হিন্দু বাঙালিদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপুজো শুরু হলো বৃহস্পতিবার থেকে। কিন্তু এর আগেই কলকাতার বেশ কিছু বড় পুজোমণ্ডপে ঢাক বাজতে শুরু করেছে – উদ্বোধন হয়ে গেছে – কিছু কিছু ভিড়ও জমতে শুরু করেছে ফাঁকায় ঠাকুর দেখে নেয়ার জন্য।
তবে পুজো কমিটির কর্মকর্তারা কিন্তু কাজে নেমে পড়েছেন সাত-আট মাস আগে থেকেই। এত আগে থেকে পুজোর ব্যবস্থাপনায় নেমে পড়ার কারণ নিজেদের পুজোকে যাতে আরো বেশি করে বিপণনযোগ্য করে তোলা যায় – আরো বেশি বিজ্ঞাপন পাওয়া যায় – যাতে নিজেদের পুজো আকারে- আকৃতিতে আরো বড় করা যায়, আরো বেশি মানুষকে টেনে আনা যায়।
দক্ষিণ কলকাতার একটি অতি প্রাচীণ দুর্গাপুজো।
কয়েক দশক আগে বিজ্ঞাপনদাতাদের আকৃষ্ট করার যে প্রচেষ্টা শুরু করেছিল পুজো কমিটিগুলো, গত কয়েক বছরে তা হয়ে দাঁড়িয়েছে রীতিমতো কর্পোরেট কায়দায় বিপণনের প্রচেষ্টা। পণ্য হিসাবে দুর্গাপুজোর বিপণনযোগ্যতা এমন জায়গায় পৌঁছিয়েছে যে সাত থেকে আট মাস আগে প্রত্যেকটা বড় পুজো রীতিমতো প্রেজেন্টেশন নিয়ে হাজির হয়। পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশন, অডিও ভিসুয়াল প্রেজেন্টেশন নিয়ে আসেন তারা।
বড় ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলিতে যেমন ব্র্যান্ড ম্যানেজার, পাবলিক রিলেশনস্ ম্যানেজার, ইভেন্ট ম্যানেজার ইত্যাদি পদ থাকে, পুজো কমিটিগুলিও সেই পেশাদার ও বিশেষজ্ঞদের নিয়োগ করছে। পুজোর মরশুমে প্রচুর বিজ্ঞাপনের কাজ পান ছোট আর মাঝারি এজেন্সি মালিকেরা – আর এই সব বিজ্ঞাপন এজেন্সিগুলো তাকিয়ে থাকে এই সময়টার জন্যই – কারণ বড় বড় বিজ্ঞাপন এজেন্সি পুজোর মরশুমে খুব একটা কাজ করে না...ছোট সংস্থাগুলোই সারা বছরের রসদ যোগাড় করে এই কয়েকদিনে।
এখন একটা ধর্মীয় উৎসব কীভাবে বিপনণ বিশেষজ্ঞদের বছরভরের কাজ হয়ে দাঁড়ায় - মূল স্রোত সেটাই। আর এই মূল স্রোত থেকে যেসব পুজো কমিটি নিজেদের আলাদা করে রাখতে চেয়েছে, তারা শুধু নিজেদের আনন্দের জন্যই পুজো করছেন – কত লোক ঠাকুর দেখতে এল – কত টাকা তহবিলে জমা পড়ল, তা নিয়ে মাথাব্যথা নেই তাদের।
।অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।