আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

পোস্টার ব্যানারে সম্ভাব্য প্রার্থীদের শুভেচ্ছা অভিনন্দন

১২টি উপজেলা নিয়ে গঠিত টাঙ্গাইল জেলায় ৮টি সংসদীয় আসন। দশম সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে সব আসনেই রাজনৈতিক অঙ্গন সরগরম হয়ে উঠেছে। কিছু নতুন মুখের নাম আলোচনায় আসছে। শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে পোস্টার, ব্যানার টাঙিয়ে তারা নিজেদের আগমনের কথা জানান দিচ্ছেন। গত সংসদ নির্বাচনে জেলার ৮টি আসনেই আওয়ামী লীগ প্রার্থীরা জয় লাভ করেন।

তবে টাঙ্গাইল সদর আসনে জোট প্রার্থী জাতীয় পার্টির আবুল কাশেম মামলাজনিত কারণে সাড়ে ৩ বছরের মাথায় তার আসন হারান। এ আসনে বিএনপির প্রার্থী মেজর জেনারেল (অব.) মাহমুদুল হাসানকে হাইকোর্ট সংসদ সদস্য ঘোষণা করেন।

টাঙ্গাইল-১ (মধুপুর) : আসনটি দখলে নেওয়ার জন্য বিএনপি যেমন মরিয়া, তেমনি আওয়ামী লীগ তাদের আসন ধরে রাখার ধারাবাহিক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হচ্ছেন, বর্তমান এমপি, আওয়ামী লীগের কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক খাদ্যমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক। অপরদিকে স্কয়ার হাসপাতালের পরিচালক ডা. ছানোয়ার হোসেন ও সাবেক ছাত্রনেতা আইনজীবী রেজাউল করিমের নাম শোনা যাচ্ছে।

এ আসনে বিএনপির প্রার্থীদের মধ্যে বিএনপির কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য ফকির মাহবুব আনাম স্বপন, জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের যুগ্ম-সম্পদক অ্যাড. মোহাম্মদ আলী, সাবেক এমপি নবাব হাসান আলী চৌধুরীর মেয়ে আশিকা আকবরের ছেলে আফিফ আহমেদ, সাবেক ছাত্রদল নেতা ইঞ্জিনিয়ার গোলাম ভুইয়া মাহবুব লতিফ ও সাবেক এমপি খন্দকার আনোয়ারুল হক। জামায়াতের একক প্রার্থী হিসেবে রয়েছেন অধ্যাপক মজিবর রহমান। টাঙ্গাইল-২ (গোপালপুর-ভুঞাপুর) : আওয়ামী লীগের বিশ্বস্ত একটি সূত্র জানিয়েছে বর্তমান এমপি খন্দকার আসাদুজ্জামান বয়সের কারণে আগামী নির্বাচনে অংশ নেবেন না। তার জায়গায় মনোনয়ন চাইবেন তারই ছেলে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ নেতা খন্দকার মশিউজ্জামান রোমেল। তাছাড়া জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খন্দকার আশরাফুজ্জামান স্মৃতি, কন্টিনেন্টাল কুরিয়ার সার্ভিসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আওয়ামী লীগ নেতা মো. হাসমত আলী, গোপালপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. ইউনুছ ইসলাম তালুকদার ঠাণ্ডু, গোপালপুর থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট শামছুল আলম মনোনয়ন প্রত্যাশী।

১৯৯১ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত এ আসনে নির্বাচন করেছেন কেন্দ্রীয় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুস সালাম পিন্টু। ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় কারাগারে থাকায় গত নির্বাচনে মনোনয়ন দেওয়া হয় সাবেক ছাত্রদল সভাপতি, বর্তমান বিএনপির সহ-ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকুকে। জানা গেছে, আগামী নির্বাচনে আবদুস সালাম পিন্টু অংশগ্রহণের সুযোগ পেলে তিনিই মনোনয়ন পাবেন। টুকুকে অন্যত্র মনোনয়ন দেওয়া হবে। যদি সালাম পিন্টু নির্বাচন করতে না পারেন তাহলে টুকু বিএনপির প্রার্থী নিশ্চিত।

জাকের পার্টির এনামুল হক মন্জু প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। টাঙ্গাইল-৩ (ঘাটাইল) : এ আসনে বিএনপির প্রার্থী লুৎফর রহমান খান আজাদ পরপর চারবার এমপি নির্বাচিত হয়েছেন। গত সংসদ নির্বাচনে ঢাকার ল্যাব এইড কার্ডিয়াক হসপিটালের কার্ডিওলজি বিভাগের চিফ কনসালটেন্ট ডা. মতিউর রহমান আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়ে আসনটি পুনরুদ্ধার করেন। তিনি মারা যাওয়ার পর এ আসনে উপ-নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী শহিদুল ইসলাম লেবুকে হারিয়ে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী আমানুর রহমান খান রানা এমপি নির্বাচিত হন। আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে আমানুর রহমান খান রানা মনোনয়ন পাবেন বলে জানান তার কর্মীরা।

বিএনপি থেকে চারবারের নির্বাচিত এমপি দুবারের প্রতিমন্ত্রী লুৎফর রহমান খান আজাদ। জাতীয় পাটি থেকে সৈয়দ আবু ইউসুফ আবদুল্লাহ তুহিন। টাঙ্গাইল-৪ (কালিহাতী) আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন পাচ্ছেন প্রেসিডিয়াম সদস্য বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী আবদুল লতিফ সিদ্দিকী। এ ছাড়াও নাম শোনা যাচ্ছে আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির উপ-সম্পাদক ও জনতা ব্যাংকের পরিচালক আবু নাসের। বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য বিশিষ্ট ব্যবসায়ী লুৎফর রহমান মতিন, বিএনপি নেতা ইঞ্জিনিয়ার আবদুল হালিম মিয়া, সাবেক ছাত্রনেতা বেনজীর আহমেদ টিটু ও শহিদুল হক চৌধুরী।

জাতীয় পার্টি থেকে সৈয়দ মোস্তাক হোসেন রতন। সাবেক মন্ত্রী শাহজাহান সিরাজও প্রার্থী হলে হিসাব-নিকাশ উল্টে যেতে পারে। টাঙ্গাইল-৫ (টাঙ্গাইল সদর) : আওয়ামী লীগ এ আসনটি পুনরুদ্ধারে মরিয়া হয়ে উঠেছে। অপরদিকে বিএনপিও বিজয়ের ধারাবাহিকতা রক্ষা করতে তৎপর। জেলার গুরুত্বপূর্ণ এই আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে নাম শোনা যাচ্ছে কেন্দ্রীয় যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাড. মামুনুর রশিদ মামুন ও জেলা আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ব্যবসায়ী মো. ছানোয়ার হোসেন।

আওয়ামী লীগের এই দুই প্রার্থীর প্রচারণা থাকলেও তৃতীয় কোনো শক্তিশালী প্রার্থীও মনোনয়ন লাভ করতে পারে বলে আভাস পাওয়া গেছে। বিএনপি থেকে মেজর জেনারেল (অব.) মাহমুদুল হাসান এমপি মনোনয়ন পাচ্ছেন এটা নিশ্চিত। এ ছাড়াও জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি ছাইদুল হক ছাদু প্রচারণা চালাচ্ছেন। কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের প্রার্থী হিসেবে মুরাদ সিদ্দিকীর নাম শোনা গেলেও এখনো নিশ্চিত হয়নি তিনি কোন দল থেকে নির্বাচন করবেন। এ ছাড়া সৈয়দ খালেক মোস্তফা নিজেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে গত ১৫ বছর ধরে প্রচারণার মাঠে রয়েছেন।

তবে মুরাদ সিদ্দিকীর আলাদা জনপ্রিয়তা রয়েছে। টাঙ্গাইল-৬ (নাগরপুর-দেলদুয়ার) : দলীয় কোন্দলের কারণে বিগত নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আহসানুল ইসলাম টিটু পরাজিত হন। আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বঞ্চিত খন্দকার আবদুল বাতেন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে বিপুল ভোটে বিজয়ী হন। এ আসনে আওয়ামী লীগ থেকে বর্তমান সংসদ সদস্য মুক্তিযোদ্ধা আবদুল বাতেন, জেলা আওয়ামী লীগের বাণিজ্য ও শিল্প বিষয়ক সম্পাদক আহসানুল ইসলাম টিটু, জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত মহিলা আসনের এমপি অভিনেত্রী অ্যাড. তারানা হালিম, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপ-কমিটির সহ-সম্পাদক তারেক শামস হিমু, বঙ্গবন্ধু আইন ছাত্র পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি শহিদুল ইসলাম টিটু। বিএনপি থেকে সাবেক পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী অ্যাড. গৌতম চক্রবর্তী, জেলা বিএনপির উপদেষ্টা শিল্পপতি হাবিবুর রহমান হাবিব, শ্রমিক দলের কেন্দ ীয় নেতা মো. শাহনুর ইসলাম, জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি রবিউল আওয়াল লাবলু, জেলা বিএনপির অর্থ বিষয়ক সম্পাদক আলমগীর হোসেন, জেলা সদস্য আহমেদ স্বপন, জেলা জিয়া শিশু কিশোর পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক আবু ইউসুফ, কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম-আহ্বায়ক অ্যাড. ইকবাল হোসেন খান, জাসাস কেন্দ্রীয় কমিটির অর্থ সম্পাদক শরীফুল ইসলাম স্বপন।

জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মামুনুর রহিম সুমন, বিকল্প ধারা কেন্দ্রীয় কমিটির মঞ্জুর রাশেদের নাম শোনা যাচ্ছে। টাঙ্গাইল-৭ (মির্জাপুর) : এ আসনে বড় দুই দলের অনেক সম্ভাব্য প্রার্থী মাঠে নেমেছেন। যাদের নাম শোনা যাচ্ছে- আওয়ামী লীগ থেকে বর্তমান এমপি আলহাজ একাব্বর হোসেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মীর শরীফ মাহমুদ, উপজেলা চেয়ারম্যান মীর এনায়েত হোসেন মন্টু। বিএনপি থেকে সাবেক এমপি আবুল কালাম আজাদ সিদ্দিকী, জেলা বিএনপির সহসভাপতি সাবেক ছাত্রনেতা সাঈদ সোহরাব, জিয়া শিশু কিশোর সংগঠনের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি ফিরোজ হায়দার, উপজেলা বিএনপির সহ-সভাপতি শিল্পপতি একে এম আজাদ স্বাধীন, উপজেলা বিএনপির সহ-সভাপতি অ্যাড. আবদুর রৌফ, পৌর বিএনপির সভাপতি হযরত আলী মিয়া। জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় যুগ্ম-মহাসচিব জহিরুল ইসলাম জহির।

টাঙ্গাইল-৮ (সখিপুর-বাসাইল) : মুক্তিযুদ্ধের সময় সখিপুর ছিল কাদেরিয়া বাহিনীর সদর দফতর। এ আসন থেকে দুবার এমপি নির্বাচিত হয়েছেন কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর আবদুল কাদের সিদ্দিকী বীরউত্তম। গত নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী কৃষিবিদ শওকত মোমেন শাজাহানের কাছে পরাজিত হন কাদের সিদ্দিকী। তার সমর্থকরা আসনটি পুনরুদ্ধারে একাট্টা হয়ে কাজ করছেন। এ ছাড়া বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক জিএম আবদুল মালেক মিয়া আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে ইতোমধ্যেই ভোটারদের মাঝে ব্যাপক সাড়া জাগিয়েছেন।

এ আসন থেকে অন্য মনোনয়ন প্রত্যাশীরা হলেন- আওয়ামী লীগ থেকে বর্তমান এমপি কৃষিবিদ শওকত মোমেন শাহজাহান, সাদত বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের দুবারের নির্বাচিত সাবেক ভিপি ও জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সম্পাদক অ্যাড. জোয়াহেরুল ইসলাম, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ইঞ্জিনিয়ার আতাউস মাহমুদ, বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক উপদেষ্টা অ্যাড. আহমেদ আযম খান, বিএনপি নেতা কামরুজ্জামান খান, শেখ মোস্তাক হাবিব, সালাহউদ্দিন আলমগীর ও কৃষিবিদ শেখ মোহাম্মদ শফি শাওন, স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি জিয়াউল হক শাহীন। জাতীয় পার্টি থেকে কাজী আশরাফ সিদ্দিকী।

 

 

সোর্স: http://www.bd-pratidin.com/     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।