ব্লগে বা অন্যান্য মাধ্যমে যারা লেখালেখি করেন, তাদের অনেকেরই অনেক ধরণের স্বপ্ন থাকে। অনেক স্বপ্নই সফল হয় না। কৈশোরে কত স্বপ্ন দেখেছি, ছাপার অক্ষরে নিজের নামটা দেখব। নিরন্তর চেষ্ট করে গেছি লেখালেখির জন্য। পারিবারিক সমর্থনএ ছিল আমার জন্য।
আমার ছোট বোন, মা, বাবা সবাই খুব সাহায্য করেছে। প্রথম যখন কবিতার কার্ড (গহীন ভালোবাসায়) প্রকাশ করি ১৯৯৭ সালে। পুরো পরিবারের উৎসাহ ছিল চরম মাত্রায়। এটা ছিল একটা কবিতার কার্ড যেটা আবার ফোল্ড করা। একটা প্যাকেটে ভরা ছিল।
প্যাকেজিং এর কারণে এটা খুব আকর্ষণীয় হয়েছিল। আমার বয়সী ছেলেমেয়েদের নিয়ে আমার একটি সংগঠন ছিল-উদীয়মান সাহিত্যিক ও পাঠক সমাবেশ (উসাপাস)। উসাপাস থেকেই প্রকাশিত হয়েছিল। ডিজাইন করেছিল চারুকলার ছাত্র কামরুজ্জামান স্বাধীন। এরপর আমি খুলনা পড়তে গেলে (খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়) সংগঠনটি বন্ধ হয়ে যায়।
উদ্দেশ্য ছিল নবীন লেখকদের জন্য কিছু করব। কার্ড বিপণন আমি নিজেই করেছিলাম। আমার বিনিয়োগ উঠে এসেছিল। ১৯৯৮ সালে প্রকাশ করলাম উপন্যাস এলে তুমি অবেলায়, ত্রয়ী প্রকাশন থেকে। ১৯৯৬ সালে মেলায় একটি স্প্রটল নিয়েছিলাম চার বন্ধু মিলে।
ক্ষতি হয়েছিল চার হাজার টাকা, আর পরিচয় হয়েছিল ত্রয়ী প্রকাশনের মাধব দা'র সাথে। উপন্যাস, বইয়ের আকারে। এর আগে পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছিল একটি মাত্র গল্প, ১৯৯৭ সালে সাপ্তাহিক যায়যায়দিনের কোচ সার্ভিস সংখ্যায়। উপন্যাস লেখার দুঃসাহস ২১ বছর বয়সেই বুঝি করা যায়। উপন্যাসের প্রচ্ছদ করেছিলেন সমর মজুমদার।
উপন্যাসও আমি নিজে বিপণন করেছি, ঢাকা, যশোর ও খুলনাতে। মাঝখানে একটা বিরতি দিয়ে ২০০৬ সালে উপন্যাসটি রিপ্রিন্ট হলো বাজার চাহিদার কারণেই। ২০০৮ সালে জ্যোতি প্রকাশ থেকে বের হলো গল্পের বই। ঝড়ের শেষে প্রস্তুত হয়েছিল ২০০৬ সালেই। এই প্রথম আমি নবীন একজনকে ব্রেক দিই আমার ক্যাম্পাসের ছোট ভাই রুপম প্রচ্ছদ, অলঙ্করণ ও অঙ্গসজ্জা করে।
ক্যাম্পাসে তার কাজে মুগ্ধ হয়ে বলেছিলাম, আমার পরবর্তী বইয়ের ডিজাইন করবি তুই। ২ বছর অপেক্ষার পর জ্যোতি প্রকাশ বইটি প্রকাশ করে। জ্যোতি প্রকাশের স্বত্ত্বাধিকারী মোস্তফা জাহাঙ্গীর আলম ভাইয়ের কাছে আমি কৃতজ্ঞ।
বই প্রকাশ নিয়ে এতসব হ্যাপার কারণে মনে হলো একটি সংগঠন গড়ে তুলি রাইটারদের সহযোগিতার জন্য। গড়ে তুললাম বাংলাদেশ রাইটার্স গিল্ড।
২০১২ তে সংগঠন বাংলাদেশ রাইটার্স গিল্ড থেকে প্রকাশ করলাম আত্মদহন। ২০১২ সালে রাইটার্স গিল্ড থেকে আমরা ১২টি বই প্রকাশ করেছিলাম। ২০১৩তে আমরা দু'টি বই প্রকাশ করি। এবছর আমরা উদ্যোগ নিয়েছি ৩০টি বই প্রকাশ করব।
গল্প ও কবিতার সংকলিত বই ছাড়াও, উপন্যাস প্রতিযোগিতা থাকছে।
বিস্তারিত জানার জন্য আমার অন্যান্য ব্লগ দেখুন।
বাংলাদেশ রাইটার্স গিল্ড-এর লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য
বাংলাভাষাভাষী সকল সাহিত্য প্রেমীদের জন্য এক মঞ্চে আনাই সংগঠনের প্রধান লক্ষ ও উদ্দেশ্য।
লেখকদের সচেতনতা ও দায়িত্ববোধ বৃদ্ধি করা।
লেখকদের ন্যয্য অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষে কাজ করা।
সর্বস্তরে বাংলাভাষার বিশুদ্ধ প্রয়োগ ও ব্যবহার (লেখ্য ও কথ্য) নিশ্চিত করার লক্ষে ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টা চালানো।
আদি বাংলা সাহিত্যের নিদর্শন সংরক্ষণ। যাতে করে নতুন প্রজন্ম বাংলা সাহিত্যের চর্চা সঠিকভাবে করতে পারে।
নতুন লেখকদের পেশাগত দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য বিভিন্ন প্রশিক্ষণ ও প্রতিযোগিতার আয়োজন করা। যাতে করে তারা মৌলিক সাহিত্য চর্চায় সব্যসাচি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হতে পারে।
নবীন লেখকদের বই প্রকাশের জন্য সকল প্রকার সহযোগিতা প্রদান করা।
পাশাপশি দেশের প্রথিতযশা লেখকদের লেখা প্রকাশ করা।
নিয়মিত সাহিত্য পত্রিকা প্রকাশ করা যাতে করে নবীনরা লেখালেখিতে উৎসাহিত হয়।
দুঃস্থ, অসুস্থ লেখকদের আর্থিক সহায়তা প্রদান।
সাহিত্য সংস্কৃতির বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদানের জন্য যথার্থ সম্মাননা প্রদান।
এই সংগঠনের একটি উল্লেখযোগ্য র্কাক্রম প্রকাশনা।
এই সংগঠন দেশের নবীন, প্রবীণ লেখকদের মৌলিক, সৃষ্টিশীল সাহিত্য গ্রন্থ প্রকাশ ও বিপণনের ব্যবস্থা করবে। এক্ষেত্রে কপিরাইট আইন/প্রকাশনা সংক্রান্ত যাবতীয় আইন অনুসরণ করা হবে।
গ্রন্থ প্রকাশের ক্ষেত্রে একটি কার্যকর পাণ্ডুলিপি বাছাই কমিটি থাকবে। উপস্থাপিত সকল পাণ্ডুলিপি যাচাই বাছাই করার পর পাণ্ডুলিপি বাছাই কমিটির সুপারিশ ক্রমে পাণ্ডুলিপি প্রকাশের জন্য বিবেচিত হবে। এক্ষেত্রে পাণ্ডুলিপি বাছাই কমিটির সিদ্ধান্ত চুড়ান্ত বলে বিবেচিত হবে।
.
বই প্রকাশের কাজ করবে প্রকাশনা কমিটি। বেিয়র বাজেট নির্ধারণ সহ বাজার জরিপ করবে প্রকাশনা কমিটি।
পাণ্ডুলিপি বাছাই কমিটি ও প্রকাশনা কমিটি যুগপৎভাবে লেখকের রয়্যালটির পরিমাণ এবং বইয়ের মূল্য নির্ধারণ করবেন।
সংগঠন কেন্দ্রীয়ভাবে একটি এবং পর্যায়ক্রমে দেশের প্রতিটি জেলা/উপজেলা/ইউনিয়নে সমৃদ্ধ পাঠাগার প্রতিষ্ঠা করবে।
দেশকে উন্নত করতে হলে সাহিত্য চর্চার কোন বিকল্প নেই।
লেখকদের দেশাত্ববোধক লেখনী পাঠকদের মনে জাতীয়তাবোধের সৃষ্টি করে। একটি দেশ প্রেমিক জাতি গঠনের জন্য চাই দেশপ্রেমিক সৃজনশীল লেখক সমাজ। বাংলাদেশ রাইটার্স গিল্ড এক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে।
শুক্রবার সকালে হচ্ছে সাহিত্য সভা। চলে আসুন সকাল দশটায়।
যোগাযোগ:
পারভেজ রানা
চেয়ারম্যান
বাংলাদেশ রাইটার্স গিল্ড ()
১৫২, সেনপাড়া পর্বতা, ৫ম তলা, (মিরপুর ১০, আল হেলাল হাসপাতালের কাছে)
রোকেয়া সরণি
মিরপুর, ঢাকা-১২১৬, ফোন নং: ০১৯১৩৩৩৬১২৭, ০১৭৩০৯৭৫০০৮
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।