ভারতে সরকারি কাজকর্মে কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারীরা যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে জি-মেইল ও ইয়াহু মেল আর হয়তো ব্যবহার করতে পারবেন না। জি-মেইল, ইয়াহুসহ দুনিয়ার জনপ্রিয় ও সবচেয়ে ব্যস্ততম বেসরকারি ই-মেইল পরিসেবাগুলোকে সরকারি দফতরে বা সরকারি কাজে ব্যবহার করার ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা জারি করতে পারে কেন্দ্রীয় সরকার। এ ব্যাপারে চিন্তাভাবনা করছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও টেলিকম রেগুলেটরি অথরিটি অফ ইন্ডিয়া। খুব সম্ভবত ডিসেম্বরের মধ্যে পাকাপাকিভাবে এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হতে পারে। ফলে ডিসেম্বর থেকে জি-মেইল, ইয়াহু মেইল, হটমেইল বা অন্য বেসরকারি মেল পরিসেবা ব্যবহার করতে পারবেন না কোনো সরকারি কর্মী।
সেনাবাহিনী, রেলসহ শতাধিক মন্ত্রণালয় নিয়ন্ত্রণাধীন কয়েক কোটি কর্মী সে ক্ষেত্রে সরকারি ওয়েবসাইট NIC (নিক বা ন্যাশনাল ইনফরমেটিঙ্ সেন্টার)-এর ই-মেইল সার্ভিস ব্যবহার করবেন। সরকারি কর্মীদের ই-মেইল ব্যবহার বিধি সংক্রান্ত একটি নিয়ম বানাচ্ছে ইলেকট্রনিঙ্ ও ইনফরমেশন টেকনলজি ডিপার্টমেন্ট (ডেইটি)। এ জন্য অন্য মন্ত্রণালয় বাকি মন্ত্রী, আমলাদের সঙ্গেও আলোচনা চালাচ্ছেন সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের তথ্যপ্রযুক্তিবিদরা। সরকারের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও স্পর্শকাতর তথ্য, নীতি, রূপরেখা যাতে কেউ হাতাতে না পারে বা বিদেশি শক্তির হাতে না পৌঁছায় বা হ্যাকারদের কাছে সহজলভ্য না হয়ে ওঠে সে জন্যই এই ব্যবস্থা। ইলেকট্রনিঙ্ ও ইনফরমেশন টেকনলজি ডিপার্টমেন্টের সচিব জে সত্যনারায়ণ জানিয়েছেন, দেশের তথ্য ও ই মেল পরিসেবা আরও সুরক্ষিত ও নিরাপদ করতে আমাদের সবরকম রক্ষাকবচ তৈরি।
মাঝ ডিসেম্বরেই নিক-এর ই-মেইল পরিসেবা চালু হয়ে যাবে দেশজুড়ে। কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের ৫-৬ লাখ কর্মচারী এই ই-মেইল পরিসেবা ব্যবহার করতে পারবেন। এই ই-মেইল পরিসেবা ব্যবহারের জন্য এখন ব্যবহার বিধি ও নীতিগত খসড়া তৈরি করা হচ্ছে। নিক-এর পরিকাঠামোগত উন্নয়নের জন্য এখনই দরকার চার থেকে পাঁচ কোটি টাকা। পরবর্তীকালে দেশজুড়ে এটি চালু করতে ৫০ থেকে ১০০ কোটি টাকা ব্যয় করতে হবে।
কিন্তু কেন এই নয়া ফরমান? জানা গেছে, দুই মার্কিন গুপ্তচর সংস্থাগুলো যেভাবে বিশ্বের বিভিন্ন রাষ্ট্রপ্রধানদের ই-মেইল ও মোবাইল কথপোকথনের ওপর নজরদারি চালাচ্ছে, তাতে ভারতও চায় না, তার সব সরকারি কাজকর্ম, সিদ্ধান্ত ফাঁস হয়ে যায়। এ ছাড়া অ্যাসাঞ্জ ও স্নোডেন এনএসএ ও সিআইএ-এর যেসব গোপন কাজকর্ম ফাঁস করেছেন তাতে শঙ্কা বেড়েছে। ভারতের সরকারি কাজকর্ম ও নেটওয়ার্কের ওপর যে নজরদারিও চলে তা জানেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা। তাই ভবিষ্যতের কথা ভেবেই নিরাপত্তার কারণে জি-মেইল, ইয়াহুদের ছেঁটে ফেলতে চান তারা। ভরসা রাখতে চান সরকারি নিক-এর উপরেই।
সূত্র : পিপিআই-অনলাইন ডেস্ক।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।