আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

জার্গেনসেনের ‘শোডাউন’

পরশু রাতে শারজায় আফগানিস্তান যখন নাভিশ্বাস তুলে ফেলছে পাকিস্তানের, নিজের ফ্ল্যাটে তখন টিভির সামনে বিরক্ত বসে শেন জার্গেনসেন। অনেক আগ্রহ নিয়ে আফগানদের খেলা দেখছিলেন। হঠাৎই বিগড়ে গেল টিভি, সঙ্গে জার্গেনসেনের মেজাজও। শেষটা আর দেখা হলো না। তবে জাতীয় দলের কম্পিউটার অ্যানালিস্ট নাসির আহমেদকে বলে রেখেছিলেন আগেই।

আফগানদের পারফরম্যান্স কাটাছেঁড়া করার জন্য তাই ভিডিও রেকর্ডে বন্দী আছে পাকিস্তান-আফগানিস্তান ম্যাচ।

বাংলাদেশ ক্রিকেটে এখন সময়ের আলোচিত ‘শত্রু’ আফগানিস্তান। দেশের মাটিতে বাংলাদেশের বিশ্বকাপ প্রথম দিনেই শেষ করে দিতে পারে আফগানরা। বাংলাদেশ কোচের আয়োজন করে খেলা দেখতে বসাই বলে দিচ্ছে, যথেষ্টই গুরুত্ব পাচ্ছে আফগানিস্তান। তবে এই গুরুত্ব মানে শুধুই শ্রদ্ধা, ভয় একটুও নয়।

আফগানিস্তান গ্রুপসঙ্গী হওয়ার পর গত কিছুদিনে বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা যা বলে আসছেন, কোচের কণ্ঠেও তাঁর প্রতিধ্বনি, ‘প্রাথমিক পর্বে আফগানিস্তানই আমাদের মূল চ্যালেঞ্জ, এতে কোনো সন্দেহ নেই। ওদের নিয়ে আমাদের হোমওয়ার্ক করতে হবে। তবে খুব দুশ্চিন্তার কিছু নেই। অযথা চাপ নিলে আমরা গুটিয়ে যাব। স্বাভাবিক খেলাটা খেলতে পারব না।

মনে ভয়কে বিন্দুমাত্র প্রশ্রয় দিলে চলবে না। ম্যাচের ফল নিয়ে ভাবলে চলবে না। স্বাভাবিক খেলাটা খেলতে পারলে আমরা এমনিতেই জিতব। ’

পরশু পুরো খেলাটা দেখতে না পারলেও আগে খেলা দেখার সুবাদে আফগানদের সম্পর্কে মোটামুটি ভালোই ধারণা আছে জার্গেনসেনের। যা দিয়ে ক্রিকেট-বিশ্বের নজর কেড়েছেন নবী-জাদরানরা, বাংলাদেশ কোচেরও আলাদা করে চোখে পড়েছে আফগানদের সেই ভয়ডরহীন মানসিকতা, ‘দলটির বোলিং বেশ সুশৃঙ্খল।

আর ব্যাটিংয়ে ওরা কোনো বোলারকেই ভয় পায় না। মাঠে মানসিকতা ভয়ডরহীন, আক্রমণাত্মক। আমার মনে হয় ওরা ক্রিকেটটা খেলে আবেগ দিয়ে, মাঠে সর্বস্ব উজাড় করে দেয়। ছন্দ খুঁজে পেলে ওরা বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে। এই ব্যাপারগুলো আমাদের সামলাতে হবে।

চাপে পড়লে যেন আমরা আতঙ্কিত না হই। ছোট ছোট ব্যাপারগুলো ঠিকঠাক করতে হবে। সেটা পারলে আমাদের না জেতার কারণ নেই। ’
ওই মহারণের জন্য নিজেদের প্রস্তুত করতেই কাল থেকে জাতীয় দল ও ‘এ’ দলকে নিয়ে শুরু হচ্ছে টি-টোয়েন্টি চ্যালেঞ্জ সিরিজ। প্রস্তুতির জন্য এমন একটা সিরিজ খুব করে চাইছিলেন বাংলাদেশ কোচ।

কারণটা ব্যাখ্যা করলেন কাল, ‘আমার কাছে এই টুর্নামেন্ট এক ধরনের “শোডাউন”। দেশের মাটিতে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে দেশকে প্রতিনিধিত্ব করার আকাঙ্ক্ষা কার কতটা তীব্র, সেটি দেখার সুযোগ। কারণ দাবি করার মতো জায়গা দলে বেশ কিছুই আছে। আর অনুশীলনের ব্যাপারটি তো আছেই। আমি চাইছিলাম দেশের সেরা ২৫-২৬ জন ক্রিকেটার যেন তুমুল প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ একটি সিরিজ খেলে।


গত নিউজিল্যান্ড সিরিজের আগে দুই দলে ভাগ হয়ে খুলনায় একটি প্রস্তুতি ম্যাচ খেলেছিলেন মুশফিক-মাহমুদউল্লাহরা। ওই ম্যাচের প্রতিদ্বন্দ্বিতার ঝাঁজ দারুণ মনে ধরেছিল জার্গেনসেনের। এই সিরিজেও কোচ চাইছেন তেমন কিছুই, ‘সবাইকে আমি এই বার্তাটা দিয়েছি যে এটি দারুণ সিরিয়াস একটি টুর্নামেন্ট। বন্ধু-সতীর্থ বলে কিছু যেন না থাকে। মাঠে নামার পর প্রতিপক্ষকে হারানোর ইচ্ছার তীব্রতাটা যেন ফুটে ওঠে।

আর টি-টোয়েন্টি নিয়ে আলাদা করে ভাবার সময় এমনিতে খুব কম মেলে। এই সপ্তাহে আমরা শুধুই টি-টোয়েন্টি নিয়ে থাকব। রিভার্স সুইপ, সুইচ হিট, স্কুপ বা ইয়র্কার, রান আটকানো—এসব নিয়ে কাজ করা হবে, নানা রকম পরীক্ষা-নিরীক্ষা হবে। ’
এই তিনটি ম্যাচ ছাড়া বিশ্বকাপের আগে আর মাত্র চারটি টি-টোয়েন্টি খেলতে পারবে বাংলাদেশ। শ্রীলঙ্কা সিরিজে দুটি, বিশ্বকাপের আগে প্রস্তুতি ম্যাচ দুটি।

জার্গেনসেনের কাছে এটিকেই যথেষ্ট বলে মনে হচ্ছে, ‘এটি আমার চতুর্থ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ (এর আগে নিউজিল্যান্ড দলের সঙ্গে থেকে দুটি, বাংলাদেশের হয়ে একটি)। অতীত অভিজ্ঞতা থেকে বলছি, টি-টোয়েন্টিতে অনেক আগে থেকে প্রস্তুতি নেওয়া বা খুব বেশি গুরুত্ব দেওয়া আসলে কোনো কাজে দেয় না। প্রস্তুতি থাকতে হবে অল্পদিনের, কিন্তু লক্ষ্য থাকতে হবে একদম সুনির্দিষ্ট। খেলার ধরনটাই তো এমন। বিশ্বকাপের আগে আরও দু-একটি ম্যাচ বেশি খেলার সুযোগ হলে অবশ্যই খেলব।

কিন্তু না হলেও ক্ষতি নেই। দুর্বলতাগুলো নিয়ে ম্যাচ পরিস্থিতির মতো করে অনুশীলনই যথেষ্ট হবে আশা করি। ’

সোর্স: http://www.prothom-alo.com

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।