আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মুভি রিভিওঃ Jules and Jim (১৯৬২)

তুই ভালো থাকিস, আমি সুন্দর থাকবো মুভিঃ Jules and Jim (1962) জেনারঃ রোমান্টিক ড্রামা দেশঃ ফ্রান্স ডিরেক্টরঃ François Truffaut French New Wave এর উদাহরন টানতে গেলে যে কয়েকটি মুভির নাম না চাইলেও চলে আসে তাদের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে ট্রুফোর জুলস এন্ড জিম । প্রায় ৩০ বছর সময় ধরে ব্যাপ্ত এই ছবির কাহিনী শুরু হয়েছে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের আগে, শেষ হয়েছে হিটলারের উঠতি সময়ে এসে। ১৯১২ সালে প্যারিসে দেখা হয় দুই যুবকের, একজন ফ্রান্সের (জিম) আরেকজন অস্ট্রিয়ার (জুলস), তারা একজন আরেকজনকে নিজেদের ভাষা শেখায়, সাহিত্যে আগ্রহী এক জন আরেকজনকে করে দেয় কবিতার অনুবাদ আর সারা জীবনের জন্য আটকা পরে বন্ধুত্বের বাধনে । যদিও ছবির নাম জুলস এন্ড জিম, কিন্তু ছবির প্রধান চরিত্র বলতে হবে ক্যাথরিনকে। Jeanne Moreau ক্যাথরিন চরিত্রে তার অসাধারন অভিনয় দিয়ে পুরো ছবিটাতেই দর্শকদের বেধে রাখেন।

তার সাবলীল অভিনয় দিয়ে চরিত্রের সাথে নিজেকে এতোটাই মানিয়ে নিয়েছেন যে দর্শক চিন্তা করতে বাধ্য হবেন ক্যাথরিন কোন সাধারন চরিত্র নয় এবং যারা তার সান্নিধ্যে এসেছে (জুলস এবং জিম) তারা তার প্রতি আকৃষ্ট হতে বাধ্য, এবং সম্ভবত ক্যাথরিন-ই হচ্ছে নিউ ওয়েভ যুগের কোন নারী চরিত্রের সবচেয়ে নিখুত চিত্রায়ন। স্বাধীনচেতা এবং unpredictable এই চরিত্রটি একটু পাগলাটেও বটে। এতোটাই পাগলাটে যে দুই বন্ধু ক্যাথরিনের দিকে মনোযোগ না দিয়ে নিজেদের মাঝে আলাপে ব্যস্ত বলে সে নিজেকে নদীতে ছুড়ে দিতে পারে। জুলসকে সে সন্তান দিতে চায়, কিন্তু সনাতন স্ত্রী কিংবা মা হবার কোন ইচ্ছাই তার নেই। দুই বন্ধুই তাকে পছন্দ করে জেনেও সে একজনকে দেখিয়ে আরেকজনের সাথে চুটিয়ে প্রেম করে চলে, আর এ ক্ষেত্রে তার বিখ্যাত উক্তি হচ্ছে, “one is never completely in love for more than a moment”।

ট্রুফোর ছবির একটা অন্যতম বৈশিষ্ঠ্য হচ্ছে ব্যাকগ্রাউন্ড ভয়েস ব্যাবহার করা, জুলস এন্ড জিম ছবিতে শুরু থেকেই ব্যাকগ্রাউন্ড ভয়েস ব্যাবহার করা হয়েছে এবং ব্যাকগ্রাউন্ডে তাই বলা হয়েছে যা দেখানোর মতো সময় পর্দায় নেই, এবং এই ব্যাকগ্রাউন্ড বয়েসের কারনেই ১.৪৫ ঘন্টার ছবিতে ২৫/৩০ বছরের কাহিনী দেখানো হলেও কখনোই মনে হবেনা কোনকিছুর কমতি রয়ে গেল। ভয়েস ন্যারাশন ছাড়াও কিছু প্যানিং শট, ফ্রিজ ফ্রেম, ট্রেকিং শটের এমন অসাধারন কিছু ব্যাবহার “জুলস এন্ড জিম”-এ করা হয়েছে যে এই ছবিকে বলা হচ্ছে, “An inventive encyclopedia of the language of cinema that incorporates newsreel footage, photographic stills, freeze frames, panning shots, wipes, masking, dolly shots, and voiceover narration.” জুলস এন্ড জিম সেই বিরল ছবিগুলোর একটি যা কিনা দর্শকদের খুব দ্রুত চিন্তা করতে বাধ্য করবে, জুলস, জিম এবং ক্যাথরিনকে দেখে কোন ব্যাখ্যায় যেতে পারবেন না কিন্তু তাদেরকে অনুভব করতে পারবেন। কমেডি এবং ট্রাজেডীর নিখুত মেলবন্ধনের এই মুভিকে মানা হচ্ছে নিউ ওয়েভের আদর্শ উদাহরন আর আমার ব্যক্তিগত মতামত হিসেবে বলতে পারি ট্রুফোর সেরা ছবিগুলোর মাঝে সবার চাইতে এগিয়ে থাকবে “জুলস এন্ড জিম”।  ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.