বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের মধ্যে সৃষ্টি হওয়া দূরত্ব ঘোচাতে নয়াদিল্লির সঙ্গে নিবিড় আলোচনার জন্য ওয়াশিংটনের পররাষ্ট্র দফতরকে নির্দেশ দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। এই নির্দেশনার পর যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের দুই নিরাপত্তা উপদেষ্টা বাংলাদেশ ইস্যুতে আলোচনাও করেছেন। এরই ধারাবাহিকতায় ঢাকার মার্কিন রাষ্ট্রদূত ড্যান ডব্লিউ মোজেনা গত মাসে নয়াদিল্লি সফর করেন। ভারতীয় বার্তা সংস্থা পিটিআই ওয়াশিংটন থেকে এ খবর জানিয়েছে।
'বারাক ওবামা তার কর্মকর্তাদের বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংকট নিয়ে নয়াদিলি্লর সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যেতে বলেছেন' শীর্ষক পিটিআইয়ের খবরে বলা হয়, ভারতের প্রধানমন্ত্রী ড. মনমোহন সিং তার সাম্প্রতিক যুক্তরাষ্ট্র সফরে হোয়াইট হাউসে এক বৈঠকে (জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশন চলাকালীন) মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার কাছে বাংলাদেশ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থানেরবিষয়ে গভীর উদ্বেগ জানান।
তখন উদ্বেগের বিষয়টিতে গুরুত্ব দিয়ে তা প্রশমনে ওবামা তার কর্মকর্তাদের নিবিড় আলোচনা চালিয়ে যেতে নির্দেশ দিয়েছেন। পিটিআইয়ের প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, মার্কিন কর্মকর্তারা নয়াদিল্লিকে বলেছে, তারা বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে বিএনপির বিষয়ে অনেক স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে। এই পরিপ্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী ড. মনমোহন সিং প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামাকে জানান, বাংলাদেশে রাজনৈতিক সহিংসতার মাত্রা বৃদ্ধি এবং মৌলবাদী শক্তির উত্থান ঘটলে তা ভারত তথা দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক নিরাপত্তা বিঘি্নত করবে। সূত্র মতে, ওবামা তখনই এ বিষয়ে ভারতের উদ্বেগ নিরসনে কর্মকর্তাদের আলোচনার নির্দেশনা দেন। ওবামার নির্দেশের পর যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা সুসান রাইস ও ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা শিবশঙ্কর মেনন নিজেদের মধ্যে এ বিষয়ে আলোচনাও করেন।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ঢাকায় নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত ড্যান মোজেনার সাম্প্রতিক নয়াদিল্লি সফর উদ্বেগ নিরসনের প্রক্রিয়ারই অংশ। পিটিআইয়ের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে ভারতকে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে কী করণীয়, তা দেশটির রাজনীতিকদেরই ঠিক করা উচিত বলে ওয়াশিংটন মনে করে। তবে বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও সবার অংশগ্রহণে গ্রহণযোগ্য একটি নির্বাচন দেখতে চায় যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন এক কর্মকর্তা পিটিআইকে বলেন, আমরা এই টুকুই চাই যে বাংলাদেশে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে একটি সমঝোতা হোক, যাতে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন হয়। আমরা আন্তরিকভাবে চাই দেশটিতে আগামী নির্বাচনটি যেন গ্রহণযোগ্য হয়।
বাংলাদেশকে কেন্দ্র করে নয়াদিলি্লর সঙ্গে দূরত্ব সৃষ্টির কারণ কী- জানতে চাইলে ওয়াশিংটনের ওই কর্মকর্তা বলেন, এ বিষয়ে ভারতের সঙ্গে ভিন্নমত রয়েছে বলে যুক্তরাষ্ট্র মনে করে না। তিনি বলেন, আমরা চাই, সব পক্ষের অংশগ্রহণে একটি শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের মাধ্যমে বাংলাদেশের মানুষ নিজেদের ভবিষ্যৎ নিজেরাই ঠিক করুক। নির্বাচন গ্রহণযোগ্য করতে বৃহৎ রাজনৈতিক দলগুলোর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে। এজন্য দলগুলোকে একটি চুক্তিতে যেতে হবে। দলগুলোকেই ঠিক করতে হবে তত্ত্বাবধায়ক সরকার না অন্য কোনো পদ্ধতিতে নির্বাচন হবে।
এই রাজনৈতিক বিষয়ে আমাদের কোনো বক্তব্য নেই।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।