২০০৬ সালের এপ্রিল। খান সাহেব ওসমান আলী স্টেডিয়ামে সর্বশেষ অনুষ্ঠিত একদিনের আন্তর্জাতিক ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে বাংলাদেশ দলে ছিলেন মাশরাফি বিন মুর্তজা এবং আবদুর রাজ্জাক। দীর্ঘ সময়ের ব্যবধানে বাংলাদেশ দল থেকে অনেকেই চলে গেছেন। তবে নতুন করে এই মাঠে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের যাত্রায় থাকছেন মাশরাফি-রাজ্জাক। বাংলাদেশ-নিউজিল্যান্ড ম্যাচ দিয়ে নতুন করেই তো অভিষেক হচ্ছে খান সাহেব ওসমান আলী স্টেডিয়ামের!
তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে প্রথম দুই ম্যাচ জিতে সিরিজ নিজেদের করে নিয়েছে বাংলাদেশ।
তৃতীয় ম্যাচটা কেবলই আনুষ্ঠানিকতার। বাংলাদেশ অবশ্য কোনো ম্যাচকেই আনুষ্ঠানিকতার বলে ভাবছে না। সুযোগ এসেছে নিউজিল্যান্ডকে আরও একবার হোয়াইটওয়াশ করার। সেই সুযোগটাই কাজে লাগাতে চায় টাইগাররা। গতকাল সংবাদ সম্মেলনে মাশরাফি বিন মুর্তজা এমন কথাই জানালেন।
'আমাদের বিশ্রামের কোনো সুযোগ নেই। প্রথম দুই ম্যাচ যেমন আমরা জয়ের জন্য খেলেছি, এটাও সেভাবেই খেলব। ম্যাচ বাই ম্যাচ জিততে চেয়েছিলাম। আর তিনটা ম্যাচ জিতলে তো প্রতিপক্ষ হোয়াইটওয়াশ হবেই। ' ২০১০ সালে নিউজিল্যান্ডকে ৪-০ ব্যবধানে হোয়াইটওয়াশ করেছিল বাংলাদেশ।
সেবার অধিনায়ক হিসেবে সিরিজটা শুরু করেছিলেন মাশরাফি বিন মুর্তজা। এরপরই বদলে গেল সবকিছু। ইনজুরি আক্রান্ত হয়ে তিনি সিরিজ থেকে ছিটকে পড়লেন। এই ইনজুরি তাকে বেশ ভুগিয়েছে। তবে মাশরাফি ফিরেছেন স্বরূপে।
গতকাল সংবাদ সম্মেলনে শোনালেন ফিরে আসার সেই গল্প। 'শ্রীলঙ্কা ও জিম্বাবুয়ে সিরিজটা খেলতে পারিনি। চার-পাঁচ মাসের চেষ্টায়ও কোনো কাজ হয়নি। এরপর ভিন্ন পরিকল্পনা নিয়ে অগ্রসর হই। স্টুয়ার্ট কার্পিনেন আমাকে এই পরিকল্পনায় অনেক সহায়তা করেছেন।
এবারের উদ্দেশ্য ছিল প্রতিটি জায়গায় উন্নতি করার। এই পরিকল্পনাই আমাকে সাহায্য করেছে। ' মাশরাফির এই দুর্দান্ত ফেরাটা ছিল সময়েরই দাবি। গত ম্যাচে তার ৩ উইকেট শিকার ছিল জয়ের অন্যতম উপকরণ।
খান সাহেব ওসমান আলী স্টেডিয়ামের কথা উঠলে মাশরাফিকে টেনে আনতেই হবে।
এই মাঠে মাত্র চারটি ওয়ানডে ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়েছে। এর মধ্যেই ৮ উইকেট শিকার করেছেন মাশরাফি। সর্বোচ্চ উইকেট শিকারির তকমাটা মোহাম্মদ রফিকের সঙ্গে ভাগাভাগি করছেন দেশ সেরা এই পেসার। সেই স্টেডিয়ামে পুরনো মাশরাফিকে দেখার অদম্য ইচ্ছা তো দর্শকদের জাগতেই পারে। পরিবর্তনটা তো মাশরাফিই দেখিয়ে দিলেন গত ম্যাচে! পরিবর্তন কেবল মাশরাফিরই নয়, হচ্ছে পুরো দলেরই।
গতকাল মাশরাফি বললেন, 'একটা সময় আমরা ২০০ রান করার জন্য খেলতাম। এরপর লক্ষ্য দাঁড়ালো জয়।
এখন আমরা সিরিজ জয়ের চিন্তা নিয়েই খেলি। ক্রিকেটে এমন পরিবর্তন হয়ই। এটা সময়েরই দাবি।
' তবে প্রথম দুটি ম্যাচ জয়ের পরও সন্তুষ্টি প্রকাশ করতে পারছেন না মাশরাফি। 'প্রথম দুই ম্যাচে আমরা অনেক ভুল করেছি। ওরা (নিউজিল্যান্ড) আমাদের চেয়ে বেশি ভুল করেছে। আর এ কারণেই আমরা জিতেছি। ' মাশরাফির দৃষ্টিতে প্রথম দুই ম্যাচে বাংলাদেশ বোলিং ও ফিল্ডিং ভালো করলেও ব্যাটিং ভালো করতে পারেনি।
প্রথম দুই ম্যাচে বলতে গেলে পেসাররাই বাংলাদেশকে জয় এনে দিয়েছে। প্রথম ম্যাচে তো জয়ের নায়ক রুবেল। দ্বিতীয় ম্যাচে মাশরাফির তিনটি উইকেট ছিল খুবই গুরুত্বপূর্ণ। দ্বিতীয় ম্যাচে অবশ্য স্পিনাররাও ভালো করেছেন। সোহাগ গাজী, রাজ্জাক, মুমিনুলরা ছিলেন সফল।
ফতুল্লার উইকেট কেমন হবে! 'উইকেট টার্নিং হলে স্পিনাররা সুবিধা পাবে। তবে উইকেট যেমনই হোক, আমাদের ভালো খেলাটাই হবে গুরুত্বপূর্ণ। ' মাশরাফি জানালেন, বাংলাদেশ ভালো খেলার লক্ষ্য নিয়েই মাঠে নামবে।
বাংলাদেশ ইতিহাসের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে আছে। ২০১০ সালের অক্টোবরে এই ইতিহাসের জন্ম দিয়েছিল টাইগাররা।
নিউজিল্যান্ডের মতো ক্রিকেট শক্তিকে উপহার দিয়েছিল ৪-০ ব্যবধানে হোয়াইটওয়াশের লজ্জা। নারায়ণগঞ্জের দর্শকরা অনেক লড়াইয়ের মাধ্যমে যে টিকিট হাসিল করেছে, তা সার্থক হবে নিউজিল্যান্ডকে আরও একবার বাংলাওয়াশের লজ্জা উপহার দিতে পারলেই! মাশরাফি জানালেন, এই প্রস্তুতি নিয়েই মাঠে নামবে বাংলাদেশ।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।