আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

হৃদয়গ্রাহী উপমার কবি

কবিরাই পারে, অন্য কেউ পারে না। কেননা কবির ভেতরে খেলা করা আলোটা একটু অন্যরকম। এ আলো কবিকে পথ দেখায়। কাব্যের অনুভবে ধরা দেয়। অন্যরকম এই আলো নিজের সত্তায় ধারণ করে ছড়িয়ে দেন কবি।

আলোকিত হয় চারপাশ। এ জন্যই তো কবিতাকে বলা হয় আলোর ঝরনাধারা। সেই আলোঝরনার উজ্জ্বলতা আর ধ্বনিময়তায় প্রবাহিত হাসান হাফিজের কবিতা। সত্তর দশকের এ কবির কবিতা অনুভবের। সেখানে গূঢ় শব্দ এসে মূঢ় করে তোলে না কাব্যভাবনাকে।

ভাবের ব্যঞ্জনাই যেন তার কাব্যের ধ্রুব অভিজ্ঞান। আর সেই সঙ্গে নিজের বিশ্বাসকে উগলে দিয়ে পাঠককে সঙ্গী করে নেওয়াটা তার কবিতার বড় গুণ। সমকালীন বাংলা সাহিত্যের অন্যতম প্রধান কবি আল মাহমুদের দৃষ্টিতে হাসান হাফিজের 'পরিচ্ছন্ন কাব্যচেতনা এবং হৃদয়গ্রাহী উপমাসমূহ তার অবলম্বন'। আল মাহমুদ অনেক আগেই আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন এভাবে, 'হাসান হাফিজ সাফল্যের উপকূলে এসে পৌঁছবেন'। আজ বলা যায়, সাফল্যের সেই তরী কূলে ভিড়েছে।

দেশের প্রধানতম কবি শামসুর রাহমান যথার্থই একজন 'কর্মিষ্ঠ সতেজ কবি' হিসেবে আখ্যায়িত করে গেছেন হাসান হাফিজকে। তার তিন ডজনের বেশি কাব্যগ্রন্থ এর সাক্ষ্য দেয়। সাহিত্যের বিভিন্ন শাখা-প্রশাখায় অবিরল বিচরণ করলেও তিনি মূলত কবি। প্রয়াত কবি আবদুল মান্নান সৈয়দের ভাষায়, 'সর্বাবস্থায় লিরিক কবি'।

পেশায় সংবাদিক হাসান হাফিজ নেশায় কবি।

কবিতা তো নেশাই। মৌলিক ও সম্পাদনা মিলিয়ে শতাধিক বইয়ের মালিক তিনি। ছোটবেলা থেকেই ছোটদের ছড়া, কবিতা, রূপকথায় আগ্রহী হাসান হাফিজ কবি ও শিশুসাহিত্যিক হিসেবে দামি-নামি অনেক পুরস্কার পেয়েছেন তার কৃতকর্মের জন্য।

১৫ অক্টোবর আটান্ন ছৌঁবেন হাসান হাফিজ। স্বাভাবিকভাবেই জীবনটা পাঁচ দশকের কোঠায় পৌঁছলে তাকে প্রৌঢ়ের সারিতে দাঁড় করাতে অভ্যস্ত আমরা।

কিন্তু হাসান হাফিজ না প্রবীণ, না নবীন। যে মানুষটি কবিতার জন্য, সাহিত্যের জন্য গোটা জীবনটাই রেখে দিয়েছেন, তিনি কী কখনো বয়সের জরায় নিজেকে সমর্পিত করতে পারেন। বাস্তবিক কবিরা চিরনবীন বলে বার্ধক্য তাদের কাছে ঘেঁষতে পারে না। আলোর ঝরনাধারায় তারা আমাদের জানিয়ে যান জীবনটা আগাছার জঙ্গল নয়। কবিতাই যে মানবজীবনের হৃদয়গ্রাহী উপমা।

কবি হাসান হাফিজের কবিতা এর ব্যত্যয় নয়।

 

 

সোর্স: http://www.bd-pratidin.com/

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।