আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

অ্যাপোক্যালিপ্স নাও (১৯৭৯) : কপোলার সাইকোম্যাজিক নাকি লৌকিক ম্যাডনেস !

জাস্ট প্লেয়িং এ রোল হেয়ার, অন বিহ্যাফ অফ বোকামন। নাথিংস রিয়্যাল, অল আর ভার্চুয়াল। ।
Movie : Apocalypse Now (Redux) Directed by: Francis Ford Coppola Running time: 202 minutes Release date(s): August 15, 1979 & 2001 (Redux) PG : X অনূদিত পোস্ট নহে, একটি মৌলিক মুভি রিভিউ পোস্ট । পোস্টের শেষভাগে ভারী স্পয়লার রয়েছে ।

মুভিটি দেখে না থাকলে, অংশটি পাঠ করা থেকে বিরত থাকাই শ্রেয় । =================================================== ইরাক যুদ্ধের সময় বিশিষ্ট মার্কিন ব্যবসা-সমঝদার পল ফ্যারেল বলেছিলেন- ‘আমেরিকার অর্থনীতি হলো যুদ্ধের অর্থনীতি। শিল্প অর্থনীতি নয় ! কৃষি অর্থনীতি নয় ! সেবার অর্থনীতি নয় ! এমনকি ভোক্তার অর্থনীতিও নয় ! আসলে আমাদের মনের গভীরে যুদ্ধের প্রতি ভালোবাসা রয়েছে। আমরা যুদ্ধ চাই। যুদ্ধ দরকার।

যুদ্ধ উপভোগ করি। যুদ্ধে সমৃদ্ধ হই। যুদ্ধ আমাদের জিনে। আমাদের ডিএনএতে। যুদ্ধ আমাদের অর্থনীতিকে আন্দোলিত করে।

আমাদের উদ্যোক্তাদের অনুপ্রাণিত করে। আমেরিকানদের চিত্তকে রোমাঞ্চিত করে। এটা স্বীকার করো। যুদ্ধের সঙ্গে আমাদের ভালোবাসার সম্পর্ক। ’ জীবন মানেই যুদ্ধ, আমেরিকান সৈনিক মানেই যুদ্ধবাজের জীবন ! কোন মনিষী বলেন’নি ! বলছেন বোকামন; হা হা … গত দেড় শ’বছরে আমেরিকা বিভিন্ন যুদ্ধে জড়িয়েছে ।

তবে অধিকাংশ যুদ্ধের পরিণতি যেন রবীন্দ্রনাথের ছোট গল্পের মতোই 'শেষ হইয়াও হইলো না শেষ' । ৩.৭৯ মিলিয়ন বর্গমাইল আয়তনের দেশটি যে যুদ্ধনীতির উপর ভর করে মহাশক্তিধর রাষ্ট্র হিসেবে পৃথিবীর বুকে মাথা উঁচু করে দাড়িয়ে আছে । হয়তো, মহাশক্তি নামক গডফাদার চরিত্রটিকে টিকিয়ে রাখতেই প্রয়োজনে অপ্রয়োজনে যুদ্ধলীলায় অসৎ মালীর চাকরিখানা, দেশটিকে ধরে রাখতে হয়েছে/হচ্ছে । সর্বকালের অন্যতম সেরা উপন্যাস "দ্য গডফাদার" পড়ে অনেক আগেই বুঝেছিলুম গডফাদারকে কেনো রক্তের সাগরে প্রমোদতরীর ব্যবসা করতে হয় । আমেরিকান লেখক ম্যারিও জিয়ানলুইজি পুজো-র উপন্যাসটি পরবর্তীতে চলচ্চিত্রে রূপ দেওয়া হয় ।

সর্বশ্রেষ্ঠ মুভির তালিকার প্রথম সারির শীর্ষ স্থানে থাকা "দ্য গডফাদার" -এর সাথে আমেরিকার যুদ্ধ নীতির কি মিল রয়েছে তা নিয়ে আজ লিখছি না । লিখছি মুভিটির পরিচালক ফ্রান্সিস ফোর্ড কপোলা-র আরেকটি অনবদ্য নির্মাণ নিয়ে; অ্যাপোক্যালিপ্স নাও সিনেমার তীর্থক্ষেত্র হলিউডের ইতিহাস পাতায় সোনালী অক্ষরে যেসব মুভি-পরিচালক-অভিনেতাদের নাম লেখা আছে ; এমনই একটি সিনেমা অ্যাপোক্যালিপ্স নাও ভিয়েতনাম যুদ্ধ-প্রেক্ষাপটে, ভিত্তি করে নির্মিত মুভিগুলোর মধ্যে হাইবাজেট এবং অত্যন্ত উঁচুমানের সিনেমার কথা স্মরণ করলে অ্যাপোক্যালিপ্স নাও এর নাম আসবে-ই । তবে মুভিতে আপনি ভিয়েতনামের রক্তাক্ত শরীরের চিত্রসজ্জা দেখবেন ঠিকই ! কিন্তু দেহের অভ্যন্তরে হৃৎপিন্ডের যে রক্তক্ষরণ চলছে তা নিশ্চিতভাবেই আমেরিকান সৈনিকদের । হলিউড একটা সময় পর্যন্ত অন্তত মার্কিন সরকারের রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত ছিলো, বিশ্বাস করতে কষ্ট হবেনা যদি মুভিটি আপনি দেখে থাকেন । ভিয়েতনাম যুদ্ধ(১৯৫৯-৭৫): কমিউনিস্ট ও জাতীয়তাবাদী; উত্তর ভিয়েতনাম ও দক্ষিণ ভিয়েতনামে বিভক্ত হয়ে যায়।

১৯৫৭ সালে উত্তর ভিয়েতনামের কমিউনিস্ট গেরিলারা National Liberation Front for South Vietnam-র (ভিয়েতকং) অধীনে সংগঠিত হয়ে দক্ষিণ ভিয়েতনামের বিরুদ্ধে যুদ্ধে লিপ্ত হয়। কমিউনিস্টদের বিরুদ্ধে, দক্ষিণ ভিয়েতনামের পক্ষ সরাসরি সমর্থন করে যুক্তরাষ্ট্র । ভিয়েত কং ‘রা উত্তর ভিয়েতনামের সঙ্গে দক্ষিণ ভিয়েতনামকে একীভূত করে একটি কমিউনিস্ট রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে চাচ্ছিলেন। কমিউনিস্টদের অগ্রযাত্রা রুখে দিতে যুক্তরাষ্ট্র তার সর্বশক্তি নিয়োগ করে । যার মূল হোতা প্রেসিডেন্ট কেনেডি এবং ‘ডামিনো’ তত্ত্ব প্রয়োগের দায়িত্বে ছিলেন জনসনের দুর্ধর্ষ প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রবার্ট ম্যাকনামারা; তৎকালীন মার্কিন সরকার, জনগণ এবং কংগ্রেসকে মিথ্যা/ভুল তথ্য দিয়ে, তারা ভিয়েতনামের যুদ্ধ শুরু করেছিলেন ।

১৯৭১ সালে, জাতীয় নিরাপত্তা বিশ্লেষক ড্যানিয়েল এলসবার্গ ও তাঁর সহকর্মী অ্যান্টরি রাসো নিউইয়র্ক টাইমস ও অন্য কয়েকটি মিডিয়া প্রতিষ্ঠানে গোপন সামরিক নথিপত্র ফাঁস করেন। ওই নথিপত্র পেন্টাগন পেপারস নামে পরিচিত । পেন্টাগন পেপারস তাদের এইসব কুকীর্তির প্রমাণ । ২০০৩ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত “পেন্টাগন পেপারস” মুভিতে যা বিশদভাবে তুলে ধরা হয়েছে । ভিয়েতনামে মার্কিনী বর্বর নৃশংস হত্যাযজ্ঞ, বিশ্ববিবেকে প্রচন্ডভাবে ধাক্কা দিয়েছিল।

বিশ্বব্যাপী মার্কিন বিরোধী বিক্ষোভ-নিন্দা ছড়িয়ে পড়ে । মার্কিন সরকার জনমত হারায় । ১৯৬৭ সালে নাগরিক অধিকার আন্দোলনের নেতা ক্ষোদ মার্টিন লুথার কিং প্রকাশ্যে ভিয়েতনামে যুদ্ধ বন্ধ করার দাবি জানান। ৬১ থেকে ৭১ দীর্ঘ দশ বছরে মার্কিন সেনাবাহিনী সবুজ ভিয়েতনামকে মাত্রাহীন মৃত্যুপুরীতে পরিণত করে । মাই লাই গণহত্যা, নাপাম বোমা, Herbicide Orange (HO) Ges Agent LNX /এজেন্ট অরেঞ্জ, ভিয়েতনামের উপরে আমেরিকার নিক্ষিপ্ত অগণিত অবিস্ফোরিত বোমা আজও দেশটিকে বিকলাঙ্গ করে রেখেছে ।

ভিয়েতনামের জমিনে বীভৎস চিত্র এঁকেও শেষ পর্যন্ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র জয়ী হতে পারেনি । অবশেষে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সৈন্য প্রত্যাহার এবং দক্ষিণ ভিয়েতনামের আত্মসমর্পণের মধ্য দিয়ে ভিয়েতনাম যুদ্ধের অবসান হয় । এই যুদ্ধে প্রায় ৩২ লক্ষ ভিয়েতনামি মারা যান, সাথে আরও প্রায় ১০ থেকে ১৫ লক্ষ লাও ও ক্যাম্বোডীয় জাতির লোক মারা যান । মার্কিনীদের প্রায় ৫৮ হাজার সেনা নিহত হন । ১৯৭২ সালের ৮ই জুন।

এপির সাংবাদিক নিক অট ভিয়েতনাম যুদ্ধের খবর সংগ্রহ করতে ট্রাং ব্যাং গ্রামে উপস্থিত হয়েছিলেন। তিনি সেদিন ক্যামেরাবন্দী করেছিলেন বিশ্ব মানবতাকে নগ্ন করে দেয়া কিম ফুকের বিবস্ত্র ছবিটি । নয় বছরের বালিকা কিম ফুকের শরীর নাপাম বোমার আঘাতে ঝলসে গেছে । ফুক ছুটছে নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে, মুখে তীব্র যন্ত্রণার ভাষা নং কুয়া, নং কুয়া (পুড়ে যাচ্ছে… পুড়ে যাচ্ছে…) ফ্রান্সিস ফোর্ড কপোলা, গডফাদার সিনেমার মাধ্যেমে পরিচালক এবং প্রযোজক হিসেবে সবার বিশেষ নজর ইতিমধ্যে কেড়ে নিয়ে নিয়েছেন । লাভজনক ব্যবসা, মুভি ক্রিটিকদের প্রশংসা সব মিলিয়ে বেশ ভালো সময় যাচ্ছিলো কপোলার ।

ক্যারিয়ারের প্রো-টাইম যাকে বলে আরকি । ফিল্মমেকার এবং তার সহযোগী বন্ধু জন মিলেস হাজির হলেন ভিয়েতনাম যুদ্ধ নিয়ে একখানা মুভির কনসেপ্ট সাথে করে । জোসেফ কনরাড’র উপন্যাস ‘হার্ট অফ ডার্কনেস’ এর প্রটোগনিষ্ট কুর্টজ চরিত্রটি কে ভিত্তি করে মিলেস লেখা শুরু করলেন মুভির স্ক্রিপ্ট । বিংশ শতাব্দীর শ্রেষ্ঠ একশোটি ছোট উপন্যাসের একটি ‘হার্ট অফ ডার্কনেস’ উপনিবেশবাদ, স্বাজাতিকতা, সাম্রাজ্যবাদ ইত্যাদি, যা মানব সভ্যতাকে অসভ্য করে তুলছিলো এমনই থিম নিয়ে সম্পূর্ণ ভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে লেখা একটি অসাধারণ সৃষ্টি । কুবরিকের স্পেস ওডিসি, হ্যাজোগের রথ অফ গড মুভিদ্বয়েও উপন্যাসটির প্রভাব রয়েছে ।

স্ক্রিপ্ট তৈরিতে কপোলা নিজেও হাত লাগালেন । কুর্টজ চরিত্রটির আবহ নির্মাণে কপোলা চেঙ্গিস খানের উপর লেখা বিভিন্ন বইও পড়েন । মূলত অনুসন্ধিৎসু কপোলা, কুর্টজ চরিত্রটি সেলুলয়েডের পাতায় পোট্রেইড করতে কোথাও কোন কমতি রাখতে চাননি । প্রচুর পারিশ্রমিকের বিনিময়ে তিন কাস্ট করেন ফিল্মি অভিনয় জগতের গ্রেটেস্ট মার্লোন ব্র্যান্ডোকে । মুল চরিত্রে(উইলার্ড)অভিনয় করার জন্য অ্যাল পাচিনোকে অফার করা হয়েছিলো ।

কিন্তু শেষ পর্যন্ত মার্টিন শিন- উইলার্ড চরিত্রটির রঙ বদলে দেন । মুভিতে উল্লেখযোগ্য আরো অভিনয় করেন গডফাদারের আইনজীবী ক্যারেক্টার টম হ্যাগেন(রবার্ট ডুভাল)এবং ডেনিশ হোপার (ফটোগ্রাফার) [আমার এক হলিউড বন্ধুর বয়ানে বহুবার মার্লোন ব্রান্ডোর অভিনয় দক্ষতার পরিচয় দেখেছি । এবং তার সাথে সহমত প্রকাশে আমিও কখনো কার্পণ্য করিনে । ] মুভির অধিকাংশ শুটিং করা হয় ফিলিপাইন্সের দুর্গম অঞ্চলে । প্রায় চার বছরের অক্লান্ত পরিশ্রম, বিশাল অর্থলগ্নি এবং দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় মাথায় করে কপোলো বানিয়ে ফেলেন ইতিহাসের অন্যতম গোল্ডেন ক্লাস সিনেমা অ্যাপোক্যালিপ্স নাও সিনেমাটোগ্রাফি নিয়ে যারা কাজ করছেন অথবা ক্যামেরার পিছনে যে চোখ খুঁজে ফিরে আর্ট অফ ফটোগ্রামার তাদের জন্য অ্যাপোক্যালিপ্স নাও মুভিটি বিশেষ কিছু ।

পয়েন্ট অফ ভিউ/ফোকাস, ডেপথ অফ ফিল্ডের অসাধারণ কাজ চোখে পড়ার মতো ! মুভিতে ফুল-ফ্রন্টাল অয়ার/ব্যাটল সিন তেমন একটা নেই, কারণ মুভিটি মূলত আপনাকে দুপক্ষের যুদ্ধ ময়দান দেখাবে না । দেখাবে মনস্তাত্ত্বিক/মনোশারীরিক লড়াই যার অর্ন্তদ্বন্দের প্রতিটি ছত্রে একজন যোদ্ধা চেষ্টা করে যাচ্ছেন বিজয়ী হতে। কিন্তু নিজেই বুঝে পাচ্ছেন না কেনো এ লড়াই ! বিজয়ীবেশে আয়নার সামনে দাড়িয়ে যোদ্ধা দেখতে পান, হেরে যাওয়া বিমর্ষ সৈনিকের আত্মগ্লানি ! সিকোয়েন্স বাই সিকোয়েন্স কপোলা এবং ভিতোরারিও স্তোরারো(ডিঅপি) ফুটিয়ে তুলতে চেয়েছেন তারই প্রতিচ্ছবি । উইলার্ড (মুল চরিত্র) এর প্রতিটি শ্বাস-প্রশ্বাস, কলা-কৌশল, দর্শন, আচরণ ও প্রতিক্রিয়া সব মিলে এক সুস্থির মুভি সেন্স তৈরি করে দর্শকের দর্শনেন্দ্রিয়তে । অজানা গন্তব্যে ছুটে চলা উইলার্ডের নিঃসঙ্গতা দর্শককেও টেনে নিয়ে যাবে হিমভয় ধুকধুকানির উৎসমুখে ।

সিনেমাটির জোরালো ডার্ক টোন, ব্ল্যাক হিউমার মিশেল কাহিনীচিত্র পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে উত্তোলিত করতে লাইটিং অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ছিলো । আর ডার্ক মুভিতে আলো-ছায়ার মঞ্চায়নের সূত্রটি, আমার মতো ডার্কমুভি প্রেমীরা ভালো করেই জানেন । আলো-আধারির খেলা, ধোয়াশে সংলাপ, ঘোরগ্রস্ত দৃশ্যপট ডার্ক মুভির রিদম টিউনিং করার কার্যকরী অস্ত্র । কুবরিক, এইসব কাজ সবচাইতে ভালো করতেন । তবে অ্যাপোক্যালিপ্স নাও দেখার পরে, সে সারিতে কপোলার নামটিও যোগ করতে কেউ দ্বিধাবোধ করবেন না;বোধ করি ।

এছাড়াও নদীর মুখশ্রীজুড়ে রহস্যময় কুহেলীজোট, বিভিন্ন ফ্রেমে অন্তঃপ্রবিষ্ট গাঢ় রঙের ইনফেচ্যুয়েশন এবং বিশেষ করে কুর্টজকে(মার্লোন ব্রান্ডো) যেভাবে দর্শকদের সামনে আনা হয় তা সত্যিই অনন্য এক দৃশ্যায়ন ! (বেস্ট টেক) মুভির ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক স্কোরে ছিলেন কপোলা এবং তার পিতা কার্মাইন কপোলা । কার্মাইন কপোলা গডফাদার মুভিতেও মিউজিকের কাজ করেছিলেন । শ্লথগতিতে চলা মুভিটিতে ভিন্ন মাত্রা এনে দিয়েছে রক এন্ড রোল টাইপ সাউন্ডট্র্যাক । যা দর্শকদের ব্রেনের কোষে উত্তেজনা সৃষ্টি করতে সহায়ক-ই ছিলো । সিনেমার সবচাইতে উপভোগ্য এবং কালারফুল চরিত্র লে.ক. কিলগোর যখন তার বাহিনী নিয়ে ভিয়েতকং বিচে হেলিকপ্টার থেকে গোলাবর্ষণ করতে থাকেন; সেই দৃশ্যটিতে ব্যবহার করা হয় ‘দ্যা রাইড অফ দ্যা ভেলকারিস’ অর্কেস্ট্রার বিলাসী সুর/অরাল কনডাকশ্যন এবং একেরপর এক বোমাবর্ষণ, নৃশংসতার গোলকধাঁধায় ফেলে দিবে দর্শককে ।

যেনো- ঘৃণার দহনে উন্মত্ত হও অথবা কানে আঙুল দিয়ে দেখে যাও বর্বরতার বৈভব। মুভির ডায়ালগ ফ্রেমিং প্রায় ৬০ শতাংশই আখ্যানধর্মী অথাৎ দৃশ্য/প্লট বর্ণনামূলক । লিখেছেন মাইকের হের । যিনি কুবরিকের সাথে ফুল মেটাল জ্যাকেটের কো-রাইটার এবং ভিয়েতনাম যুদ্ধ চলাকালীন সময়ে (১৯৬৭–১৯৬৯) একজন অয়ার করেসপন্ডেন্ট হিসেবেও কর্মরত ছিলেন । মূলত প্রতিটি কথা/ডায়ালগ ছিলো উইলার্ডের ব্যক্তিসত্তার অন্তর্দর্শনমূলক অভিব্যক্তি এবং অনবহিত ভাবনার জীবনাভিজ্ঞতা ।

চিত্রনাট্য, চিত্রগ্রহণ, সংগীত, সম্পাদনায় পরিপক্ব মুনশিয়ানার পরিচয় রেখে কপোলা সিনেমাজগতকে দিয়ে গেছেন আরেকটি সিনেমাটিক মাস্টারপিস অ্যাপোক্যালিপ্স নাও ! তবে সাধারণ দর্শক সিনেমাটি কতখানি রিড করতে পারবে তা নিয়ে কথা থেকেই যায় । অয়ার, হরর, সাইকোলজিক্যাল ড্রামা, মিস্টেরি ! মুভির যেনর্ নির্দিষ্ট করে বলাটাও মুশকিল । সিনেমার উপক্রমণিকা এবং উপসংহারের যোগসূত্র কোথায় অথবা সিনেমাটির ভাবানুবাদ কী হতে পারে ? দর্শকদের মনের কতখানি গভীরে প্রতীকী পরিচর্যা চালাতে সক্ষম হয়েছেন কপোলা । স্পয়লার এলার্ট ! ! ! “This is the end, beautiful friend… This is the end, my only friend, the end মুভির ঠিক শুরুতেই পরিসমাপ্তির কথা বলে সূক্ষ্ম একটা বার্তা দেওয়ার চেষ্টা । প্রথম যখন দেখি, বিষয়টি আমিও বুঝতে পারিনি ! পুরো মুভি একটি ফ্ল্যাশব্যাক অর্থাৎ পিছন ফিরে দেখা ।

হেলিকপ্টার উড়ে যাওয়ার শব্দ, সবুজ অরণ্য, ফুল অফ লাইফ আবার ভিয়েতনাম যুদ্ধের ধ্বংসবিবমিষা, বেসামাল-উদ্ভ্রান্ত, মৌতাতে নিমগ্ন যুদ্ধফেরত এক যোদ্ধার লণ্ডভণ্ড অবস্থা । হ্যালুসিনেটরী দৃশ্যকোলে শ্যাডোর বিরাটকায় প্রভাব । প্রায় প্রতিটি ফ্রেমে শ্যাডোর পতন মুভিটির কমন ট্রেনড ছিলো বলা যেতে পারে । উইলার্ডের স্মৃতিরা জট পাকিয়েছে আর ঘনীভূত হচ্ছে জবরজঙ্গতা । স্মৃতির জানালায় চেনা কোন মুখের ছায়ামানব অস্তিত্ব ।

যেন মৃত মানুষের সুসমঞ্জস অনুভূতি ! ইউএস আর্মি ইন্টেলিজেন্স, ব্যাটালিয়ন ৫০৫-র অধিনায়ক বেনজামিন উইলার্ড হোটেলরুমে মানসিকভাবে বিধ্বস্ত অবস্থায় পড়ে আছেন । সামগ্রিক পরিস্থিতি থেকে বাঁচতে তার সামনে একটাই পথ- যুদ্ধ ! Saigon. Shit! I'm still only in Saigon. Every time I think I'm gonna wake up back in the jungle. When I was home after my first tour, it was worse. I'd wake up and there'd be nothing. I hardly said a word to my wife, until I said 'yes' to a divorce. When I was here, I wanted to be there. When I was there, all I could think of was getting back into the jungle. I'm here a week now. I'm waiting for a mission - getting softer. Every minute I stay in this room, I get weaker. And every minute Charlie squats in the bush, he gets stronger. Each time I looked around, the walls moved in a little tighter. উইলার্ড পেয়ে-ও গেলেন একখানা মিশন । ইউএস আর্মির সবচাইতে (তৎকালীন) মেধাবী এবং যোগ্য একজন অফিসার কর্নেল ওয়াল্টার ই কুর্টজ কে খতম করতে হবে । যিনি ভিয়েতনামে যুদ্ধরত অবস্থায় নিরুদ্দেশ হয়ে যান । পরবর্তীতে উপজাতীয় কোন গোত্রের স্ব-নিয়োজিত ঈশ্বররূপে প্রতিষ্ঠা করেন নিজেকে এবং গড়ে তুলেন সন্ত্রাস/সশস্ত্রবাহিনী ।

এবং তার সকল কর্মকাণ্ড অনেকটাই ভিয়েতনাম যুদ্ধে আমেরিকার জন্য হুমকির কারণ ছিলো । মিলিটারি এছাছেনেষণ ভূমিকায় অবতীর্ণ উইলার্ডের কর্মপ্রক্রিয়া হবে Terminate with extreme prejudice. উইলার্ড, ছোট আকৃতির সামরিক জলযানে চেপে রওনা হলেন, সঙ্গী চারজন অপরিণত বয়সের সৈনিক । চায়না, মায়ানমার, লাওস, থাইল্যান্ড, ক্যাম্বোডিয়া এবং ভিয়েতনামের উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া দীর্ঘতম নদী মিকং (মুভিতে নদীটিকে নাং নামকরণ করা হয়েছিলো) এর কোন এক শেষপ্রান্তে প্রাচীন মন্দিরে কুর্টেজের আস্তানা/বাস করেন বলে সর্বশেষ গোয়েন্দা রিপোর্ট এবং কুর্টজ সম্পর্কিত যাবতীয় তথ্য উইলার্ডকে সরবরাহ করা হয় । যাত্রাপথের প্রারম্ভে উইলার্ডের সাথে পরিচয় হয় লে.ক. কিলগোরের । অদম্যচেতা এবং রসিক কর্নেল কিলগোর চরিত্রটিকে এককথায় তখনকার আমেরিকান সরকাররূপে দেখা যেতে পারে ।

দর্শকগণ, চরিত্রটির মাঝে একইসাথে মানবিক উদারতা এবং যুদ্ধবাজের নির্মমতা দিকটি সুস্পষ্টভাবেই দেখতে পারবেন । ধ্বংস-হত্যা করাও যে একটি শিল্প তা কিলগোরের উপর ব্রাইট ফোকাস করে কপোলা হয়তো মনে করিয়ে দিতে চাইছিলেন ভারী অস্ত্র-শস্ত্র, অর্থের ঝনঝনানি, এবং প্রযুক্তির নিত্যনতুন আবিষ্কারের কথা ! উইলার্ড, নাং নদী ধরে এগিয়ে চলছেন । কুর্টজের প্রাণঘাতী দূত, সরলরৈখিক ভ্রমণে ধীর-স্থিরভাবে ভেবে যাচ্ছেন কুর্টজ তার অতিশয় উজ্জ্বল ক্যারিয়ারে শেষদাগে এসে কেনো হঠকারী মোড় নিলেন । কী এমন হয়েছিলো কুর্টজের সাথে ! জেনারেল পদের সম্মুখ দাবিদার কুর্টজ কেনো নিজদেশ এবং বাহিনীর পক্ষ ত্যাগ করেছিলেন । উত্তর অজানা এবং যে জানেন তার সামনে উপস্থিতি হওয়া মাত্র, এক সেকেন্ডও সময় উইলার্ড ‘কথা বলার জন্য’ পাবেন কিনা তা নিয়েও ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে পড়েন তিনি ।

আমি আগেই বলে রেখেছি- পরিচালক কপোলা, উইলার্ডের ধমনীস্রোত থেকে শুরু করে দৃষ্টি ক্ষেপণ প্রায় প্রতিটি ব্যঞ্জনাদীপ্ত অভিব্যক্তি ট্রু কালারে উপস্থাপন করতে চেয়েছিলেন দর্শকদের সামনে; যেন দর্শকগণ উইলার্ড সত্তাটিকে উপলব্ধি করতে পারেন । নদীর দুপাশের ঘনজঙ্গল মানব মস্তিকের কুটিল অলিগলির মেটাফোর হিসেবে চিহ্নিত করা যেতে পারে । ফ্রেম টু ফ্রেম দর্শকের সরল দৃষ্টি হয়তো দেখে যাবে কূটনৈতিক গ্রাফ । তবে হিসেব-নিকেশে লজিক রাখাটা গুণী দর্শকের আদর্শ । ।

পেট্রোলবটের সর্বমোট পাঁচজন যোদ্ধার হাসফাঁস, যুদ্ধের ময়দানে আমেরিকার প্রতিটি সেনার অনিঃশেষ ক্লান্তির কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলবে – সাঁজ আকাশে ছড়িয়ে পড়া আবীর রঙে নাওয়া সেই ঘরেতে একলা বসে ডাকছে আমার মা । সেথায় যাব, ও ভাই, এবার আমায় ছাড় না । (রাখাল ছেলে : জসীমউদ্দিন) বাট দেয়ার ইজ নো ওয়ে ফর এক্সইট্ ! আনটিল ডেথ হেভ কাম i ভিয়েতনামে মার্কিন বাহিনী কতোটা উদ্ভ্রান্তের মতো সামরিক যুদ্ধ চালিয়েছিলো তার বোল্ড উপস্থাপনে কপোলা যেন এক কাঠি সরস থাকলেন । ক্যাম্বোডিয়ান বর্ডারের প্রবেশদ্বারে শেষ মার্কিন ঘাটিতে যখন উইলার্ড পৌঁছলেন; গানশট-মর্টারের মূর্হ মূ্র্হ শব্দে প্রকম্পিত পুরো আউটপোস্ট । সিনেমার এই অংশটির ব্ল্যাক হিউমার মার্কিন বাহিনীর অসহায়ত্ব তুলে ধরে ।

উইলার্ড হাতে পান নতুন ক্লাসিফা-ইড রিপোর্ট । জানতে পারেন, এর আগেও একজন অফিসারকে এছাছিয়াণ করার দায়িত্ব দেয়া হয়েছিলো । কিন্তু তিনি কুর্টজকে হত্যা না করে বরং তার অদ্ভুত ব্যক্তিত্বের প্রভাবে কুর্টজ রাজত্বের অনুসারী হয়ে যান । উইলার্ডের মৃত্যুযাত্রা অব্যাহত থাকে । ক্যাম্বোডিয়ার ফরাসি উপনিবেশে উইলার্ড সাক্ষাৎ পান ফ্রেঞ্চম্যান হূবার্ত দি মারিয়াসের ।

চরিত্রটির সংলাপে বেশ কিছু নির্মোহ হিস্টোরিক্যাল তথ্য উঠে আসে । যা ভিয়েতনাম যুদ্ধে আমেরিকার পরাজয় বরণের চিহ্নিত কারণ ছিলো । হূবার্ত দি মারিয়াস বলছেন – While you Americans, you are fighting for the biggest nothing in history. ডিনার টেবিলে উইলার্ড বদনে সোনালী সূর্যালোকের বিবর্ণ ঝরনা ইতিহাসের সবচাইতে বড় শিক্ষা, কেউ ইতিহাস থেকে শিক্ষা নেয় না ! – এই যা কবিতা লিখে ফেললাম । স্বভাবদোষ ! হা হা । পুরুষযোদ্ধা রূপের অনিন্দনীয় মহিমা হয়তো একজন নারীই বুঝতে পারেন ।

মারিয়াসের বাড়িতে ফ্রেঞ্চ বিধবার চোখে পড়েন উইলার্ড । বিধবার নীল আঁখি উইলার্ড চরিত্রটিকে বর্ণনা করা হচ্ছে এভাবে There are two of you. Don't you see? One that kills and one that loves. দীর্ঘযাত্রা শেষে উইলার্ড খুঁজে পেলেন কুর্টজের সেনা শিবির । বেশ প্রাচীন এক মন্দির সেটা । পুরো দৃশ্যপট উইলার্ডের ভাষায় – Everything I saw told me that Kurtz had gone insane. The place was full of bodies. North Vietnamese, Vietcong, Cambodians. If I was still alive, it was because he wanted me that way. মুভির প্রাইমটাইম অর্থাৎ ক্লাইম্যাক্স সিচুয়েশ্যন । কুর্টজের সামনে হাজির করা হলো তার যমদূত বেনজামিন উইলার্ডকে ! মাথানত অবস্থায় উইলার্ড দেখতে লাগলেন আলো-আধারীর খেলা ।

গাঢ় অন্ধকার থেকে ভারী গলার অস্ফুট আওয়াজ । প্রত্যয়দৃঢ় এবং শান্ত উচ্চারণে কুর্টজ জানতে চাইলেন তার আগমন সম্পর্কে । কুর্টজ নিজেও একজন প্রতাপশালী প্রাজ্ঞ কর্নেল ছিলেন । তাই বুঝতে তিনি দেরী করেন নি; উইলার্ডের আগমন তাকে হত্যা করার জন্যই । যেন প্রতীক্ষায় ছিলেন কুর্টজ, উইলার্ডের মত একজন সাহসী সৈনিকের অপেক্ষায় ।

শক্রময় জনপ্রান্তরে, উইলার্ড আগমনি কারণ পরোক্ষভাবে ব্যক্ত করলেন- ‘কুর্টজের আচরণ অস্বাভাবিক এবং নীতিবিরুদ্ধ ছিলো’ তাদের মধ্যকার সংলাপটি সিনেমার মেরুদণ্ড হিসেবে ধরা যেতে পারে । বরাবরের মতই মার্লোন ব্রান্ডোর অতিকায় দেহ এবং ফ্যাঁসফেঁসে কণ্ঠ কুর্টজ চরিত্রটিকে অন্যমাত্রা দিয়েছিলো । Kurtz: What did they tell you? Willard: They told me that you had gone totally insane and that your methods were unsound. (Kurtz clenches his fist.) Kurtz: Are my methods unsound? Willard: I don't see any method at all, sir. Kurtz: I expected someone like you. What did you expect? Are you an assassin? Willard: I'm a soldier. Kurtz: You're neither. You're an errand boy, sent by grocery clerks to collect the bill. মুভির প্রথম থেকে দর্শক ধারণা করছিলেন । কুর্টজ অত্যন্ত বর্বর, পৈশাচিক-রগচটা ভঙ্গিতে উপস্থিত হবেন পর্দার সামনে । কিন্তু তাদের সকল ধারনা ভুল হতে লাগলো, যখন কুর্টজ যুদ্ধের বহির্বাস্তবতাররূপ বর্ণনার পরিবর্তে অন্তর্বাস্তবতার ফিলোসফি নিয়ে উইলার্ডের উপর প্রভাববিস্তার করা শুরু করলেন ।

উন্মাদ কুর্টজের প্রতিটি বাক্যে উইলার্ড আবিষ্কার করতে থাকলেন নিদারুণ সত্যের দিগন্তরেখা । ড্রামাটিক দৃশ্যায়নে কপোলা সেলুলয়েড বন্দি করলেন আবেগের নিষ্পেষণ, ব্যক্তি-যন্ত্রণা আর হিংস্রতার মানবিক বোধ এবং মনস্তত্ত্বের বিচিত্র পরিচয় । মেটাফর, সিম্বল, অদৃশ্যমান বাস্তবতা, ফোরশ্যাডো এবং সুররিয়্যাল এলিমেন্ট ব্যবহার করে দর্শকের চিন্তাজগতে অদ্ভুত তরঙ্গের সৃষ্টি করতে, কপোলা অনেকটাই সার্থক হয়েছেন । সে সার্থকতা থেকেই প্রশ্নের উৎপত্তি- আমরা সবাই কী উন্মাদ নয় ? কেবল “সদ্বিবেচক” পোশাক পরে রঙ্গমঞ্চে অভিনয় করে যাচ্ছি; আমরা উন্নত হিউম্যানিটির বাহক ! উইলার্ড অনুধাবন করতে পেরেছিলেন । উন্মাদ’দের জগতে, উন্মাদ না হওয়াটাই শাস্তিযোগ্য অপরাধ ।

তাই তিনি কুর্টজের শেষ ইচ্ছা পূরণ করলেন । তাকে, উন্মাদ জগতের ভ্রম থেকে মুক্তি দেওয়ার ব্যবস্থা করলেন । যেতে যেতে কুর্টজ বিকর্ষণ করলেন- "Drop the Bomb - Exterminate Them All!' কারিব্যু বলিদান দৃশ্যটির মাধ্যমে ‘কুটর্জ হত্যাকাণ্ডটি’কে কপোলা হয়তো বলতে চাইছিলেন বলির পাঠা … হাহ হা, দেয়ার ইজ নো ওয়ে ফর এক্সইট্ ! আনটিল ডেথ হেভ কাম ! শেষ নিঃশ্বাসে মুখোশাবৃত কুর্টজ তখনো লালন করছিলেন যুদ্ধের শিল্পিত ফসলাবয়ব- "The horror! The horror!" সিনেমার পলে পলে হরর চিত্রটি, কপোলা কতটা দৃশ্যমথিত করতে পেরেছেন তা নিয়ে দোলাচল থাকতেই পারে । তবে কিম ফুকের বিবস্ত্র-নগ্ন ছবিটি `Horror’-এর সংজ্ঞা সুস্পষ্টভাবে ব্যক্ত করতে সমার্থক; আমি তাই মনে করি । ।

পোস্ট শেষ করছি, বোকামনের একখানা আপ্তবাক্য দিয়ে- মহাজগতে এলিয়েন খুঁজি, এলিয়েন কোথা পাই রে ! ধরিত্রীর বুকে মানুষ কোথায় ! সবদেখি মানুষের ছাই রে ! নং কুয়া, নং কুয়া ...। "The horror! The horror!" ক্যামেরার পিছনের একজন নগণ্য কারিগরের দৃষ্টিতে মুভিটি রেটিং করেছিলাম ৯/১০ সাধারণ দর্শক হিসেবে রেটিং করলুম ৭/১০ =================================================== Draft 15:36, Zurich
 

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১৬ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।