ভালো আছি
দেশের এই অস্থির পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের কোনো দাওয়াই না দিয়ে হেফাজতে ইসলাম যেভাবে বক্তব্য দিচ্ছে, সেটা কি যৌক্তিক মনে হয় ? এই সংগঠন যেহেতু অরাজনৈতিক, সুতরাং হাফেজ্জী হুজুরের মতো মধ্যস্থাকারীর ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে পারলে কি ভালো হতো না ? সেই চেষ্টা কি আদৌ আছে ?
যে কথাই বলুক, এখন এদের দাবি দেশকে আরো অস্থিতিশীলতার দিকে নিয়ে যাবে নিশ্চিত । ফায়েদা লুটবে বিএনপি-জামায়াত । বিরাট একশ্রেণীর মানুষের কাছে অনেকটা পরিস্কার হয়ে যাবে যে আসলে বিরোধীদলের দাবার গুটি এখন হেফাজত ।
হেফাজতে ইসলাম ভোট-নির্বাচনে যাবে না । কেন যাবে না ? নির্বাচনে না গেলেই কি অরাজনৈতিক হয়ে যায় ? তাছাড়া রাজনীতি কি ইসলামে নিষিদ্ধ ? গণতন্ত্র সম্পর্কে হেফাজতের মাতদর্শ কি- সেটা জানা দরকার ।
জায়েয মনে না হলে সবাইকে খোলাখুলি বললেই হয় । আমার ব্যক্তিগত মত হলো , স্বৈরতন্ত্রের চেয়ে গণতন্ত্র অনেক সহনীয় । খেলাফত প্রতিষ্ঠার মতো পরিস্থিতিতে যেমন আমাদের নেতৃবৃন্দ নেই, তেমনি দেশের মানুষও প্রস্তুত নয় । মেজরিটি পার্সেন্ট ইসলামী নেতারা যেহেতু এখানে আছেন, তাদের নিয়ে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের সূচনা হতে পারে না ?
জনগুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে ইসলামওয়ালাদের নীরবতা প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে উঠেছে । গার্মেন্ট শিল্পের বিপর্যয় নিয়ে তাদের কথা বলতে শুনলাম না ।
সুন্দরবনের পাওয়ারপ্লান্ট নিয়ে কোনো উক্তি এলো না । এখন যে নিত্যদিন মানুষ মরছে, তা নিয়েও তাদের কিচ্ছু করার নেই । কোটিকোটি শিক্ষার্থীর অন্ধকার ভাবিষ্যত এবং প্রশ্নপত্র ফাঁসের মতো দুর্ঘটনাও আমাদেরকে নাড়া দেয় না । কারণ ওসব আমরা পড়ি না, করি না, আমাদের কি আসে যায় ? যারা করে-পড়ে তাদেরকে মুসলিম মনে হয় তো উনাদের– কে জানে ?
ইসলাম ধর্মটাকে উনারা কবে না জানি বিরক্তিকর বিষয়ে পরিণত করে- সেই শঙ্কায় আছি । মনে পড়ে হেফজখানায় আজানের আওয়াজ দেয়া একটা কলিংবেল ছিলো ।
দুপুরে ঘুম থেকে জাগাতে হুজুর অনবরত সেটা বাজিয়ে যেতেন । মধুর সুর । কিন্তু কাঁচা ঘুমের তোড়ে বারবার সেই আওয়াজটা................বাকিটা বলার মতো সাহস আমার নেই ।
কথায় কথায় শুধু আ.লীগের ওপর বিষোদগার আর দেশে ইসলাম গেলো গেলো বলে হৈ চৈ । এভাবে আন্দোলনের ফলেই জনসম্পৃক্ততা হারাচ্ছে নেতারা ও তাদের দল ।
অথচ যোগ্যতার অভাব এত প্রকট এবং প্রত্যেকেই নিজেকে যেভাবে যোগ্যতর আর সবাইকে অযোগ্য মনে করে যেভাবে বিবৃতি আসে, শেখাসাদির কথা মনে হয়, পৃথিবী থেকে বুদ্ধি উধাও হয়ে গেলেও এরা বলবে আমি সবচে’ বড় বুদ্ধিমান ।
রাজনীতিতে এখন সচেতন তরুণদের আগমনের সময় হয়েছে বলে মনে হয় । পদ হারাবার ভয় না করে যদি তারা তরুণদের জায়গা দেন, তাহলে মন্দ হবে না ।
এদেশে রাজনীতি করতে হলে দেশকে নিয়ে ভাবতে হবে সাবার আগে । দেশের মানুষের মন-মগজ বোঝার কাজটাই গুরুত্বপূর্ণ ।
মানুষের ভাষায় কথা বলা শিখতে হবে । যে দেশের মানুষ কোরআনের মতো বিশ্বস্ত মনে করে প্রচারযন্ত্রের আওয়াজ, এমনকি কোরআনকেও বিচার করে প্রচারযন্ত্রের মানদণ্ড দিয়ে, সেখানে অনেক কিছু বাকি আছে নেতাদের । মানুষের চাওয়া-পাওয়ার অনুকূলে রাখতে হবে মানবিকতার যুক্তি । তাহলেই ইসলাম ফুটে উঠবে ।
শেষ করতে গিয়েও একটা প্রশ্ন না শুধিয়ে পারছি না ।
দুই কুকুর এক মড়কের গোশত খেতে পারলেও দুই হুজুর এক কাঁথার নিচে শুতে পারে না– মানুষের মুখে মুখে রটে চলা এই বঞ্চনার জন্য দায়ী কে ?
আরো অনেক প্রশ্ন আছে...ধারাবাহিক দেয়ার আশা আছে...
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।