তৃতীয় প্রজন্মের মোবাইল প্রযুক্তি থ্রিজি নিলামে দেশের মোবাইল অপারেটররা ২.১ গিগাহার্টজ ব্যান্ডের তরঙ্গ বরাদ্দ পেতে প্রতি মেগাহার্টজ কিনেছিলেন ১৫৫ কোটি টাকায়। অথচ ওলোকে তার চেয়েও উন্নত প্রযুক্তির এলটিই ২.৬ গিগাহার্টজ ব্যান্ডের তরঙ্গ প্রতি মেগাহার্টজ মাত্র ছয় কোটি টাকায় বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে কোনো নিলাম প্রক্রিয়া ছাড়াই। বাংলাদেশের মুঠোফোন সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানদের সংগঠন এমটব বলছে, ওলোকের তরঙ্গ বরাদ্দ প্রশ্নবিদ্ধ।
দ্রুত গতির ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ ইন্টারনেট এক্সচেঞ্জ লিমিটেড (বিআইইএল) বাংলাদেশে ওলো নামে পরিচিত। দুই বছর আগে রাশিয়ার এই প্রতিষ্ঠানটি তাদের কার্যক্রম শুরু করে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, চুক্তি অনুসারে ওলো সরকারকে নিবন্ধনসহ ৪০ মেগাহার্টজ তরঙ্গ ব্যবহারের জন্য ২৪৫ কোটি ৭১ লাখ টাকা দিচ্ছে। সম্প্রতি ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় ওলোকে এলটিই (লং টার্ম ইভাল্যুয়েশন—যাকে ফোর জি বলা হয়) প্রযুক্তিসহ থ্রিজি তরঙ্গ ব্যবহারের অনুমোদন দিয়ে ৫ নভেম্বর টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসিতে চিঠি পাঠিয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিটিআরসির চেয়্যারম্যান সুনীলকান্তি বোস প্রথম আলোকে মন্ত্রণালয় থেকে অনুমোদনপত্রটি বিটিআরসিতে আসার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
গত ৮ সেপ্টেম্বর দেশে তৃতীয় প্রজন্মের মোবাইল প্রযুক্তি থ্রিজি সেবার প্রথম নিলামে প্রতি মেগাহার্টজ তরঙ্গের দাম ওঠে ১৫৫ কোটি টাকা। নিলামে ১৫ বছরের জন্য ১০ মেগাহার্টজ তরঙ্গ কেনে গ্রামীণফোন।
বাংলালিংক, রবি ও এয়ারটেল কিনেছে ৫ মেগাহার্টজ করে ১৫ মেগাহার্টজ তরঙ্গ। ওই নিলাম থেকে সরকারের আয় হয় চার হাজার ৮১ কোটি টাকা।
পরে অক্টোবর মাসে নিলাম প্রক্রিয়ায় অংশ না নিয়ে ওলোকে থ্রিজিসহ এলটিই তরঙ্গ বরাদ্দ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। দাম নির্ধারণের ক্ষেত্রে এই অসমতার বিরোধিতা করে মোবাইল সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানের সংগঠন এমটব। সংগঠনটির পক্ষ থেকে ওলোকে এলটিই তরঙ্গ বরাদ্দের প্রক্রিয়াকে প্রশ্নবিদ্ধ বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
থ্রিজিতে তাদের চেয়ে উন্নত সেবার তরঙ্গ বরাদ্দের বৈষম্য বিবেচনা করতে সংগঠনটি সরকারকে চিঠি দিয়েছে। এমটবের মহাসচিব নুরুল কবীর প্রথম আলোকে বলেন, ‘তরঙ্গ বরাদ্দে অসমতা না করতে সরকারকে অনুরোধ করে একটি চিঠি লিখেছি ও অপারেটরদের প্রতিনিধিরা ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী সাহারা খাতুনের সঙ্গে দেখা করেছে। ’
রুল জারি: এদিকে ওলোকে ‘নিলাম ছাড়া লাইসেন্স দেওয়া কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না’—তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন আদালত।
গতকাল রোববার জনস্বার্থে করা এক রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি শেষে বিচারপতি মির্জা হোসেইন হায়দার ও মুহাম্মদ খুরশিদ আলম সরকারের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রুল জারি করেন। আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার অনিক আর হক।
লাইসেন্সের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে আদালতে রিট আবেদন করেছিলেন ব্যারিস্টার মুহম্মদ ওমর ফারুক।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিব ও যুগ্ম সচিব, বিটিআরসি চেয়ারম্যান ও লিগাল অ্যান্ড লাইসেন্স কমিটির সচিব, সিনিয়র সহকারী সচিব, বাংলাদেশ ইন্টারনেট এক্সচেঞ্জ লিমিটেড এবং ম্যাঙ্গো টেলি সার্ভিসকে দুই সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
সূত্র: প্রথম আলো
আরো দেখুন: পানির দামে লাইসেন্স পাচ্ছে ওলো: ৩৪২৯ কোটি টাকার লাইসেন্স ২৪৬ কোটি টাকায়।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।