রাতের আকাশে তখন চাঁদ ছিল। অন্ধকারে চাঁদের সেই আলো নেহাত কম নয়। কিন্তু মুহুর্মুহু আতশবাজির ঝলকানি, আলোর বিচ্ছুরণ, হাজারো রঙের খেলা আর আলোর ঝরনাধারায় সেই চাঁদের আলোও যেন খানিকটা সময়ের জন্য ম্লান হয়ে গিয়েছিল হাতিরঝিলে।
শিশু-কিশোর-যুবক-বৃদ্ধসহ সব শ্রেণীর মানুষের বিস্ময়, করতালি আর মুগ্ধতায় যেন অন্য এক পরিবেশের সৃষ্টি হয়েছিল হাতিরঝিলে। এ যেন ধরার বুকে এক আলোক উত্সব।
দেশে বিদ্যুতের উত্পাদনক্ষমতা ১০ হাজার মেগাওয়াটে পৌঁছানো উদ্যাপন করার জন্য এই আলোক উত্সবের আয়োজন করা হয়েছিল। গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার পর পর লেজার শো ও আতশবাজি ফোটানোর মধ্য দিয়ে এ উত্সব শুরু হয়। এই প্রদর্শনীর সাক্ষী হতে বিকেল থেকেই হাতিরঝিলে হাজির হয়েছিল ১০ থেকে ১৫ হাজার মানুষ।
সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্র থেকে জাতীয় বিদ্যুত্ সপ্তাহ ও আলোক উত্সবের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর পরপরই হাতিরঝিলের সেতুর ওপর থেকে আলোকরশ্মি ছড়ানোর মধ্য দিয়ে শুরু হয় এই আলোক উত্সব।
এর নাম দেওয়া হয় আলোর ঝরনাধারা।
১৪ মিনিটের প্রদর্শনীর শুরুতেই ছিল লেজারের চমক। লেজারের খেলা শেষ হওয়ার পর শুরু হলো মুহুর্মুহু বিস্ফোরণ। সেতু থেকে একেকটি আতশবাজি আকাশপানে ছুটছিল, এরপর সেগুলো বিস্ফোরিত হয়ে চারপাশে ছড়াচ্ছিল আলোকচ্ছটা। কত যে তার রং, কত যে তার খেলা; যেন লাখো কদমফুল আকাশ থেকে নেমে আসছে ধরায়, পাপড়িগুলো উড়ে উড়ে ছড়িয়ে পড়ছে চারপাশে।
সবশেষে সেতু থেকে আলোর ঝরনাধারায় বানানো হয় নায়াগ্রা জলপ্রপাত। এতটাই সৌন্দর্য ছিল যে দেখে মনে হয়, নায়াগ্রা জলপ্রপাত বুঝি হাজির হয়েছে এই ব্যস্ত নগরে। চোখ ধাঁধানো সেই আলোয় চমকে উঠতে হয়।
বাংলাদেশ সরকারের জন্য এই আলোক উত্সব করেছে বেসরকারি সংস্থা মুকিমস ক্রিয়েশন। রাত আটটার আগেই প্রদর্শনী শেষ হয়েছে, কিন্তু হাতিরঝিলে তখনো হাজার হাজার মানুষ।
চোখেমুখে তখনো তাদের বিস্ময়। তারা বাড়ি ফিরছে নানা গল্প নিয়ে। আলোর এই ঝরনাধারা দেখে যে কারোরই মনে হবে, দেশটা আসলেই আলোর দিকে ছুটছে। আলোর এই ঝরনাধারা ছড়িয়ে পড়ুক চারপাশে, কেটে যাক সব অন্ধকার।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।