খুলনার দাকোপ উপজেলার তিলডাঙ্গা ইউনিয়নে পানি উন্নয়ন বোর্ডের বাঁধের ৩১ নম্বর পোল্ডার এবং সুতারখালী ইউনিয়নে ৩২ নম্বর পোল্ডার এলাকার দেড় কিলোমিটাজুড়ে ভাঙন চলছে। সবচেয়ে ভয়াবহ অবস্থা তিলডাঙ্গা ইউনিয়নে। এই অংশে ১০ ফুট চওড়া বাঁধের ছয় ফুটই নদীতে বিলীন হয়ে গেছে।
এখনই ভাঙন ঠেকানোর ব্যবস্থা না নিলে চালনা পৌরসভা ও তিনটি ইউনিয়নের তিন লক্ষাধিক মানুষের পানিবন্দী হয়ে পড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। এ কারণে এসব এলাকার মানুষ আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন।
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) খুলনা কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ১৯৬২-৬৮ সালে পাউবো ৩১ নম্বর পোল্ডারের আওতায় ৪৭ কিলোমিটার ও ৩২ নম্বর পোল্ডারের আওতায় ৫২ কিলোমিটার বাঁধ নির্মাণ করে। পরবর্তী সময়ে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) বাঁধের ওপর ইটের রাস্তা নির্মাণ করে।
এলাকাবাসী জানান, তিলডাঙ্গা ইউনিয়নের বটবুনিয়া বাজার এলাকায় ঢাকি নদীর একটি বাঁক রয়েছে। নদীর তীব্র স্রোত এসে ওই বাঁকে আছড়ে পড়ছে। এ বছরের বর্ষা মৌসুম থেকে ওই অংশে ভাঙন শুরু হয়েছে।
তিলডাঙ্গা গ্রামের মনিরুল ইসলাম বলেন, এই স্থানে যখন ভাঙন শুরু হয়, তখন পাউবোকে ব্লক ফেলে তা ঠেকাতে বলা হয়েছিল। তখন ব্লক ফেলে ভাঙন ঠেকালে এ সমস্যার সৃষ্টি হতো না। বটবুনিয়া বাজারের ব্যবসায়ী মনীষ মণ্ডল বলেন, এই স্থান ভেঙে গেলে বাজারের প্রায় ৪০টি দোকান নদীতে চলে যাবে। এ ছাড়া চালনা পৌরসভা, তিলডাঙ্গা ও কামিনীবাসিনী ইউনিয়নের দুই লাখ মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়বে।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, সুতারখালী ইউনিয়নের গোনারি গ্রামের কালীবাড়ি লঞ্চঘাট ও মনি মোহনের বাড়ির সামনে এক কিলোমিটারজুড়ে ভাঙন চলছে।
বিষয়টি পাউবোর কর্মকর্তাদের জানিয়েও কোনো লাভ হয়নি। এই দুটি স্থানে বাঁধ ভেঙে গেলে সুতারখালী ইউনিয়নের লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়বে।
১৫ নভেম্বর সরেজমিনে দেখা গেছে, বটবুনিয়া বাজারের পেছনে বাঁধের প্রায় অর্ধকিলোমিটারজুড়ে ভাঙন চলছে। বাঁধের প্রায় পাঁচ-ছয় ফুট ভেঙে নদীতে চলে গেছে। বাঁধের ওপর দিয়ে এলাকার মানুষ ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে।
গোনারি গ্রামের কালীবাড়ি লঞ্চঘাট এলাকায় ও মনি মোহনের বাড়ির সামনে প্রায় ১৪ ফুট চওড়া বাঁধের প্রায় ছয়-সাত ফুটে ফাটল ধরেছে।
সুতারখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গাজী আশরাফ বলেন, বাঁধ ভেঙে গেলে পানি ঢুকে ওই এলাকার ১২ হাজার বিঘার ধান নষ্ট হবে ও ৫০-৬০ হাজার লোক পানিবন্দী হয়ে পড়বে।
৩১ নম্বর পোল্ডারের দায়িত্বে থাকা পাউবোর উপসহকারী প্রকৌশলী ফিরোজ হোসেন বলেন, ‘তিলডাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য নীল কমলকে ওই স্থানটি মেরামতের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তিনি কাজ না করে বসে আছেন। আমরা বারবার বলার পরও তিনি কাজ করছেন না।
’
নীল কমল বলেন, ‘দ্রুত কাজটি করার জন্য ঠিকাদারকে সাহায্য করেছিলাম। টাকাপয়সা না থাকায় কাজ এগোচ্ছে না। ’
৩২ নম্বর পোল্ডারের দায়িত্বে থাকা পাউবোর উপসহকারী প্রকৌশলী আনোয়ার হোসেন জানান, ঘূর্ণিঝড় আইলার প্রকল্পে আর বরাদ্দ নেই। নতুন করে একটি প্রকল্পের নকশা তৈরি করে প্রধান কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে। বরাদ্দ পাওয়া গেলে কাজ করা হবে।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।