ভারতের মধ্যপ্রদেশ রাজ্যের একটি মন্দিরের কাছে পদপিষ্ট হয়ে নারী, শিশুসহ অন্তত ১১৫ জন তীর্থযাত্রী নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ১০০ জনের বেশি। দুর্গাপূজা চলাকালে গতকাল রোববার এ ঘটনা ঘটে।
মধ্যপ্রদেশের দাতিয়া জেলার রতনগড় মাতা মন্দিরে গতকাল সকালে ওই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে। প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেছেন, তীর্থযাত্রীরা একটি সেতু পার হয়ে মন্দিরের দিকে যাওয়ার সময় সেতুটি ভেঙে পড়ার গুজবে হুড়োহুড়ি শুরু হয়।
রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহান ঘটনার নির্বাহী তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
রতনগড় মাতা মন্দির রাজ্যের রাজধানী ভোপাল থেকে ৪০৫ কিলোমিটার এবং দাতিয়া জেলা সদর থেকে ৫৫ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত। সেখানে অন্তত ৫০ জনের মৃত্যু হয়েছে পদপিষ্ট হয়ে। বাকি ব্যক্তিদের মৃত্যু হয় আতঙ্কিত হয়ে সেতু থেকে পানিতে ঝাঁপিয়ে পড়ার পর।
গতকাল বিকেলে একজন জ্যেষ্ঠ পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, ‘এখন পর্যন্ত ১০০টি মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
আরও লাশ পাওয়া যাচ্ছে। অনেকেরই মৃত্যু হয়েছে হাসপাতালে নেওয়ার পথে। মৃতের সংখ্যা ১২০ পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে। ’
ঘটনাস্থলের অদূরে সিন্ধু নদের ওপরে একটি সেতু রয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শীদের দেওয়া বর্ণনা অনুযায়ী, তীর্থযাত্রীরা ওই সেতু হয়ে মন্দিরের দিকে যাচ্ছিলেন।
তখন একটি ট্রলিসমেত ট্রাক্টর ওই সেতুর ওপর দিয়ে যাওয়ার সময় নদীতে পড়ে যায়। এরপর গুজব ছড়িয়ে পড়ে
যে সেতুটি ভেঙে পড়ছে। ঘটনাস্থল ও তার আশপাশে তখন ৫০ হাজারের বেশি তীর্থযাত্রী ছিলেন।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় বাসিন্দা মনোজ শর্মা (২৮) ফোনে টাইমস অব ইন্ডিয়াকে বলেন, আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ার পর পুলিশ লাঠিপেটা শুরু করায় পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়। এ সময় অনেকেই সেতু থেকে ঝাঁপ দেন।
এদিকে ঘটনার পর মন্দিরটিতে যাওয়ার পথে ব্যাপক যানজট সৃষ্টি হয়। এতে করে উদ্ধার তৎপরতা বাধাগ্রস্ত হয়। উত্তেজিত জনতা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন।
মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহান ঘটনার নির্বাহী তদন্ত করার নির্দেশ দেওয়ার পাশাপাশি নিহত প্রত্যেকের জন্য দেড় লাখ রুপি করে দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন।
ভারতে এর আগেও এ ধরনের ঘটনায় বহু পুণ্যার্থীর প্রাণহানি ঘটেছে।
সিন্ধু নদের ওপর অবস্থিত ওই একই সেতুতে ২০০৭ সালে পদদলিত হয়ে ৫০ জনের প্রাণহানি ঘটেছিল। ৫০০ মিটার দৈর্ঘ্যের সংকীর্ণ ওই সেতুটি সেই ঘটনার পর পুনর্নির্মাণ করা হয়।
সর্বশেষ ২০১১ সালে দক্ষিণাঞ্চলীয় কেরালা রাজ্যে একটি উৎসব চলাকালে ১০০ জনের বেশি লোকের মৃত্যু হয়। টাইমস অব ইন্ডিয়া ও বিবিসি।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।