আসলামু আলাইকুম,আশা করি সবাই ভাল আছেন। আমিও ভাল আছি আলহামদুলিল্লাহ।
আমি এই প্রথম টিউন করছি। আমার টিউন এর বিষয় বাংলাদেশ এর ই-কমার্স নিয়ে। বাংলাদেশে ই-কমার্স ব্যবসায় প্রবিদ্ধির লক্ষে যাবতীয় টিপস,তথ্য,কাস্টমার অভিজ্ঞতা ইত্যাদি নিয়ে নিয়মিত আর্টিকেল দিতে পারব বলে আশাবাদী।
ইকমার্স সাইটের জনপ্রিয়তা বিক্রি বাড়ানোর কৌশল
অনেকেই ই-কমার্স সাইট তৈরী করছেন। অনেকে আবার সাইট তৈরীর অভিজ্ঞতা থাকায় বিভিন্ন ই-কমার্স থিম ইমপ্লেমেন্ট করে ই-কমার্স ব্যবসায় নামছেন। বর্তমান বাংলাদেশের ই-কমার্স সাইট গুলো দেখলেই বুঝা যায় অধিকাংশ সাইট ই ভিসিটর কে ভালো কিছু দিচ্ছে না বা খুব গুরুত্ব দিয়ে তাদের সাইট ডেভেলপ না। যারা বিসনেস তা কঠোর ভাবে নিয়েছি তারা একটা পাওয়ারফুল ওয়েব ইঞ্জিন নিয়ে নেমেছে। আবার ওনেকেই সল্প জ্ঞান নিয়ে সখের বসে সখের ই-কমার্স দোকান নিয়ে মার্কেটে নামছি।
একটা ই -কমার্স এর হোম পেজ টা কেমন হওয়া উচিত, প্রোডাক্ট পেজ টা কেমন হবে, কি কি থাকতে হবে, এ ব্যাপারে আমাদের চিন্তা কতদূর। একটা সাইট কে ভিসিটর এর কাছে ট্রাস্ট করাতে কি কি থাকা দরকার তাই ই বা কতটুকু আছে আমাদের সাইট এ। এছাড়াও রয়েছে অনেক ফ্যাক্টর।
জেনে নিই,কোন কোন বিষয়গুলো অবশ্যই মনে রাখা উচিত:
১. সাইটের সহজ সরল নেভিগেশন: আপনার বায়ার/কাস্টমাররা যখন আপনার সাইটে আসবে, তখন তারা যদি বুঝতেই না পারে যে কিভাবে কিনবে, কোন লিংকে গিয়ে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে, পেমেন্ট করবে কোন পেজে গিয়ে; তাহলে কিন্তু ঐ কাস্টমার এক মুহুর্তও থাকবে না আপনার সাইটে। এজনে্য সাইটে হাইলাইট অবস্থায় পেমেন্ট, রেজিস্ট্রেশন এরকম লিংক রাখতে হবে।
২. পেমেন্ট সিস্টেম অথবা রেজিস্ট্রেশন সিস্টেম: ই-কমার্স সাইট এর উদ্দেশ্য যেহেতু বিক্রি বাড়ানো,সেহেতু পেমেন্ট সিস্টেম টা বেশ নির্ভর যোগ্য করুন। এবং প্রোডাক্ট সিলেকশন থেকে শুরু করে রেজিস্ট্রেশন ও চেকআউট পর্যন্ত প্রসেস টা যথাসম্ভব সহজ করুন। কেননা আমেরিকার ই-কমার্স সাইট গুলোর ৫০% কনভার্সন কমে যায় রেজিস্ট্রেশন ও পেমেন্ট প্রসেস লম্বা বা সহজ বোধ্য না হওয়ার কারণে। (সুত্র:ইন্টারনেট)
৩. প্রোডাক্ট সার্চ বার: সাইটের একদম উপরের দিকেই বড় করে সার্চ অপশনটা রাখার চেষ্টা করুন। সার্চ অপসন এ “সার্চ করুন”,”বাংলা/ইংলিশ” এমন কিছু নির্দেশনা দিন।
অনেক কাস্টমাররা তাদের কাংখিত পন্যটি খুজার জন্যে ক্যাটাগরি গিয়ে একটা একটা করে প্রডাক্ট সার্চ করেন না। বরং উপরের সার্চ বক্স থেকেই খুজতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। আপনি চাইলে অ্যাডভান্স সার্চ অপসন ও রাখতে পারেন। ভুলেও ই-কমার্স সাইট এ টুক টাক কিছু আয়ের জন্য কোনো কাস্টম সার্চ অপসন রাখবেন না।
এতে ভিসিটর মনোযোগ হারাবে আপনার প্রতি।
৪.মুল্য নির্ধারণ:প্রোডাক্ট এর মুল্য বিশ্বাস যোগ্য রাখুন। প্রয়োজনে সাইকোলজিকাল মুল্য ব্যবহার করুন। মাঝে মাঝে মুল্য ছাড় কাম্পেইন করুন। পারলে মার্জিন লেভেল টা বাড়িয়ে শিপিং টা ফ্রি দিন। যেমন আমি মিরপুর এ থাকি,আমি যদি নিউ মার্কেট থেকে কিছু কীনতে চাই,যাতায়াত খরচ ৫০ টাকা এ ছাড়া আছে ট্রাফিক জ্যাম, দর কষাকষির মত বিরক্তির সময়।
আমি যদি রুম এ বসে একই প্রোডাক্ট ফ্রি শিপিং এ পাই , আমি এভাবেই কিনব।
৫. এক্সট্রা ফিচার এড করুন সাইটে: আপনি যদি কাস্টমাইজড প্রডাক্ট সেল করেনতাইলে কাস্টমাইজেশনের জন্য আলাদা করে ট্যাব রাখবেন। শার্টের সাথে যদি বোতাম বিক্রি করেন, তাইলে বোতাম বিক্রির আলাদা ট্যাব রাখুন। যত বেশী ফিচার এড করবেন, আপনার সাইটের অভারঅল ট্রাষ্ট ফ্যাক্টর বাড়বে এবং কাস্টমাররাও একটি সাইটে রিলেটেড সব ধরনের জিনিস পেয়ে বার বার ফিরে আসবে। বা অন্যকে রিকমেন্ড করবে।
৬. প্রডাক্টের যথাযথ ডিটেইলস: বাংলাদেশের অনেক ইকমার্স সাইট দেখলে বুঝা যায় সেটা, জাস্ট একটা ছবি আপলোড করেই শেষ। কিন্তু ভেবে দেখেন আপনার কাস্টমার আপনার সাইট থেকে না কিনে যদি কোনো দোকান থেকে কিনতো ,তিনি কিন্তু নেড়ে চেড়ে আরো অনেক ভেবে চিন্তে কিনতো। তার কতটুকু বা করতে পারছে আপনার সাইট এ। তাই যথাযথ বিবরণ , সাইজ, কালার,কোয়ালিটি,কিছু মোটিভেশন কথা যোগ করুন।
৭. এস ই ও করুন: আপনার সাইট এর এড্রেস কতজন জানে বা কত জন কে জানাতে পারবেন,শুধু জানালেই তো হলো না সবাই কি আপানর সাইট আসবে , না।
আপানর প্রতিযোগী সাইট ও আছে। আর মানুষ এখন সবকিছুর জন্য সার্চ ইঞ্জিন ব্যবহার করে। অর্থাৎ আপনার প্রোডাক্ট এর নামে সাইট যদি ভালো রাংক থাকে আপনি ভালো ভিসিটর পাবেন। বেশি ভিসিটর মানে বেশি কনভার্সন।
৮. শিপিং ব্যাবস্থা হাইলাইট করুন: প্রডাক্ট কেনার সময় মানুষ যে বিষয় নিয়ে সবচেয়ে বেশী চিন্তিত থাকে সেটা হচ্ছে শিপিং।
আপনি কিভাবে শিপ করবেন, হোম ডেলিভারি নাকি কুরিয়ার সার্ভিস নাকি অন্য কোন ব্যাবস্থা। পুরো ব্যাপারটাই ক্লিয়ার করুন ওয়েবসাইটে।
৯. রিফান্ড সিস্টেম: আপনার পাঠানো পন্য কাস্টমারের হাতে পৌছানোর পর তারা যদি কোন ফল্ট পায়, সেক্ষেত্রে আপনি রিফান্ড করেন কিন সেটা হাইলাইট করুন। এটা খুবই গুরুত্বপূর্ন। বাংলাদেশে এখনো ইকমার্স এতোটা জনপ্রিয় হয় নি।
সো, আপনি যতটা ট্রান্সপারেন্ট থাকতে পারেন ততই ভালো।
১০. ব্রাউজার ফ্রেন্ডলি ওয়েবসাইট: ধরুন আপনার সাইটটি ইন্টারনেট এক্সপ্লোরারে ভালো দেখা যায় না। ভেঙ্গে যায়। সেক্ষেত্রে আপনি কিন্ত একটা বড় অংশের কাস্টমার হারাবেন। আমজনতার অনেকেই এখনো ইন্টারনেট এক্সপ্লোরার ব্যাবহার করে।
১১.সাইট লোডিং: লোডিং,,,,লোডিং,,,,লোডিং, এভাবে সাইট রেপনস করলে ভিসিটর থাকতে চাইবে না। গতানুগতিক হোস্টিং টেকনোলজি ব্যবহার না করে ক্লাউড হোস্টিং ব্যবহার করুন যাতে কখনই সাইট ক্রাশ না করে। বিশ্ব খ্যাত ই-কমার্স আমাজন এর সাইট যদি লোড হতে ১ সেকেন্ড লেট হয় এতে বছরে কয়েক কোটি টাকা ক্ষতি হয় আমাজনের। (সুত্র:ইন্টারনেট)
আশা করি লিখাটি কাজে আসবে। ই-কমার্স ব্যবসায় নামতে হলে নামার মত নামুন।
পথে নামলেই পথ চিনবেন।
আপনারা চাইলে আমাকে ফেইসবুক একাউন্ট ও ফেইসবুক পেজ এ ঘুরে আসতে পারেন। ফেইসবুক একাউন্ট লিংক ও ফেইসবুক পেজ লিংক
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।