী ধার্য দিনে আসামিদের পরীক্ষার দিন ধার্য করেছেন।
জানতে চাইলে আসামিপক্ষের আইনজীবী কামরুল ইসলাম প্রথম আলো ডটকমকে বলেন, ‘আদালতের এ আদেশের বিরুদ্ধে আমরা উচ্চ আদালতে যাব। মামলার প্রথম তদন্ত কর্মকর্তা ওসি আহাদুর রহমানের অসমাপ্ত জেরা সম্পন্ন না করে সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ করা হয়েছে। ’ তিনি দাবি করেন, রাজনৈতিক হয়রানিমূলক এ মামলায় সরকার তড়িঘড়ি করে শাস্তি দিতে চাচ্ছে।
বেলা একটার দিকে আদালতে সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুত্ফুজ্জামান বাবর, জামায়াতে ইসলামীর আমির মতিউর রহমান নিজামীসহ ১১ আসামির উপস্থিতিতে মামলার শুনানি শুরু হয়। এ সময় আসামিপক্ষের আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলার প্রথম তদন্ত কর্মকর্তা কর্ণফুলী থানার তত্কালীন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আহাদুর রহমান ও সাক্ষী কনস্টেবল মহিউদ্দিনের অসমাপ্ত জেরা সম্পন্নের জন্য আদালতে আবেদন করেন।
তিনি বলেন, অসমাপ্ত জেরা সম্পন্ন না করলে আসামিরা অপূরণীয় ক্ষতির সম্মুখীন হবেন।
এ সময় পিপি কামাল উদ্দিন আহাম্মদ আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, আজ মামলার সর্বশেষ তদন্ত কর্মকর্তা মনিরুজ্জামানকে বাবরের আইনজীবীর জেরার দিন ধার্য ছিল। এ ঘটনায় দুটি মামলা হলেও ঘটনা ও সময় একই। বর্তমান তদন্ত কর্মকর্তাকে অনেক জেরা করা হয়েছে। ১৮০ পৃষ্ঠার বেশি তিনি সাক্ষ্য ও জেরা দিয়েছেন।
আসামিপক্ষের আইনজীবীরা বলেন, ‘ওসি আহাদুর রহমানের অসমাপ্ত জেরা সম্পন্ন করতে হবে। তারপর বর্তমান তদন্ত কর্মকর্তাকে জেরা করব। ’ এ নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে তুমুল বাগবিতণ্ডা শুরু হলে বিচারক আসামিপক্ষের উদ্দেশে বলেন, ‘বর্তমান তদন্ত কর্মকর্তাকে আপনারা জেরা করবেন কি না। আমি আদেশ দিয়ে দেব। ’ এ সময় উভয় পক্ষের অর্ধশতাধিক আইনজীবী জেরা নিয়ে যুক্তি-পাল্টাযুক্তি দেখান।
পরে আদালত ২৩ অক্টোবর আসামিদের ৩৪২ ধারায় পরীক্ষার দিন ধার্য করেন। আসামি বাবরের আইনজীবী ফৌজদারি কার্যবিধির ৫২৬ ধারায় মামলার কার্যক্রম বন্ধ রাখার আবেদন করেন।
২০০৪ সালের ১ এপ্রিল গভীর রাতে সিইউএফএল জেটিঘাটে ১০ ট্রাক অস্ত্রের চালান ধরা পড়ে। এ ঘটনায় অস্ত্র ও চোরাচালান আইনে দুটি মামলা করে পুলিশ। ২০১০ সালের ২৯ নভেম্বর উভয় মামলায় সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হয়।
এ পর্যন্ত অস্ত্র মামলায় ৫৬ ও চোরাচালান মামলায় ৫৩ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন। সর্বশেষ সাক্ষী ছিলেন মামলার সর্বশেষ তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডি চট্টগ্রাম অঞ্চলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মনিরুজ্জামান।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।