প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগের চেয়ে খালেদা জিয়ার বিএনপি জনপ্রিয়তায় অনেক এগিয়ে। জনমত জরিপে এটাও দেখা যাচ্ছে যে ভোট কারচুপি প্রতিরোধে নির্বাচন পরিচালনায় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের পক্ষে জনগণ। এমন এক পরিস্থিতিতে শেখ হাসিনা সম্ভবত বিএনপিকে নির্বাচন বয়কট করার প্ররোচিত করার আশাতেই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি প্রত্যাখ্যান করছেন। শুক্রবার প্রভাবশালী ব্রিটিশ সাময়িকী ইকোনমিস্টের অনলাইন সংস্করণে প্রকাশিত ‘বাংলাদেশ : মিউটিনি অ্যান্ড রিভেঞ্জ, অ্য মাস কনভিকশন অব মিউটিনিয়ার্স কামস অ্যাট অ্য পলিটিক্যালি ডেলিকেট মোমেন্ট’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এ মন্তব্য করা হয়।
প্রতিবেদনটি শনিবারের ছাপা সংস্করণে প্রকাশিত হওয়ার কথা রয়েছে।
প্রতিবেদনে বিডিআর বিদ্রোহের মামলার রায় প্রসঙ্গে বলা হয়, ওই রায় সম্ভবত জানুয়ারিতে অনুষ্ঠেয় সাধারণ নির্বাচনের আগে কার্যকর করা হবে না। ওই রায়ের আপিল প্রক্রিয়ার নিষ্পত্তি হতেও কয়েক মাস সময় লাগবে। তবে ওই রায়ের ফলে সেনাবাহিনীতে শেখ হাসিনার অবস্থান মজবুত করবে। ফলে তিনি অতি প্রয়োজনীয় শক্তি পাবেন।
প্রতিবেদনে বলা হয়, এই রায় এমন এক সময়ে দেয়া হলো, যখন জনমত জরিপে দেখা যায় যে খালেদা জিয়ার নেতৃত্বাধীন বিরোধী বিএনপি শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগের চেয়ে অনেক বেশি জনপ্রিয়।
জনমত জরিপে আরো দেখা যায় যে ভোট কারচুপি ঠেকাতে নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রতিও ব্যাপক সমর্থন রয়েছে। বিএনপিকে নির্বাচন বয়কটের দিকে প্ররোচিত করার আশাতেই সম্ভবত শেখ হাসিনা তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রত্যাখ্যান করছেন।
ইকোনমিস্ট জানায়, বিএনপি বয়কট করলে নির্বাচন কয়েক মাস বিলম্বিত হতে পারে এবং আগামী কয়েক মাস সম্ভবত রাজপথ সহিংস হবে। সেক্ষেত্রে সেনাবাহিনী সিদ্ধান্তসূচক রাজনৈতিক ভূমিকা পালন করতে পারে। এতে বাধ সাধার কোনো আগ্রহ শেখ হাসিনার নেই।
প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শেখ হাসিনা দায়িত্ব গ্রহণের দুই মাসের মধ্যে বিডিআর নৃশংস বিডিআর বিদ্রোহ ঘটে। বিদ্রোহে ৭৪ জন নিহত হয়, তাদের লাম নর্দমা ও অস্থায়ী কবরে ফেলে দেয়। নতুন প্রধানমন্ত্রী তাদের দমনে সেনাবাহিনী ব্যবহার না করে বিদ্রোহীদের সাথে আলোচনার পথ বেছে নেন। এর মাধ্যমে তিনি প্রায় নিশ্চিতভাবে আরেকটি হত্যাযজ্ঞ এড়াতে সক্ষম হন, যদিও এর মাধ্যমে প্রতিশোধ নিতে আগ্রহীদের ক্রোধের শিকার হওয়ার ঝুঁকি নেন। তবে আলোচনা করার উদ্যোগের সময় প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছিল যে দায়ীদের গ্রেফতার ও শাস্তি দেয়া হবে।
প্রায় পাঁচ বছর পর এবং সাধারণ নির্বাচনের মাত্র দুই মাস আগে ৫ নভেম্বর বিদ্রোহের রায় ঘোষণা করা হলো। ইকোনমিস্ট জানায়, বাংলাদেশের কোনো আদালতই আন্তর্জাতিক মানদণ্ড পূরণ করে না। মানবাধিকার গ্রুপগুলো বিচারে মারাত্মক ত্রুটির কথা উল্লেখ করেছে। মোট ৮৪৭ জনের বিচার করা হয়। এদের মধ্যে ১৫২ জনকে ফাঁসি দেয়া হয়।
কয়েক শত লোককে দেয়া হয় দীর্ঘ মেয়াদি কারাদণ্ড। আদালতে যথাযথ প্রক্রিয়া অবলম্বন না করার আশঙ্কা ছিল, আটক অবস্থায় অন্তত ৭০ জন মারা যান, প্রায় নিশ্চিতভাবে বলা যায় যে তাদেরকে হত্যা করা হয়েছে।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।