"A little knowledge of science makes man an atheist, but an in-depth study of science makes him a believer in God." Francis Bacon.
বুদ্ধিজীবিদের মধ্যে বহু বিখ্যাত মানুষ ইসলাম ধর্মগ্রহণ করছেন যাঁরা বোকাও নন, অত্যাচারেও নয় এবং এবং অস্ত্রের ভয়েও নয় বরং স্বেচ্ছায় এগিয়ে এসেছেন । যেমন, আফ্রিকা মহাদেশের উগান্ডার বিখ্যাত পন্ডিত এবং খ্রিষ্টান ধর্মপ্রচারক রেভারেন্ড পল । তিনি ১৯৭৫ খ্রিষ্টাব্দের ২৬ মে মুসলমান হয়েছেন । অথচ আকস্মিকভাবে নয়, যুগযুগ ধরে বহু ধর্ম ও নীতি নিয়ে গবেষণা করে তারপর তাঁর ঐ সিদ্ধান্ত ।
ফ্রান্সের সেলমাঁ বেয়োস্তা বিরাট প্রভাবশালী পুরুষ এবং একজন সৃজনশীল বৈজ্ঞানিক ।
তিনি ওষুধের ওপর ডক্টরেট ডিগ্রি লাভ করেছিলেন । তিনি অনেক পড়াশোনা ও সমীক্ষা করেন । Le Phenomene Coranique বইখানি পড়ে ইসলামের প্রতি আরো আকৃষ্ট হন । বইটির লেখক হচ্ছেন Malek Ben Nabi । তিনি ১৯৫৩ খ্রিষ্টাব্দের ২০ ফ্রেব্রূয়ারী ইসলাম গ্রহণ করেন ।
মুসলমান হওয়ার পর তার পুরো নাম হয় - আলি সেলমাঁ বেয়োস্ত [Ali Selman Benoist] । নিঃসন্দেহে বলা যায়, এখানে অস্ত্রের জোরে কাজ হয় নি ।
১৯ শতকে অধ্যাপক লিওন ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন । তিনি আমেরিকা ও ইউরোপের বহু সংস্হার সভ্য ছিলেন । তিনি ছিলেন একজন বিজ্ঞানী এবং সুগ্রন্হকার ।
ভূমি বিজ্ঞান ও শব্দ-বিজ্ঞান [Etymolgy] তার বিষয় ছিল । তার ডিগ্রি ছিল - এম এ, পিএইচডি, এলএলবি, এফএসপি । লন্ডন থেকে বিজ্ঞান বিষয়ে একটি বিখ্যাত পত্রিকা প্রকাশিত হতো, যেটার নাম ছিল The Philomathe । সেই পত্রিকার তিনি-ই ছিলেন সম্পাদক । মুসলমান হওয়ার পর তার নাম হয় প্রফেসর হারুন মোস্তফা লিওন ।
জার্মানির বিখ্যাত কূটনীতিজ্ঞ এবং অত্যন্ত প্রভাবশালী মনীষী মিঃ 'হবহম' অনেক আলোচনা ও সমীক্ষা চালিয়ে স্বেচ্ছায় ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন । মিঃ হবহমের মুসলমান হওয়ার পর নতুন নাম হয় Mohammad Aman Hobhom [মোহাম্মদ আমান হবহম] । তাছাড়া সাধারণ জার্মান যারা ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছেণ তাদের নাম উল্লেখে শুধু বই-এর কলেবর বৃদ্ধি-ই হবে ।
ইংল্যান্ডের স্যার লডার ব্রান্টন অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া করেন এবং ঐ ইউনিভার্সিটিতে রেকর্ড সৃষ্টি করেন । তিনি একজন বিখ্যাত রাজনীতিবিদ এবং 'বেরনেট' ছিলেন ।
ইংল্যান্ড সরকার তাঁকে সম্মানীয় 'স্যার' উপাধিতে ভূষিত করেন । তিনি একজন নিষ্ঠাবান খ্রিষ্টান ছিলেন । অনেক পড়াশোনা এবং রিসার্চ করার পরে তাকে মুসলমান হওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে হয় । তার মুসলমান হওয়ার পরে পুরো নাম হয় Sir Jalaluddin Lauder Brunton ।
আমেরিকার মিঃ আলেকজান্ডার নিউইয়র্কে পড়াশোনা করে নানা পত্রিকায় লেখালেখি করতেন ।
কিছুদিনের মধ্যে বিখ্যাত লেখক হয়েই ক্ষান্ত হলেন না বরং দুটি ভালো পত্রিকার সম্পাদক হয়ে সে দুটি পরিচালনাও করতেন । একটি হচ্ছে St. Josheph Gazette এবং দ্বিতীয়টি হচ্ছে Missuri Repblican । জ্ঞানবৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে গবেষণাও চলতে লাগল, শেষে তিনিও স্বেচ্ছায় মুসলমান হন । তখন তার নাম হলো - মোহাম্মদ আলেকজান্ডার রাসেল ওয়েব ।
অষ্ট্রিয়ার বিখ্যাত রাজনীতিবিদ, সাংবাদিক ও গ্রন্হকার Leopold Wiss ১৯০০ খ্রিষ্টাব্দে জন্মগ্রহণ করেন ।
১৯২২ সালে বর্হিভ্রমণে বের হয়ে প্রতক্ষ অভিজ্ঞতা সন্চয় করেন । ধর্ম সম্বন্ধে অনুসন্ধিৎসু মন চন্চল হয়ে পড়ে । অবশেষে স্বেচ্ছায় ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে মুসলমান হন । মুসলমান হওয়ার পরেও দুটি মূল্যবান গ্রন্হ রচনা করেন । একটি হচ্ছে Islam at the Goss Road, দ্বিতীয়টি হচ্ছে Road to Mecca ।
মুসলমান হওয়ার পর নতুন নাম গ্রহণ করেন মোহাম্মদ আসাদ ।
ইংল্যান্ডের লর্ড হেডলি যে বিখ্যাত খ্রিষ্টান মনীষী ছিলেন তাঁর 'লর্ড' উপাধিতে-ই বোঝা যায় । তিনি লর্ড সভার সভ্য , উচ্চ পর্যায়ের রাজনীতিবিদ এবং গ্রন্হকার ছিলেন । ১৯১৩ খ্রীষ্টাব্দে তিনি স্বেচ্ছায় ইসলাম ধর্মে দীক্ষিত হন । তিনি ছিলেন 4th B.N.M.F -এর নৌবাহিনীর বৃটিশ কর্ণেল ।
তাছাড়া তিনি ছিলেন একজন প্রথম শ্রেনীর ইন্জিনিয়ার । মুসলমান হওয়ার পর তিনি নিজের নতুন নাম গ্রহণ করেছিলেন লর্ড হেডলি ফারুক ।
জাপানের মিঃ তাকিউচি একজন মানবজাতিতত্ব বিশারদ । তিনিও মুসলমান হয়েছিলেন নিজের ইচ্ছাতে । তিনি বলেছিলেন- আজকে জাপান শ্রেষ্ঠ শিল্পোন্নত দেশ, জাপানিরা শুধু কারিগরি বিদ্যায় উন্নত ।
কিন্তু যদি আমার মতো এরা ইসলামকে বুঝার জন্য একটু সময় দিত তাহলে তা গ্রহণ করে দেখত শুধু শিল্পে নয়, ইসলামের প্রকৃত চরিত্র নিয়ে অগ্রসর হলে সে সব বিষয়ে সুখী ও পরিপূর্ণতা লাভ করতে পারে । তিনি ও নতুন নাম গ্রহণ করেছিলেন- মোহাম্মদ সুলাইমান তাকিউচি ।
আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের টমাস ক্লেটন বুদ্ধিমান প্রতিপত্তিশালী ও পন্ডিত মানুষ ছিলেন । তিনিও তরবারির ভয়ে নয় বরং মানবিক প্রয়োজনে স্বেচ্ছায় ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন এবং নতুন নাম গ্রহণ করেন - টমাস মোহাম্মদ ক্লেটন [Thomas Muhammad Cleaton]।
আমেরিকরা ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়ান মুক্তিযোদ্ধা ক্যাসইয়াস ক্লে কথা স্বরণ করিয়ে দিলেই যথেষ্ট হবে ।
তিনি মুসলমান হয়েছিলেন অস্ত্রের ভয়ে নয়, কারোর প্ররোচনাতেও নয়, নিশ্চিতভাবে স্বেচ্ছায় । বরং খ্রিষ্টান হতে মুসলমান হওয়ার জন্য তার খেতাব , সম্মান ও প্রাণ নিয়ে টানাটানি চলে কিন্তু বীরদর্পে তিনি ঘোষণা করলেন, আমার নাম ক্যাসইয়াস ক্লে নয়, আমি এখন মোহাম্মদ আলী ।
আর এক হেভিওয়েট চ্যাম্পিয়ন বক্সার মাইক টাইসন ও যে সম্প্রতি ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছেন তা বিশ্ব জেনেছে । তার নতুন নাম আজিজ ।
সুলাইমান করনানীর সেনাপতি কালাপাহাড় সম্ভ্রান্ত হিন্দু কায়স্হ বংশীয় হিন্দু ছিলেন ।
তিনিও স্বেচ্ছায় মুসলমান হন ।
বাংলার বারভূইয়াদের অগ্রণী ঈসাখাঁ একটা বিখ্যাত ঐতিহাসিক নাম । তার বাবা কালিদাস ইসলাম ধর্মাবলম্বী হওযার পূর্বে বিখ্যাত ব্রাক্ষণ ছিলেন ।
মিঃ কেনেডি যখন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট সে সময় আমেরিকার নিউইয়র্কের বিখ্যাত বিদূষী মহিলা মার্গারেট মারকিউস ছিলেন সম্ভ্রান্ত খ্রিষ্টান । অত্যন্ত ভালো লেখিকা ও সমালোচিকা ।
অনুসন্ধিৎসু মনে ঝড় উঠল তার খ্রিষ্টান ধর্ম তাকে চরম ও পরম পর্যায়ে পৌছাতে পারে কিন ? অনেক পড়াশোন করলেন এবং নামজাদা ভালো পন্ডিত ও লেখকদের সঙ্গে পত্রালাপ করলেন । অবশেষে সেই খ্রিষ্টান মহিলা ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন এবং নতুন নাম নিলেন - মারিয়াম জামিলা । তিনি যার নিকট মুসলমান হন তার নাম সেখ দাউদ আবমাদ ফাইসাল ।
মিঃ ওয়েন মরিশন বিশ্ববিশ্রুত সাংবাদিক , আর্ন্তজাতিক পত্রিকা 'উইকে'র সম্পাদক । যিনি নিত্যনতুন সংবাদ সারা বিশ্বে পরিবেশন করেন, তিনি নিজেই একটা সংবাদে পরিণত হলেন অর্থাৎ ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করলেন এবং নতুন নাম গ্রহণ করলেন জনাব সালমান ওয়েন মরিশন ।
এটা বিগত ১৯৮৪'র ঘটনা ।
আবার যদি পিছিয়ে যাই, তাহলে দেখা যাবে, বিখ্যাত ব্রাক্ষণ বংশে জন্মগ্রহণ করেন মুর্শিদকুলি খাঁ ।
[চলবে ]
সূত্রঃ চেপে রাখা ইতিহাস , গোলাম আহামাদ মোর্তজা , মদীনা পাবলিকেশন্স ।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।