তিনি এজন্য যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তাদের নয়া দিল্লির সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যেতে বলেছেন বলে বার্তা সংস্থা পিটিআইকে উদ্ধৃত করে প্রতিবেদন ছাপিয়েছে ইকোনমিক টাইমস।
বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত ড্যান মজীনার সাম্প্রতিক নয়া দিল্লি সফর ওই প্রক্রিয়ায়ই অংশ বলে শুক্রবার প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনে বলা হয়।
নির্বাচনের আগে দুই প্রধান দলের মতদ্বন্দ্বে বাংলাদেশে রাজনৈতিক সঙ্কটের আশঙ্কার মধ্যে মজীনার ওই সফর ব্যাপক আলোচনা সৃষ্টি করে।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন,আমন্ত্রণ ছাড়াই স্বউদ্যোগেই ওই সফরে গিয়েছিলেন ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত।
ভারতের সংবাদ মাধ্যমের খবর, বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তাদের অবস্থান জেনে এই বিষয়টি ওয়াশিংটনে ওবামার সঙ্গে আলোচনায় তোলেন মনমোহন সিং।
ইকোনমিক টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়, ভারতের প্রধানমন্ত্রীর উদ্বেগের বিষয়টিতে গুরুত্ব দিয়ে তা প্রশমনে ওবামা তার কর্মকর্তাদের নিবিড় আলোচনা চালিয়ে যেতে নির্দেশ দিয়েছেন।
বাংলাদেশে রাজনৈতিক সহিংসতার মাত্রা বৃদ্ধি এবং মৌলবাদী শক্তির উত্থান ঘটলে তা ভারত তথা দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক নিরাপত্তা বিঘ্নিত করবে বলে মনমোহন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টকে জানান।
ওবামার নির্দেশের পর যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা সুসান রাইস ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা শিবশঙ্কর মেননের সঙ্গে আলোচনা করে নিজেদের দূরত্ব ঘোচানোর প্রয়াস ইতোমধ্যে চালিয়েছেন বলে পিটিআই জানায়।
যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে ভারতকে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে কী করণীয়, তা দেশটির রাজনীতিকদেরই ঠিক করা উচিত বলে ওয়াশিংটন মনে করে।
তবে বাংলাদেশে অবাধ,সুষ্ঠু ও সবার অংশগ্রহণে গ্রহণযোগ্য একটি নির্বাচন দেখতে চায় যুক্তরাষ্ট্র।
আর তার পথ সুপ্রশস্ত করতে দ্বন্দ্ব মেটাতে দুই প্রধান দলের সংলাপে অংশ নেয়া উচিত বলেও মনে করে তারা।
ওয়াশিংটনের এক কর্মকর্তা পিটিআইকে বলেন, “আমরা চাই এই টুকুই যে বাংলাদেশে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে একটি সমঝোতা হোক, যাতে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন হয়। আমরা আন্তরিকভাবে চাই, দেশটিতে আগামী নির্বাচনটি যেন গ্রহণযোগ্য হয়। ”
বাংলাদেশকে কেন্দ্র করে নয়া দিল্লির সঙ্গে দূরত্ব সৃষ্টির কারণ কী- জানতে চাইলে ওয়াশিংটনের ওই কর্মকর্তা বলেন, ভারতের সঙ্গে মতভিন্নতা রয়েছে বলে যুক্তরাষ্ট্র মনে করে না।
দুই সপ্তাহ আগে মজীনার সফরের পর ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের কর্মকর্তাদের উদ্ধৃতি দিয়ে বাংলাদেশের কয়েকটি সংবাদপত্রে বলেছিল, বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে ভারত ও যুক্তরাষ্ট্র ‘অভিন্ন’ অবস্থানে পৌঁছেছে।
এর প্রতিক্রিয়ায় ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের শীর্ষ এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমাদের কাছে মনে হয়েছে, এসব প্রতিবেদনে সঠিক তথ্য আসেনি। ”
বাংলাদেশের ব্যাপারে ভারতের নীতি মজীনাকে ‘স্পষ্ট ভাষায়’ জানিয়ে দেয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
“আমরা বাংলাদেশে যে কোনো ধরনের বিদেশি হস্তক্ষেপের বিপক্ষে। আমরা চাই, সব পক্ষের অংশগ্রহণে একটি শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের মাধ্যমে বাংলাদেশের মানুষ নিজেদের ভবিষ্যৎ নিজেরাই ঠিক করুক। ”
ভারতে সফর থেকে ফিরে মজীনা ফিরে গেছেন তার দেশে।
সেখানে তিনি ওয়াশিংটনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে এই বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করবেন বলে মনে করা হচ্ছে।
বাংলাদেশের পরবর্তী নির্বাচন নিয়ে অনেক কূটনীতিকই কথা বলছেন, যার সমালোচনা করে আসছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতারা।
সম্প্রতি পররাষ্ট্রমন্ত্রী দীপু মনিও কূটনৈতিক শিষ্টাচার রক্ষার জন্য বিদেশি কূটনীতিকদের সতর্ক করে দেন।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।