গুরু সিরাজ সাঁই
প্রেম জিনিসটা মনের ব্যাপার,দুটি আত্নার বন্ধন;এব্যাপারে নো ডাউট কিন্তু প্রেমে পড়ার বিষয়টা অবশ্যই ভাবনার? মনে ধরলো আর অমনি প্রেমে পড়ে গেল!বিষয়টা অত সহজ নয়,কেননা মনে ধরার ক্ষেত্রে রুপের বিষয়টি সামনে চলে আসে.ছেলেরা সাধারনত কুৎসিত চেহারার মেয়েদের প্রেমে পড়ে না… বিশেষ করে হ্যান্ডসাম ছেলেরা.সমাজে সুন্দর চেহারাওয়ালা খুব কম সংখ্যক ছেলেকেই দেখা যায় অসুন্দর মেয়ের প্রেমে হাবুডুবু খেতে.
দুধে আলতা বদন তোমার
চন্দনের সুভাস ভরা
দুটি দীঘল কাজল আঁখি
যেন মেঘের কাজল পড়া,
তোমার নরম দুটি ঠোঁটে
ফুটে লাল পদ্ম ফুল,
যেন রেশমী সূতোর গোছা
তোমার মাথার ঐ না চুল!
নায়কের বিপরীতে নায়িকা দেখিতে অসুন্দর এমন কোন বাংলা সিনেমা বকুলের এখনও চোখে পড়ে নি. প্রেমে পড়ার ক্ষেত্রে সৌন্দয্য অনেক বড় একটা ফ্যাক্টর;এটা অবশ্য মেয়েদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়, তারা দেখে ছেলেটা manly কিনা… personality কেমন, এবিষয়গুলো ! ছেলেকে রুপবান হতে হবে…এটা খুব মেয়েই দ্যাখে.
কিছু কিছু চৈনিক মেয়ে আছে যাদেরকে পুতুলের মাঝে দাঁড় করিয়ে দিলে গানের সুরে বলা যাবে,
“তুমি মানুষ নাকি পুতুল!
বিধি নিজেই জানে না”
বকুলের প্রেমে এমন কোন চৈনিক পুতুল পড়ে নি বরং অসুন্দর চেহারার খাটোকায় একজন পড়েছিল. মেয়েটির সাথে পরিচয় হয় walmart সুপারশপের কাউন্টারের কিউতে, লাইনে তার পেছনে দাঁড়ানো ছিল. মেয়েটি নিজ থেকে “where u from” জিগানোর মধ্য দিয়ে তার সাথে কথা বলা শুরু করে. সে একটা রাইস কুকার কিনেছিল যেটার warranty card সংক্রান্ত ব্যাপারে service centre এর লোকের সাথে চাইনিজ ভাষায় কথা বলতে মেয়েটি তাকে হেল্প করে.
এতদিন সে বিশ্বাস করত, কোন মেয়ে যদি মন থেকে সত্যি সত্যি তার প্রেমে পড়ে তাহলে সে আর মুখের কাঠিন নিয়ে মাথা ঘামাবে না. কিন্তু নাহ, তার ধারনা ভুল প্রমাণিত হয়েছে. বন্ধু-বান্ধব আত্নীয়-স্বজনের সাথে মিলেমিশে বসবাস করতে হয়, একটা হ্যান্ডসাম ছেলে যখন অসুন্দর কারো হাত ধরে বন্ধুমহলে হাজির হয় তখন শুধু আড়ালে আবডালে নয় একেবারে মুখের সামনে কটুক্তি করে ফেলে কেউ কেউ. অনেক প্রেমিক আছেন যারা আত্নার টানে বিয়ে করে ফেললেও বিয়ের পরে ধীরে ধীরে তাদেরও মন উঠে যায়. বকুলদের ডরমে এরকম এক ছেলে আছে যে বাচ্চাসহ সস্ত্রীক থাকে, কোন party তে কেউ তাকে দাওয়াত দিলে হয় সে একা যায় অথবা বাচ্চা মেয়েটাকে কোলে করে নিয়ে যায়, বৌকে কখনো সাথে নেয় না, কলিগদের সাথে পরিচয় করিয়ে দেয় না.
এবিষয়গুলি নিয়েই “লি-ছুন/ And the spring comes” নামের মুভি যেখানে এক অসুন্দর চেহারার অপেরা মহিলা শিল্পী সুদর্শন ছেলের প্রেমে পড়ে যার কিনা স্বপ্ন চিত্রশিল্পী হওয়ার. জাস্ট বিয়ে করতে হয় তাই বিয়ে করা, এরকম টেনডেনসি নেই তার মধ্যে. কোন কোন পুরুষ তার পাণি-
প্রার্থী হতে চায় কিন্তু সে ফিরিয়ে দেয়. মাঝবয়সী হলেও এখন কুমারী এ গোপন তথ্যও যুবককে বলে, ছেলেটি তার প্রতি দুব্বল হলেও শেষমেষ আর পারে নাহ! দূরে অজানায় চলে যায়. মুভির নায়ক পারলেও বকুল সেটা পারে নি
বকুলের অগোছালো জীবন, প্যান্ট খুলে রুমের ফ্লোরেই ফেলে রাখে, পড়ার কাপড় আয়রন করা তো দূরের কথা.. কখনও হ্যাঙ্গারেই রাখে না. বিছানার উপর, চেয়ারে তথা ছড়ানো ছিটানো. ঘুমের মধ্যে গড়াগড়িতে বিছানার চাদর এই যে একবার নিচে পড়েছে ঐভাবেই থাকে, আর উঠানো হয় নাহ. “চাং-সিন/delighted happy” নামের মেয়েটি তার রুমে এসে ফ্লোর ঝাড়ু দেওয়া, চাদর টান টান করে বিছিয়ে দেওয়া, কাপড় ভাজ করে আলমারিতে রেখেই নিবৃত হয় না অধিকন্তু সোপ-কেস কিনে এনে বেসিনে রাখে. বকুল কাগজের মোড়ক থেকে বের করে কাজ শেষে পুনরায় ওটার ভিতরে ঢুকিয়ে রাখতে অভ্যস্ত আর ওয়াশরুমের মেঝে মাঝাঘষার তো প্রশ্নই আসে নাহ! চাং-সিনের বদৌলতে সব ঝকঝকা চকচকা. এগুলো দেখে বকুলের মধ্যেও চেঞ্চ আসা শুরু হল, সে কিছু ফুলের টপ কিনে আনলো, গোল্ডফিশসহ ৬ পদের ২৮টা মাছ কিনে আনলো, হাই-কমটের পানি যেন ব্লু কালার দেখা যায় তার জন্য toilet cleaning blcoks. সে সাধারনত ৭/১০ দিন পর পর সেভ করে, সেখানেও চেঞ্চ আসলো. এতদিনের বদভ্যাসের কারনে সেভ করতে আলসেমি দেখালে মেয়েটি জোর করে নিজেই সেভ করিয়ে দিত.
মেয়েটি চলে যাওয়ার পর সে বুঝতে পারতো, তার জন্য এক ধরনের টান অনুভব করছে তবে সেটা দৈহিক নয়, অগোছালো জীবন গোছালো হয়েছে যার জন্য তার প্রতি টান না থেকে পারে! মেয়েটি কনজারভেটিভ মাইন্ডের তবে এই রক্ষণশীলতা বাংলা সিনেমার নায়িকাদের ডায়ালগের মত নয় :p লাজ-লজ্জার মাথা খেয়েছো নাকি! শরীর ঘেষে বসবে নাহ, এই আমি বলে দিলুম. আর কোলাকুলির তো প্রশ্নই আসে না :p কেউ দেখে ফেল্লে কেলেঙ্কারি হবে.
চাং-সিনের রক্ষণশীলতার লেভেল গানের মধ্য দিয়ে ফুটিয়ে তোলা যায়-
“ইচ্ছে করে বিয়ান সাবরে কত কিছু করি
কি যে করি, কেমনে করি
সেই চিন্তাতে মরি!
এমন কথা বইলেন নাগো… কাঁপি আমি ডরে
যদি কিছু করেন বিয়াই… কইরেন বিয়ার পরে;
বিয়ান সাব আপনে বড় চালাক চতুর নারী
এত কাছে আসি তবু ধরিতে না পারি
আর কটা দিন ধৈয্য ধরে থাকেন বিয়াই দূরে
বাসর-ঘরে টানুম কাছে ভাটিয়ালী সুরে”
বকুলের মনে হয় কনজারভেটিভ-ওপেন মাইন্ড বিবেচনায় চাইনিজ ইয়াংদের তিনটা ক্যগাটরীতে ফেলা যায়-
১. কোলাকুলি ও কমলার কোয়া খাওয়া-খাওয়ি হলেও ফাইনাল রাউন্ড বাসর রাতের জন্য উঠিয়ে রাখে.
২. ঠাকুর ডুবানো সহ সবই হবে তবে শুধু এক bf এর লগেই এমনকি ই-তি লিয়েন/long distance relationship হলেও.
৩. কেউ কেউ পাশ্চাত্যের অনেকের মত ওপেন মাইন্ডেড.
বকুলের সাথে তার প্রায় প্রতিদিনই দেখা হয়, এক সাথে খাওয়া-দাওয়া করে, নদীর ধার ঘেষে হাঁটে. তার মাথায় একটা ভাবনা ঘুরপাক খায়, আচ্ছা এত এত সমাজের এত এত লোক ওপেন পরিবেশে ঔষ্ঠ্য-অধরার ছোঁয়া ঘটায়, এতে কেমন ফিলিংস হয়. এতগুলো চোখের সামনে এই কম্মটি করতে গেলে মনের মধ্যে কি ঘটনা ঘটে দেখা দরকার, তো একদিন পাব্লিক প্লেসে শরমের মাথা খাইয়া বহু কষ্টে তার ঔষ্ঠ্য মেয়েটির অধরায় স্পর্শ করাল, এরপর মনে হল যেন তার মুখ লজ্জায় লাল হয়ে এখন মরে যেতে চাচ্ছে. বকুলের জীবনে এরকম কিস শুধু প্রথমই নাহ সম্ভবত লাস্টও :p
একদিন মেয়েটি জিগায়,সামনের বসন্ত উৎসবে তুমি আমার সাথে মোর বাড়ি যাবা?
কথাটি তার কানে যেন সুর তোলে-
“তুমি যাবে ভাই, যাবে মোর সাথে
আমাদের ছোট্ট সোনারগাঁয়”
“যেথায় কোকিল ডাকে কুহু
দোয়েল ডাকে মুহু মুহু
নদী যেথায় ছুটে চলে আপন ঠিকানায়”
একচুয়ালি গ্রাম দেখানোর উদ্দেশ্যে নয়, যেজন্য বলেছে সেটা হল গিয়ে- যাদের bf/ হাজব্যান্ড নাই, এধরনের চৈনিক মেয়েদের একটু অস্বত্বকির অবস্হায় পড়তে হয়, সবাই জিগায় “তোমার নান-ফং-ইঅ/bf কই” কিংবা“ নাই কেন?” ব্লা ব্লা ব্লা. Chinese new year/ spring festival এর ছুটিতে ৩০/ এর বেশি বয়সের মেয়েরা যখন বাড়িতে যায় বাবা-মা/আত্নীয় স্বজনের সান্নিধ্য পেতে তখন কেউ কেউ অস্বত্বকির পরিস্হিতি এড়াতে পরিচিত কোন ছেলেকে হয়ত ম্যানেজ করে bf বানিয়ে নিয়ে যায়. দু’একজন অনলাইন http://www.taobao.com থেকে bf ভাড়া করে নিয়ে যায়. বকুল একদিন এই ওয়েবসাইটে গিয়ে দেখেছিল একজনের প্রোফাইলে লেখা per night/600 yuan অবশ্য ব্র্যাকেটে লেখা আছে আলোচনা সাপেক্ষে রেট কমানো যাবে.
চাইনিজ ছেলেরা তাদের জীবনসঙ্গিনীর ভেনেটি ব্যাগ নিজে বহন করে আর মেয়েটি খালি হাতে ঘুরে. এবার একটু চিন্তা করুন ফার্মগেটে কোন যুগল হেঁটে যাচ্ছে আর ছেলের হাতে পার্স !!!
চৈনিকদের কাছে বিষয়টা রিলেশনের গভীরতার বহিঃপ্রকাশ, অন্যদেরকে বুঝিয়ে দেওয়া যে এ তার bf ঠিক যেমনটি দুনিয়ার অন্যতম দামী সুমধুর ৩ টি শব্দ বলার সময় মানুষ গোলাপ ফুল সামনে ধরে. মাঝবয়সী স্বামীরাও এমনকি বুড়োরাও করে. বকুল একদিন ফাঁকা রাস্তায় এই কাজটা করেছিল, কি ধরনের অনুভূতি হয় এটা দেখতে. কেমন যেন নিজেকে হিজড়া হিজড়া মনে হচ্ছিল, সত্যি বলতে কি.. এটা সংস্কৃতিগত তফাৎ, মানুষ ছোটবেলা থেকে যেটা দেখতে দেখতে বড় হয় সেটাই তার কাছে স্বাভাবিক মনে হয়.
রাস্তায় চলার সময় মেয়েরা ছেলের কাঁধে চড়ে, দুই হাত দিয়ে গলা জড়িয়ে ধরে আর দুই পা দিয়ে কোমড় বুক আঁকড়িয়ে থাকে. ছেলেরা মনুষ্য বস্তা নিয়ে বাস ষ্টপে দাঁড়িয়ে থাকে কিংবা ফুটপাতে হেঁটে চলে. কল্পনা করুন ঢাবির ফুলার রোডে কিংবা রাবির প্যারিস রোডে কেউ এমন করছে!
চাইনিজ ছেলেরা এটা পারে কারন অধিকাংশ মেয়ের ওজন ৫০ কেজির কম. ৫০ কেজি হওয়ার আগেই মেয়েরা ডায়েট কন্ট্রোল করা শুরু করে. এদের টার্গেট থাকে কোমড় হবে ২১ এমনকি বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া এমনও মেয়ে আছে যাদের কোমড় ১৭, এদের অনেকেই রাতের বেলা ভাত না খেয়ে শুধু ভুট্টা সিদ্ধ খায়. হালকা পাতলা হওয়ায় লাফ দিয়ে ছেলের কোলের উঠে দু’পা দিয়ে পিঠ জড়িয়ে ধরে ঝুলে ঝুলে ঔষ্ঠ্য-অধরার ছোঁয়া ঘটায়.
বকুল একদিন ফাঁকা রাস্তায় মনুষ্য বস্তা নিয়েছিল, কি ধরনের অনুভূতি হয় এটা দেখতে. কিছু কিছু মেয়েকে দেখা যায়, পিঠে bf কে নিয়ে হাঁটার চেষ্টা করে :p কয়েক কদম পা ফেলতে স্বক্ষমও হয়. দেখতে হালকা মনে হলেও গায়ে শক্তি আছে, শরীর ভূষা না.. গায়ে আগলা মাংস নাই, একেবারে নিরেট এজন্য পরিশ্রম করতে পারে খুব.
প্রেমে পড়লে নাকি ছেলেদের মধ্যে কবি কবি ভাব চলে আসে, বকুলেরও তাই হলো, সে একখান গান লিখে ফেল্ল-
অনলাইন ডিভাইসে শুধু তুমি
আছো গো তুমি মোর ফেবুতে…….. অনলাইন-অফলাইন দুটোতে
দিলে গো স্ট্যাটাস…. কমেন্টে দেই ট্যাগ তোমায়, শুধু তোমায়
বিনা ট্যাগে দেই না…কোন ছবি আপলোড, কোন ছবি আপলোড
পারো গো দেখতে তুমি ফ্রেন্ডলিস্ট…. পারো গো দেখতে চ্যাট হিস্ট্রি
নাই গো কিছু লুকোনো তোমারো কাছে…. জানো তো তুমি মোর পাসওয়ার্ড
মোর পাসওয়ার্ড
তুমি আছো টুইটারে ফলোয়ারে…. করলে গো টুইট, দেখতে তো পাও তুমি তৎক্ষনাতে
তুমি কল করলে মোবাইলে ভেসে উঠে তোমারই চান মুখ
সেই লগে রিংটোন তোমারই ডাকা সুর….. জান, ওগো জান, মেরা জান
যখন যেখানে রাত বিরাতে যে অবস্হাতেই থাকি না আমি….
দেখোতো তুমি তা টেলিটক থ্রিজিতে….ভিডিও কলে
সময়ে অসময়ে স্কাইপেতে নক করো তুমি…. শুধু তুমি
পৃথিবীর যেখানে যেপ্রান্তেই থাকি না কেন….. ভাইবারে পাঠাও ভয়েস মেসেজ.. ভয়েস মেসেজ
তুমি মোর ল্যাপটপের ডেস্কটপ ব্যাকগ্রাউন্ড…ব্যাকগ্রাউন্ড
যদি গো পড়ি আমি গুগল গ্লাস …. পড়ে না কিছু চোখে.. তোমার কায়া বিহনে
তোমার কায়া বিহনে
এ্যাড আছো তুমি লিঙ্কড-ইনে, দেখো তো তুমি মোর প্রফেসনাল এ্যাকটিভিটি
অনুসরণ করছো তুমি আমার ছন্দনামে খোলা ব্লগে… নাই গো কিছু লুকোনো তোমা থেকে
তবু কেন করো তুমি আমায় অবিশ্বাস…. অবিশ্বাস
যদি কোনদিন তুমি যাও গো ছেড়ে….
তবে বলে যেও কেমনে ভুলিব আমি তোমায়… অনলাইন ডিভাইসে
এটার চাইনিজ অনুবাদও করে ফেললো আংশিক চেঞ্চ এনে যেমন- facebook এর জায়গায় chinese renren.com, skype এর বদলে QQ, twitter এর বদলে weibo. ইন্টারনেট জগতে চাইনিজরা অনেকটাই স্বনির্ভর. বাংলাদেশী কোম্পানি বিডিদের ফেবু ওয়ালে এড দেয়, টাকা যায় জাকারবাগের কাছে কিন্তু চীনে উল্টো.
你在QQ,还在QQ空间
你在微信,还有陌陌
你是我的帽子,还穿的衣服
你你你 只你
[rap: ah ah 好了 en en 好吧 ai ai 好好 ]
你在人人网,还在朋友
你在微博,还有优酷
你是我的眼镜,还穿的内衣
[rap: 说啥啊]
你在手机,还在电脑里面
你在睡觉,还有梦想
总是在心里,还在外面
你你你 只你
[rap: 干哈呢]
在天空笑的月亮,那是就你
明星闪,那也你
怎么忘你,你说呢
বকুল বৃষ্টিস্নান করতে করতে ডরমে পৌছাল, ইন্টারন্যাশনাল ডরম ! তার রুমের পূব পাশের রুমে কখনও বাজায় রিপুতে ঝক্কার তোলা সঙ্গীত, পশ্চিমের রুমে hey willi willi dance, অপজিট রুমে sun raha hai na tu, তার পশ্চিমেরটায় Bob marley'র যোগ্য উত্তরসূরী Sandman বা অন্যন্যদের র্যাপ, তার পাশেরটায় ব্রিটিশ জেন্টেলম্যান বাজায় রক& রোল; অপজিট রুমের পূব পাশের রুমে কখনও এ্যারাবিক. কেউ হয়ত রাত অবধি আবার কেউ সকাল বেলাই শুরু করে. উইকেন্ড/হলিডেতে কোন নিয়ম নাই, অনেকসময় হয়ত কারো অবজেকশনে কেউ নিবৃত হয়. এগুলো নিয়ে তার প্রোব নাই, সে এমন এক ছাওয়াল যে লাইট জ্বালানো থাকলেই কি আর মিউজিক বাজলেই কি ঘুমে ধরলেই কাত!
রান্না এমনি এক জিনিস যেটার ক্ষেত্রে এই যুগেও এখনও জাতিতে জাতিতে তফাৎ সুস্পষ্টভাবে বিদ্যমান, নানান মানুষ নানান রেসিপিতে রান্দে এছাড়া বেবাক কিছুই পাশ্চাত্যের হাওয়ায় মিলেমিশে একাকার হওয়ার পথে সে পোশাকই বলেন আর ঘরের আসবাবই বলেন. রান্নাঘরের বেসিনের পাশেই পোলাপান তাদের থালা-বাটি মাজনি, পাতিল-কড়াই রেখে আসে. অনেক সময় একজন অন্যজনেরটা ইউজ করে কিন্তু পরহেযগার মুসলিমগণ হালাল খাবার বিবেচনায় অমুসলিমদেরটায় হাত দেন না এবং নিজের জিনিস এক সাইড করে রাখেন. এছাড়াও পিতপিতানি টাইপের লোকজন যারা নিজের জিনিস ছাড়া মেন্টাল তৃপ্তি পান না উনারাও নিজ জিনিস আগলে রাখেন. দুইডা রান্নাঘর, একটার দরজায় পোলাপান লাগিয়ে দিছে 'this kitchen only for Muslim'
প্রতি ফ্লোরে ৫০ এর অধিক রুম কিন্তু রান্নাঘরের অবস্হান একেবারে পূব পাশে আর তার রুম মাঝখানে. একটু দূরে হওয়ায় সে যেমন কোন সুঘ্রাণও পায় না আবার বিদঘুটে গন্ধও না যেমন- ভিয়েতনামিজদের রান্নার সময় বের হওয়া বিচিত্র ঘ্রাণ ! অবশ্য যাদের রুম রান্নাঘরের পাশেই তারা সুঘ্রাণ পেয়ে ঢুঁ মেরে বলতে পারে- u look like professional chef, smell so good তখন হয়ত রান্না করা লোকটি বলে, plz have a taste :p
কেউ একেবারে উপরের তলায় নামাজের রুমে যান, কেউ বাসে করে দূরের Church এখানে আবার দু'ভাগ আছে catholic ও orthodox church.
শনি রবি উইকেন্ড হওয়ায় শুক্রবার রাত হল আনন্দ করার টাইম যাকে ঈদও বলা যেতে পারে. পরিবেশ এমন এক জিনিস যা ধরিয়ে দেয় কে সুযোগের অভাবে পরহেযগার, এমনও কেউ কেউ আছেন যারা জুমার নামাজ পরেন আবার রাতে নাইট ক্লাবে যান. তবে হ্যাঁ একথা কেউ অস্বীকার করতে পারবে না যে পরিবেশ মানুষকে চেঞ্চ করে ফেলে যেমন- অজপাড়াগাঁর অনেক হাবাগোবা ছেলে ঢাকায় ইউনিতে পা রাখার পর যেমন হয় তেমনি বৈদেশে এসেও অনেকের মন-মানসিকতায় বিরাট চেঞ্চ আসে. মানুষভেদে চেঞ্চেরও রকমফের আছে আবার এমনও লোক আছে যাদের মধ্যে নো চেঞ্চ, চুপচাপ স্বভাবের আর নিজের মতো চলেন. নাইজেরিয়ার এক শিক্ষক আছে যাকে প্রায় সময়ই একা চলতে দেখা যায়, SCI & EI তে অনেকগুলো পেপার অলরেডি পাব্লিশ করে ফেলেছে. আবার সেফল্ ফাইনান্সের এক পাকি ছাত্রের কথা শুনেছে যাকে ইউনি দেশে পাঠিয়ে হাফ ছেড়ে বাঁচছে. এক বাংলাদেশী বড় ভাইয়ের কাছে শুনেছে উনি নাকি একদিন ঐ ছেলের সাথে রাতের বেলা বেড়াতে বের হইছিল, রাস্তায় হাঁটতেছে তো হাঁটছেই; কোন কথা নাই, চুপচাপ হেঁটে অন্ধকারের দিকে যখন চলছে তখন বড়ভাই ভয়ে ব্যাক করে চলে আসছে. ইউনির অনেকে অনুমান করত সে আবার জঙ্গী টাইপের কিছু কিনা কারন বড় বড় দাঁড়ি ছিল এবং তার রুমে কখনও অন্য কাউকে নিত না, রহস্যে ঘেরা মানব.
এখানে ৭৫টা দেশের ৫০০'র উপরে ফরেন স্টুডেন্ট আবার অনেকে ফ্যামিলি নিয়ে থাকেন এই ডরমে. বৈদেশে এ্যারাবিয়ানদের তুলনায় অন্যান্য এলাকার মেয়েরা পোশাকের দিক থেকে বেশি পরহেযগার. একজন মাত্র মেয়ে স্টুডেন্ট মুখ ঢেকে বোরকা পড়ে সে সুদানের, আর আছে এক পাকিস্তানি ও সুদানিজ মেজরের বৌ; এই ৩ জনের শুধু চোখ দুইটা দেখা যায়.
মাঝে মাঝে লিফ্টে/ নিচতলায় প্রবেশদ্বারে এমন হয় যে কেউ বোরকা পড়া, কেউ সেলোয়ার-কামিজ, কেউ প্যান্ট T-shirt, কেউ 1/2 প্যান্ট, কেউ আবার হাফের হাফ 1/4. সে বড়ই বিচিত্রময় দৃশ্য, নানান মানুষ নানান চাল-চলন নানান বেশভূষা. লিফ্টে অপরিচিত একটা ছেলে ও একটা মেয়ে থাকে তখন কেমন যেন একটা পরিবেশ সৃষ্টি হয়, আনইজি আনইজি লাগে. বকুলের সবচেয়ে অস্বস্তি লাগে যখন সে একা এবং এক কাপোল যারা কিনা কমলার কোয়া খাচ্ছে :p
নিচতলায় গেস্টরুমে/ ছাত্ররা তাদের নিজরুমে Party দেয়, কোনটাতে এ্যালকোহলের কারবার নাই আবার কোন party তে পানির বিপরীতে বিয়ার; মিক্সড তথা মধ্যপন্হীদের party তে দুটোই থাকে. হালাল খাবার, অ্যালকোহলের ক্ষেত্রে অনেকেই রিলিজিয়াস নিয়ম-কানুন মেনে চললেও একটা বিষয় আছে যেটার ক্ষেত্রে অধিকাংশ লোকই নমনীয়.... তা হইলো গিয়া মেয়ে বিষয়টা, গাইরে মাহরামের ১৪ জনের ব্যাপারটা. বিপরীত লিঙ্গের প্রতি জন্মগত টানের কারনে অনেক পুরুষই নামাজ রোযা করলেও মেয়েদের সাথে আড্ডা দেন, প্রেম করেন কিংবা সেক্স করার সময় মেয়েটি কোন রিলিজিয়নের সেদিকে ভ্রুক্ষেপ করে না. পাশ্চাত্যের ওরা অবাক হয় যখন দেখে তার party তে এসে কোন মুসলিম ছেলে pork এর কোন কারবার নেই এমন রান্না করা খাবারও খাচ্ছে না, হালাল নয় বলে অথচ অমুসলিম কোন মেয়ের কমলার কোয়া ঠিকই খাচ্ছে! ঐ ঠোঁট দুটির কোষগুলি নিশ্চই হালাল খাবার দ্বারা গঠিত নয়.
ছোটবেলায় মহল্লার বড় ভাইদের মুখে শুনত প্যারিসের মেয়েরা নাকি এগ্রেসিভ, এটা সত্য কিনা জানে না তবে কয়েকজন আফ্রিকান ফ্রেন্ডের কাছে শুনেছে এমনও রাশান মেয়ে নাকি আছে..... ড্রাংক হয়ে রাত-দুপুরে কোন পোলার রুমের দরজায় জোরশে লাথ্থি মেরেছে. এখানে অধিকাংশ রাশান মেয়ের bf আফ্রিকান. আমরা অনেকেই কৃষ্ণাঙ্গদের দেখে নাক সিটকাই যাদের কিনা হালকা আলোতে শুধু দাঁত ছাড়া অন্য কিছু দেখা যায় না. একটা কথা সত্যি বলতে কি পৃথিবী যতই গ্লোবালাইজড্ হবে, বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর লোকজনের একই সমাজে বসবাস যত বৃদ্ধি পাবে মেয়েদের কাছে আফ্রিকান ছেলেদের ডিমান্ড ততই বৃদ্ধি পাবে. অনেক চাইনিজ মেয়ের bf ও দেখা যায় আফ্রিকান, একদিন এক দম্পতিকে দেখেছে তাদের বাচ্চাটা চাইনিজদের মত হলদে না হয়ে বাপের মত কৃষ্ণকায় ও কোকড়ানো চুলের.
একদিন রাত ১টায় তারা কয়েকজন রুমে আড্ডা দিচ্ছিলো সাথে মিউজিক চলছিল, হঠাৎ করেই দরজায় জোরে ধাক্কা. খুলতেই সেই মাপের ৪টি লাল চক্ষু যেন ঘটনা ঘটাই ফেলবে! আসল ঘটনা হল এক বিশাল দেহী রাশান ছেলে ও খাটোকায় ভিয়েতনামিজ পোলা, তারা গে হিসেবে পরিচিত. যাহোক খারাপ কিছু ঘটেনি, তাদেরকে বুঝিয়ে শুনিয়ে বিদায় করা হয়েছে, তারা ঠিক এই রুমের উপরের তলায় থাকে. এরা দুজন পরিচিত মুখ, প্রায় সবাই এদের কথা জানে তবে লেজবিয়ান হিসেবে কেউ পরিচিতি পায়নি. অবশ্য thirty first night party দেখেছে দুই মেয়েকে চুমু খেতে, ওটা হয়ত তারা জাস্ট ফান করে করেছে.
অনেকেই মনে করে বৈদেশে গেলেই পোলাপান নস্ট হয়ে যায়, একাধিক gf থাকে/ দুই দিন পর পর চেঞ্চ করে. একথাগুলো সবার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়, এমন অনেকেই আছে যারা এই ধরনের খোলামেলা পরিবেশে থেকেও মন থেকে বিশ্বাস করেন বিবাহ বিনে কোন নারীর পাণি গ্রহণ করবেন না; আবার অনেকে মন-প্রাণ দিয়ে চায় ইস্ আমার যদি gf থাকত! এরা শুধু আফসোসই করে কিন্তু কনজারভেটিভ মাইন্ডের হওয়ায় জড়তার কারনে চেষ্টা করে না; আবার এমনও কিছু হতভাগা আছে যারা চেস্টা করেও মেয়ে পটাতে পারে না. মেয়েদের কথার জাদু দিয়ে জালবন্দী করার ক্ষমতা সব ছেলের থাকে না, এদের জন্য বেস্ট ওয়ে ফ্যামিলি ম্যারেজ. অবশ্য টাকা ছিটিয়ে একটা ছেলে সহজেই একই সময়ে একাধিক gf পেলেও একটা মেয়ে পয়সা ছিটিয়ে একই সময়ে একাধিক bf নাও পেতে পারে. ফ্রি খাওয়া, ফ্রি ঘুরার লোভটা ছেলেদের মধ্যে কম.
বৈচিত্র্যময় ওপেন পরিবেশে জীবনসঙ্গিনী বিহীন কেউ গেলে তার যে কি ধরনের কস্টের মধ্যে রাত কাটে সেটা আমাদের সমাজের লোকজন অনুধাবন করতে পারবেন না, এমনকি যারা বৌ নিয়ে বৈদেশে উচ্চতর শিক্ষার জন্য যান তারাও বুঝতে পারবে না শুধুমাত্র ভূক্তভোগী ছাড়া. অভিভাবকরা সহ সবাই নিজের প্রবাসী সন্তান/ বন্ধুটিকে নানা ট্যাগ দেওয়ার আগে একবার নিজেকে দিয়ে চিন্তা করুন এরকম ইন্টারন্যাশনাল ডরমে আপনি থাকলে কি করতেন? নানান জাতির নানান রঙের মানুষের সঙ্গে চলাফরা করলে ইহজীবন ও পরজীবনের ব্যাপারে চিন্তা-ভাবনায় চোখ খুলে যায়.
বকুল একদিন রান্নার প্রিপারেশন নিচ্ছে এমন সময় এক মেয়ে ফ্রেন্ড ফোন দিয়ে জানাল, সে এই ক্যাম্পাসে এসেছে তার বন্ধুদের সাথে দেখা করতে; সো তার সাথেও দেখা করতে চায়. ওকে রুমে এসে এতো messy পরিবেশ দেখে তো সে পুরাই হতভম্ব. তখনও চাং-সিনের সাথে বকুলের পরিচয় হয় নি.
তো পরিপাটী থাকা যে মেয়ের স্বভাব সে বকুলের এহেন অবস্হা দেখে মেঝে ঝাড়ু দিয়ে দিল, হাড়ি-পাতিল তথা ইউটেনছিল ঝকঝকা করে দিল. বকুলের অভ্যাস খেয়ে ঐমনি রেখে দেয়, অনেকগুলো জমলে তখন একবারে ঘষে. রান্না বকুলই করলো, মেয়েটি জাস্ট হেলপারের ভূমিকায়. অধিকাংশ ইয়াং চাইনিজ মেয়েই রান্না পারে নাহ, এরা বাইরে খেতে অভ্যস্ত.
যে কোন কিছু ছোটবেলা থেকে দেখলে ওটা তার কাছে নরমাল ব্যাপার হয়ে যায়. চৈনিক মেয়েরা কাপড়-চোপড়ের ক্ষেত্রে ছোটো পোশাকই বেশি পছন্দ করে, গরমের দিনে এটা ভালভাবেই ফুটে উঠে. উত্তর চীনের লোকজন সামান্য রোদের তাপ সহ্য করতে পারে না, বাসের মধ্যে বয়স্কগুলা সিটে বসে মাথা পেছনে বাঁকিয়ে উচ্চশব্দে এমনভাবে শ্বাস নেয় যেন হাঁপানি রোগী. যুবতী বয়স্ক সব বয়সের অনেক মহিলার পড়নের কাপড় এত পাতলা যে আমাদের সমাজের মহিলাদের শুধু পেছন দিকের বক্ষবন্ধনী'র অংশবিশেষ দেখা গেলেও এদের সামনে পেছনে সব অংশই দেখা যায়. আবার অনেকের মিনি স্কার্ট এমনই মিনি যে বাতাস একটু জোরে-শোরে বইলে আন্ডি দেখা যায়. ফুটপাতে যেসব মহিলা হকাররা মাটিতে/ নিচু টুলে বসে জিনিস বিক্রি করে তারা হাঁটুর উপর আলাদা একটা কাপড় জড়িয়ে রাখে.
এখানে আসার পর প্রথমদিকে এসব দেখে বকুলের শরীর গরম হয়ে যেত কিন্তু এখন আর এসমস্যা হয় না. আসলে অভ্যস্ত হওয়ার ব্যাপার, অনেকদিন দেখলে নরমাল হয়ে যায় সবকিছু. চৈনিক ছেলেদের কাছে এগুলো খুব্বি স্বাভাবিক ব্যাপার. তবে ওরা শীতের দিনের তুলনায় গরমের দিনে সুন্দরী মেয়েদের ছোটো পোশাকে সেক্সিরুপে দেখতে পছন্দ করে.
আমাদের সমাজে অনেক মহিলার সুরে সুর মিলিয়ে কিছু পুরুষও বলেন, মেয়েদের ছোটো পোশাক পরিধান কোন সমস্যা নয়. কিন্তু আসলে কি তাই? উনারা যদি পাতলা ফিনফিনে পোশাক দেখতে দেখতে অভ্যস্ত হয়ে থাকেন তাহলে কোন সমস্যা নাই, আর সব কিছুর মত এটাও নরমাল মনে হবে কিন্তু যদি অভ্যস্ত না হয়ে থাকেন তাহলে দেখা যাবে আমি, আপনি, তারা সে যেই হই না কেন কারও না কারো শরীর গরম হবেই, সময়-স্হান-কাল ভেদে ছেলে/মেয়ের মুডের ভিত্তিতে একজনের কাছে আর একজনকে কমলার কোয়া বা ললিপপ মনে হওয়ার কারনে দূর্ঘটনা ঘটতে পারে, এমনকি পীড়াপীড়ি করতে গিয়ে নিভে যেতে পারে কারো জীবন প্রদীপ.
খাওয়া শেষে মেয়েটি যখন চলে যাবে তখন হঠাৎ করে বকুলের মাথাত মাল উঠে গেল, পেছন থেকে জড়িয়ে ধরেই মাথা ঘুরিয়ে অধরার দিকে আগালো. মেয়েটি বলল, নো কিন্তু বকুল জোর করতে চাইলো. মেয়েটি এবার রাগান্বিত হয়ে বলল, স্টপ…. উই আর জাস্ট ফ্রেন্ড nothigelse. এশুনে বকুলের সম্ভিত ফিরে এল, সে লজ্জায় বার বার সরি বলতে লাগল. এরপর মেয়েটিকে বাসস্টপ পর্যন্ত এগিয়ে দিয়ে তার ক্যাম্পাসে যাওয়ার বাসে উঠিয়ে দিল. এঘটনার পর থেকে মেয়েটির সাথে দেখা হয়েছে বন্ধুমহলে, সবাই একসাথে মজা করেছে কিন্তু কখনও আর রুমে আসে নি. জোর করে ঘনিষ্ঠ পরিচিত কোন মেয়ের কমলার কোয়া খেলে দুটি ঘটনা ঘটে, হয় এরপর থেকে সে পোলার পিছে পিছে ঘুরে আর না হয় লুচ্চা ভেবে যোগাযোগে যবনিপাত ঘটে. বকুল রক্ষণশীল পরিবেশে বড় হয়েছে, gf ও মেয়ে বন্ধুর মাঝে যে বিশাল তফাৎ সেটা ঠিকমত মেইনটেইন করতে পারে না. সেদিন রাতে জীবনে প্রথমবারের মত একটি কবিতা লিখে, পরিবেশ দ্বারা আঘাতপ্রাপ্ত হলে কষ্টে লেখা আসে -
কড়া শাসনের জয় হোক!!!
তোমরা আর দশটা অভিভাবকের মত
চেয়েছ ছেলের উজ্জল ভবিষ্যৎ
রেখেছ তারে চোখে চোখে;
দাও নি ছেলেকে মিশতে মেয়েদের সাথে
দাও নি ঘেষতে কোন ললনার সংস্পর্শে
না দিয়েছ,কোন মেয়ের সাথে মন খুলে কথা বলতে
দাও নি যেতে বিয়ের অনুষ্ঠানে
একবার ফিরানিতে গিয়েছিলে বলে
চেয়েছিলে ত্যাজ্যপুত্র করতে.
চাও নি কখনও ছেলের মনটাকে বুঝতে
না চেয়েছ;ছেলের বন্ধু হতে.
গোয়েন্দার মত; ছেলের চলাফেরা
রেখেছ নজরদারিতে .
করেছ চেক ছেলের মোবাইল
ভাড়াটিয়ার মেয়ে কথা বলায়
বাড়ি থেকে নামিয়ে দিয়েছ তাদের
বিনা নোটিশে .
দাও নি রুমের দরজা লাগিয়ে...থাকতে একা নিরিবিলি
প্রাইভেসি বলে ছিল না কিছু, ছেলের জীবনে
ছেলে সব মেনে নিয়েছে তোমাদের প্রতি শ্রদ্ধা দেখাতে
মাঝে মধ্যে চেয়েছে হতে.. বিদ্রোহী
কিন্তু পারে নি, তোমাদের চোখ রাঙানিতে.
তোমাদের দিক থেকে তোমরা হয়েছ সফল শতভাগ
ছেলে যায় নি গোল্লায়,
লেখায় নি নাম, পাড়ার বখাটেদের দলে.
এসেছে ছেলে স্কলারশীপ নিয়ে উচ্চতর শিক্ষার্থে বৈদেশে
এ নিয়ে তোমরা গর্বে ফুলাও বুক
ছেলে আমার মানুষের মত মানুষ হয়েছে
কড়া শাসনের জয় হোক.
কিন্তু বৈদেশেতে সে বিবেচিত আনকালচারড্
মেয়েদের সাথে কথা বলার সময় পারে না, ইজি হতে
স্বল্প বসনা ক্লাসমেটদের পাশে বসে থাকে না... মাথা ঠিক
রমণীরা কথা বলতে আসলে, অল্পতেই হয়ে যায় আবেগপ্রবণ,
বন্ধুরা... মেয়েদের সাথে ঘন্টার পর ঘন্টা কথা বললেও
হয় না, তাদের কিছু.
কিন্তু এ কাঙ্গাল, অল্প পরিচয়েই মেয়েদের প্রতি যায় যে ঝুঁকে
কামুকতা মনের মাঝে পেয়ে বসে তীব্ররুপে
মেয়েরা ভাবে লুইস টা এল কোথা থেকে !
জীবনের মাঝপথে এসে হয়েছে সময়
হিসাব মেলাবার,
পাওয়ার খাতায় আছে অনেক কিছুই
আছে আরাম আয়েশ, দিচ্ছে হাতছানি উজ্জল ভবিষ্যৎ.
শুধু নেই, শুধু নেই
মনের মাঝে- শান্তির সুবাতাস,
হৃদয়ের হাহাকার- শুনে না কেউ,
একটু আদর একটু ভালবাসা
প্রিয়ার ইট্টুস্ খানি ছোঁয়া পাওয়ার লাগি
উদাসপানে তাকিয়ে থাকি, চাতক পাখির ন্যায়.
পর্ব ১
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।