আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

জম্বি অ্যাপোক্যালিপ্স - যদি সত্যিই শহর হয়ে ওঠে পায়চারী করা মৃতের ভূমি

I realized it doesn't really matter whether I exist or not. মুভি ফ্যান মাত্রই জম্বি অ্যাপোক্যালিপ্স শব্দটি শুনে থাকবেন। প্রায় ষাটের দশকে শুরু হয়ে আসা এই জেনার আজও অসম্ভব রকমের জনপ্রিয়। বিশ্বাসই হয় না যে একই মূল ঘটনার উপর ভিত্তি করে অসংখ্য মুভি এবং কিছু টিভি শো নির্মিত হয়েছে এবং এর প্রত্যেকটিই কমবেশি জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। কোনো একটা কারণে অনেক মানুষের কাছেই জম্বি সিরিজের মুভিগুলো ভালো লাগে। আমার ভালো লাগার অন্যতম কারণ এটি এমন এক পৃথিবী দেখায় যা আজকের পৃথিবী থেকে সম্পূর্ণ আলাদা।

সায়েন্স ফিকশন মুভির মতো অতিমাত্রায় কাল্পনিকও নয় আবার প্রস্তুরযুগের মতো ক্ল্যাশ অফ দা টাইটানস টাইপের অতি পুরনো দৃশ্যপটও নয়। বরং, অনেকটা বাস্তবভিত্তিক একটা প্লট। অনেকেই বলবেন জম্বি বাস্তব হয় কি করে। খেয়ার করে দেখবেন, প্রায় প্রতিটা জম্বি সিরিজের মুভিতেই থাকে একটা বিশ্বাসযোগ্য লজিক। এক ধরনের ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ে দেশজুড়ে, যা মানুষের মস্তিষ্কে একটা বড় ধরনের পরিবর্তন আনে।

বলা হয় যে তারা মরে গিয়ে জীবিত হয়ে ওঠে, কিন্তু কয়েকটি ছবির ঘটনা অনুসারে তাদের মস্তিষ্ক শাট ডাউন হয়ে পড়ে কিছু সময়ের জন্য। তারপর তারা জেগে ওঠে। এবার তারা আর মানুষ থাকে না। হয়ে ওঠে নরখাদক। জম্বি মুভি বাস্তব হতে পারে এমন মনে হওয়ার অন্যতম কারণ হচ্ছে এতে রক্ত-মাংসে গড়া মানুষকেই নরখাদক হয়ে উঠতে দেখানো হয়।

এসব ছবিতে জম্বিদের কোনো সুপারন্যাচারাল পাওয়ার দেখানো হয় না। এদের শ্বদন্ত গড়ে ওঠে না বা এরা অদৃশ্য হয়ে যায় না। একটা সাধারণ মানুষের মস্তিষ্ক চরমভাবে বিকৃত হলে যা ঘটতে পারে, সে মানুষটা তার কেবল দাঁত দিয়ে যা করতে পারে, ঠিক তাই দেখানো হয় জম্বি মুভিগুলোতে। জম্বি সিরিজের চরম ফ্যান হওয়ার দ্বিতীয় কারণ হচ্ছে মুভির এনভায়রনমেন্ট। কল্পনা করুন এমন একটি পৃথিবীর কথা, যেখানে সব মানুষ মস্তিষ্ক বিকৃত হয়ে নরখাদকে পরিণত হয়েছে।

কোনো আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী বলতে কিছু নেই। নেই কোনো সংবাদপত্র বা টিভি চ্যানেল। কর্মব্যস্ততার নাম-গন্ধও নেই। অফিস-আদালত থেকে শুরু করে বাস স্টেশন, রেলস্টেশন ইত্যাদি সব জায়গা নীরব-নিস্তব্ধ। সবখানে কেবল ঘোরাফেরা করছে একদল নরখাদক।

এমন একটি পৃথিবীতে যদি আপনাকে রেখে আসা হয়, তাহলে আপনি যেই একাকীত্ব ও অসহায়ত্ব অনুভব করবেন, এসব জম্বি সিরিজগুলোতে ঠিক সেই জিনিসটাকেই অদ্ভূতভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়। সেই মুভি এই ঘটনাটি যত ভালো ফুটিয়ে তুলতে পারে, সেটি তত বেশি জনপ্রিয় হয়। এছাড়াও কিছু কিছু মুভি ও টিভি সিরিজ রয়েছে যেগুলোতে সাধারণ মানুষের জীবন কীভাবে হঠাৎ একদিন ঘুম থেকে উঠে জম্বি আউটব্রেক দেখে বদলে যায় কেবল তা-ই ফুটিয়ে তোলে না, বরং সঙ্গে দেখায় বেঁচে থাকার প্রশ্ন আসলে একজন স্বজ্ঞানে থাকা মানুষও নীরবে কতোটা হিংস্র হয়ে উঠতে পারে। এই ব্যাপারটি সম্ভবত সবচেয়ে ভালো ফুটিয়ে তোলা হয়েছে ফ্র্যাঙ্ক ডেরাবন্টের দি ওয়াকিং ডেড সিরিজে। অতিরিক্ত জম্বি মুভি দেখার কারণে মাঝে মাঝে ইচ্ছে করে সত্যিই কয়েকদিনের জন্য এমন কোনো জম্বি অ্যাপোক্যালিপ্সে চলে যেতে।

অবশ্যই কোনো জম্বির কামড় খেতে ভালো লাগবে না সেসময়টায়, কারণ জম্বি সিরিজের সবচেয়ে কষ্টের ব্যাপার হলো বেঁচে থাকার আশা ভেঙ্গে দিতে কেবল একটি কামড়ই যথেষ্ট। আপনি একটি কামড় খাবেন, আপনার সবচেয়ে কাছের মানুষটিও আপনাকে মেরে ফেলতে বাধ্য হবেন। জম্বি সিরিজের আরেকটি বিষয় যেটি অবাস্তব মনে হয় তা হলো অস্ত্রের ব্যবহার। প্রতিটি জম্বি সিরিজেই সারভাইভিং গ্রুপ কোনো না কোনোভাবে অস্ত্র পেয়ে যায়। সেই সঙ্গে তারা প্রথমদিনেই এতো ভালো শুটিং শিখে ফেলে যে তারা এক গুলিতে চলমান জম্বির ঠিক মাথা ফুটো করতে পারে।

এদিক দিয়ে বাস্তবসম্মত ছবি মনে হয়েছে জার্মান ছবি Siege of the Dead. আমার দেখা সব জম্বি অ্যাপোক্যালিপ্স মুভির মধ্যে এটিই একমাত্র মুভি যা অন্যরকম এক আইডিয়ার উপর তৈরি হয়েছে। যারা জম্বি সম্পর্কে কোনো ধারণা পাননি এখনো, তাদের রেকমেন্ড করবো নিচের কিছু মুভি দেখার জন্য, যেগুলো দেখে বুঝতে পারবেন কেমন ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতে পারে আমাদের এই সুন্দর পৃথিবী যদি সত্যিই যুক্তরাষ্ট্রের কোনো রিসার্চ ফ্যাসালিটি থেকে ছড়িয়ে পড়ে ভয়াবহ কোনো ভাইরাস, যা মানুষকে পরিণত করতে পারে সত্যিকারের জম্বিতে। Dawn of the Dead, Shaun of the Dead, 28 Days Later, 28 Weeks Later, Night of the Living Dead, Devil’s Playground, Resident Evil franchise, Zombieland, and TV series The Walking Dead. পূর্বে প্রকাশিতঃ If Zombie Apocalypse Takes Place  ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।