নির্বাচন কমিশনার মো. শাহনেওয়াজ বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের বলেন, “কিভাবে সংলাপ করব! এখন দলগুলোকে আমন্ত্রণ জানালে যদি তাদের কেউ কেউ না আসে খারাপ বার্তা পৌঁছাবে জনগণের কাছে। সংলাপে বসার এ ঝুঁকি আর নিতে চাই না আমরা। ”
এর ফলে আচরণবিধি নিয়েও দলগুলোর সঙ্গে নির্বাচন কমিশনের বৈঠক হচ্ছে না। এ বিষয়ে মতামত দিতে চাইলে স্বউদ্যোগে দিতে হবে।
নবম সংসদ নির্বাচনের আগে আইন সংস্কার ও নির্বাচন বিষয়ে চার দফা সংলাপ করেছিল তৎকালীন নির্বাচন কমিশন।
বর্তমান ইসি শুধু ভোটার তালিকা হালনাগাদ ও সীমানা পুনর্নির্ধারণ নিয়ে একবার সংলাপে বসেছে, তাতেও সাড়া পায়নি বিরোধী দলের।
সংবিধান অনুযায়ী আগামী ২৪ জানুয়ারির মধ্যে দশম সংসদ নির্বাচন করতে হবে। তা ধরে নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি নিচ্ছে ইসি, যদিও নির্বাচনকালীন সরকার পদ্ধতি নিয়ে কোনো সুরাহা না হলে নির্বাচন নিয়ে অনিশ্চয়তার আশঙ্কাও করছেন অনেকে।
প্রধান বিরোধী দল বিএনপি নির্বাচনের সময় নির্দলীয় সরকার চায়। কিন্তু আওয়ামী লীগ সংবিধান অনুসরণ করে নির্বাচনের পক্ষপাতি হলেও সর্বদলীয় সরকারে তাদের আপত্তি নেই।
দুই পক্ষের এই অবস্থানে রাজনৈতিক সঙ্কটের আশঙ্কার মধ্যে দুই নেত্রীর টেলিফোনে আলাপ হলেও তা এগিয়ে যাওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।
এর মধ্যে বিএনপি নির্বাচন কমিশনকে হুঁশিয়ার করেছে, নির্বাচনকালীন সরকার পদ্ধতির সুরাহা না হলে তারা যেন নির্বাচনের আচরণবিধি প্রণয়নসহ অন্য কাজ নিয়ে না এগোয়।
সব দলের মতামতের ভিত্তিতে গঠিত কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ নেতৃত্বাধীন বর্তমান ইসি নির্বাচনের আগে দলগুলোর সঙ্গে সংলাপের পরিকল্পনা করেছিল। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে এখন তা থেকে সরে এসেছে।
নির্বাচিত সরকার ও সংসদ বহাল রেখে নির্বাচনের ক্ষেত্রে নতুন যে আচরণবিধি হচ্ছে, তার খসড়াও দলগুলোর কাছে পাঠানো হবে না বলে জানান নিবাচন কমিশনার শাহনেওয়াজ।
তা ওয়েবসাইটে দেয়া হবে জানিয়ে তিনি বলেন, “সবাই মতামত দিতে পারবে। যে কোনো দলও অভিমত জানাতে পারবে। কেউ মত না দিলে মনে করব, এ নিয়ে তারা ইন্টারেস্টেড নয়। ”
মন্ত্রী ও সংসদ সদস্য থেকে নির্বাচন করলে তাতে সবার জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত হবে না বলে অভিযোগ বিরোধী দলের। তবে ইসি বলে আসছে, আচরণবিধি এমনভাবে করা হচ্ছে, যাতে সবার সমান সুযোগ নিশ্চিত হবে।
‘রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণবিধিমালা’ সংশোধন করে রোববার ইসির ওয়েবসাইটে প্রকাশের কথা। এ বিষয়ে মত দেয়ার জন্যে অন্তত সাত দিন সময় দেয়া হবে।
মতামত পর্যালোচনা করে আইন মন্ত্রণালয়ের ভেটিং শেষে নভেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহের মধ্যে আচরণবিধি জারি করার পরিকল্পনা রয়েছে ইসি সচিবালয়ের।
মনোনয়ন দাখিল, বাছাই, প্রত্যাহার ও প্রচারণার পর্যাপ্ত সময় রেখে তফসিল ঘোষণা করা হবে বলে ইতোমধ্যে সিইসি কাজী রকিব জানিয়েছেন।
জানুয়ারির প্রথমার্ধে নির্বাচনের ক্ষেত্রে নভেম্বরের দ্বিতীয়ার্ধে তফসিল ঘোষণাকেই উপযুক্ত বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
সঙ্কটের আশঙ্কা থাকলেও রাজনৈতিক নেতৃত্ব একটি সমাধানে পৌঁছবে বলে আশা করছেন ইসি। সেক্ষেত্রে নির্বাচন আয়োজনের সাংবিধানিক দায়িত্ব পালন সহজ হবে বলে মনে করছেন তারা।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।