স্বতঃস্ফুর্ত উদ্ভটতা !!!
প্লেন ক্রাশ ভয়াবহ জিনিস। তার থেকেও ভয়াবহ কারোও উপর ক্রাশ খাওয়া। প্লেনের ক্রাশে অন্যেরা মারা যায় কিন্তু ভালোবাসার ক্রাশে নিজেকে মরতে হয়।
বড়ই প্যারাদায়ক ব্যাপার। সমাধান চাই এর।
কথা বলছিলাম মনের সাথে। দেখি উনার মন্তব্য কি. . .
-- জনাব মন, কি বলেন প্রেম করা দরকার না একটা?
-- অতি উত্তম প্রস্তাব সাইনাস ভাই। আরো আগেই করা উচিত ছিল। প্রেমের চেয়ে মধুর কিছুই হয় না। আহাঃ
-- প্রেম কি সত্যিই খুব মধুর? কেমন মধু? খাঁটি মধুতো? আচ্ছা, মধুতো আসে মৌমাছির পেট থেকে, প্রেমের ক্ষেত্রে মধু আসে কোথা থেকে? প্রেমিকার পেট থেকে না নিশ্চয়...!
-- কি যে বলেন সাইনাস ভাই।
"প্রেম মধুর মত" এটাতো কথার কথা।
-- কথার কথা? I mean গুরুত্বহীন কথা?
-- আহঃ এত প্রশ্ন করছেন কেন? ভালোবাসা হিসাব-নিকাশ, লাভ-লোকসান মেনে হয় না। করার পর বোঝা য়ায়, ঠকেছেন না জিতেছেন?
-- ও তারমানে এটা অনিশ্চিত ব্যাপার। যার গ্যারান্টি নেই!
-- উহঃ সাইনাস ভাই আপনি পারেনও বটে। হ্যাঁ এটা একটা অনিশ্চিত ব্যাপার।
যা শুরু হয়, প্রথম অনিশ্চিত পরিস্থিতিতে আর বয়ে চলে অজানায়।
-- অজানায় মানে? মানে এর কোন নির্দিষ্ট গন্তব্য নেই নাকি? তাহলে এত ভালোবাসা বাসি কেন?
-- কেন? এটাইতো হয়। কিছুদিন ভালোবাসা বাসির পর টের পাওয়া যায় যে মনের মিল হচ্ছে না পরে ব্রেকআপ নামক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে দুজনের ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়। পরে আরেকজন কে ধরতে হয়। এভাবেই চলতে থাকে এবং এক সময় থেমে যেতে হয়।
অনেকে আবার থামতে চায় না। চালিয়েই যায়। একসাথে চার পাঁচটা। মাল্টি ট্যালেন্টেড হতে হয় তার জন্য।
-- আচ্ছা যারা মাল্টি ট্যালেন্টেড না তাদের কি হয়?
-- তাদের আর কি হবে? খোঁচা খায়, খেয়ে খোঁচার দগ্দ দাগ নিয়ে কাটিয়ে দেয় সারাজীবন।
অনেকে তো মনে আরেকজনের দাগ নিয়ে অন্যজনের সাথে পাড়ি দেয় সংসার নামক সাগরে। কেউ কেউ খোঁচার দাগ ঘোচায়, কেউ তা পারে না। নতুন করে দাগান্বিত হয় আবার।
-- ও এই ব্যাপার। যেভাবে বল্লেন ব্যাপারটা কি খুব সোজা??? যাই হোক জনাব মন,এখন একটা প্রশ্নের উত্তর দিন তো আমাকে।
৫+৭-৯-৩=কত?
-- কি আশ্চর্য্য আমাকে এসব বলছেন কেন? আমার কাজ অনুভূতি নিয়ে। হিসাব নিয়ে না। এটা মগজ মিয়ার কাজ।
-- ও তার মানে আপনি কেবল অন্ধ আবেগ নিয়েই কাজ করেন? আপনার কাছে যুক্তি বলে কিছুই নেই। ইয়া খুদা! আমি কোন অন্ধের সাথে কথা বলছিলাম এতক্ষন ধরে?
যাই হোক।
জনাব মনের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে মগজ মিয়ার কাছে আসলাম। তার মতামতেরও দরকার আছে. . . .
-- মগজ মিয়া। ভালো আছো?
-- হুহ? কিছু বলছেন আমাকে? একটু ব্যাস্ত আছি এখন।
-- বলছি যে বয়সতো আর থেমে নেই। এবার একটা ভালো মেয়ে দেখে প্রেম করতে হয় না? কি বলো?
-- ও এই কথা।
তা করে ফেলুন না, পরে দেখা যাবে ভেবে চিন্তে। এখন একটা সিরিয়াস ব্যাপার নিয়ে ব্যাস্ত আছি।
-- তার মানে কি প্রেম ভালোবাসা সিরিয়াস ব্যাপার না?
-- হ্যাঁ..? হ্যাঁ তাতো অবশ্যই। তবে আপাতত না। এখন অন্য কাজ।
-- সত্যিই কি অন্য কাজ? একটা সত্যি কথা বলো তো মগজ মিয়া, তুমি কি সত্যিই প্রেম নিয়ে ভাবো না?
-- ইয়ে. .আসলে, ইয়ে. . মানে. হ্যাঁ ভাবিতো। সুন্দরী মেয়েরা যখন আড়চোখে তাকায় তখন আমিই তো জনাব মনকে ইঙ্গিত দিয়ে বলি দেখুন- মশাই মেয়েটার চেহারাটা দেখুন একবার। শরীরের গড়নটা দেখেছেন? নিঃসন্দেহে প্রেমিকা তূল্য। যাবেন নাকি একবার কথা বলতে? পরক্ষণেই বিবেক দা এসে বাধা দেয়। জানেন তো? মেয়েটার শরীরের গড়নটা নিয়ে যখন ভাবতে বসি, যখন তাকে নিয়ে একটু মাতাল স্বপ্নে বিভোর হই ঠিক তখনই বাঁধা।
মোটকথা যখনই লাভ ক্ষতির হিসাব করতে যাই তখনই বিবেক দা নাক গলায়। কি ঝামেলা বলুন! শান্তিতে একটু মানুষিক আনন্দও নিতে পারি না শালার বিবেকের জ্বালায়। এক নাম্বারের হারামির বাচ্চা।
-- কেন? কেন? এরকম করেন কেন উনি?
-- কে জানে! শালার চুলকানি আছে মনে হয়। বেশিই করে।
মেয়েটাকে নিয়ে লিটনের ফ্লাটে যাওয়ার চিন্তা করেছিলাম একবার। কিন্তু বিবেক দা যেতে দিলেন না। শালা বেঈমান।
-- এতে বিবকে দা'র লাভ কি? ব্যাপারটা জানা দরকার তার কাছ থেকে। আচ্ছা মগজ মিয়া একটা প্রশ্নের উত্তর দাওতো এখন- ধরো সামনে আগুন জ্বলছে।
আমার কি করা উচিত? আগুনে হাত দিবো? নাকি দিবো না?
-- এটাতো সোজা ব্যাপার। আগুনে হাত দিলে পুড়ে যাবেন আর না দিলে পুড়বেন না।
-- এখন হাত দিবো? নাকি দিবো না? সেটা বলো।
-- আমি কি জানি?
-- তুমি জানো না? ও আচ্ছা যাই আজ। ভালো থেকো।
বিবেক দা'কে দেখার বড় শখ। দেখে আসি একবার. .
-- বিবেক দা, কৈ আপনি?
-- আছিতো। যাইনি এখনো।
-- কোথায় আপনি? কবে থেকে আছেন?
-- কবে থেকে আছি তা তো জানি না। তবে আছি।
-- আচ্ছা বিবেক দা, প্রেম করা দরকার না একটা? সবাইতো করে।
-- বয়স কতো? কি করো? দায়িত্ববোধ কাকে বলে জানো? ভালোবাসা কি জিনিস তা জানো? এত মেয়ের ভিড়ে আদর্শ মেয়ে বেঁছে নিতে পারবে তো? তুমি কি এখন মানুষিক ভাবে ভালো আছো? কতটা ভালো আছো? আগের থেকে বেশি না কম? উপার্জন করো তো? বাবা মা আছে তো? তুমি না স্টুডেন্ট? পড়ালেখা কেমন চলছে?
-- বলেন কি এগুলা? এত প্রশ্ন কেন? জীবনে কি আনন্দের দরকার নেই নাকি? এত প্রশ্ন দিয়ে জীবন বেঁধে রাখলে কিভাবে হবে?
-- তোমার সামনে আগুন আছে। আগুনের শিখা দেখতে অপূর্ব। একটা চুমু দিয়ে দাও অপূর্ব সুন্দর ঐ আগুনের শলাকাতে।
-- কি বলেন এগুলা? আগুন দিয়েতো অন্ধকার ঘর আলোকিতো করেছি।
চুমু দিলে ঠোঁট পুড়ে যাবে না? ঠোঁটে পোড়া দাগ হয়ে যাবে। নিজের ক্ষতি।
-- এগুলা বুঝতে পারো?
-- হ্যাঁ বিবেক দা। আপনি সত্যিই জ্ঞানী। আমার সাথে থাকবেন তো সর্বদা?
-- তুমি যথাযথ আপ্যায়ন করলে থাকবো অবশ্যই...।
-- তাহলে থেকো যান প্লিজ। মাঝেমাঝে আমাকে একটা করে চড় মারবেন।
ණ รเทนร
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।