লালন মাজারের কারণে পুণ্যভূমি খ্যাত কুষ্টিয়ায় মাহবুব-উল আলম হানিফের দৃষ্টিনন্দন বাড়ি আর হাওর অঞ্চলের ধর্মপাশায় এমপি মোয়াজ্জেম হোসেন রতন নির্মিত প্রাসাদটি এখন দৃষ্টি কাড়ছে মানুষের। আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকার আমলে নিজ নিজ এলাকায় তারা আলিশান বাড়ি দুটি নির্মাণ করেন। ক্ষমতায় থাকাকালে গড়ে তোলা এ বাড়ি নিয়ে নানা কথা ছড়িয়ে আছে, প্রশ্ন আছে টাকার উৎস নিয়ে। কুষ্টিয়ার পিটিআই রোডে এসপি বাংলো সংলগ্ন জায়গায় অল্প সময়ের মধ্যেই আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক, প্রধানমন্ত্রীর সাবেক বিশেষ সহকারী মাহবুব-উল আলম হানিফের বাড়িটি গড়ে ওঠে। প্রায় ২ কোটি টাকা খরচে নির্মিত বাড়ির পুরোটাই দামি মার্বেল পাথরে খচিত।
স্থানীয়দের কাছে মালয়েশিয়ান প্যাটার্নে গড়ে তোলা এ বাড়ি যেন বিস্ময়। সীমানাপ্রাচীর থেকে শুরু করে আঙিনাজুড়ে বিছানো টাইলসগুলোও মানুষ ছুঁয়ে ছুঁয়ে দেখে। চারদিকেই রংবেরংয়ের কাচের ছড়াছড়ি। দোতলা-তিন তলায় সুবিশাল বারান্দা। বাড়িটি নিয়ে যে শুধু স্থানীয়রাই কৌতূহলী তা নয়, কুষ্টিয়ায় বেড়াতে যাওয়া অনেকেই এটি দেখতে যান।
এবার লালনের আখড়া ছেঁউড়িয়ার মেলায় যাওয়া অনেক মানুষ ছুটে গেছেন হানিফের বাড়ি দেখতে। হানিফের পৈতৃক বাড়ি কুষ্টিয়া শহর থেকে ৩৫ কিলোমিটার দূরে ভেড়ামারার ষোলোদাগ এলাকায়। মাত্র দুই বছর আগে তিনি শহরের পিটিআই রোডে এ বাড়ি নির্মাণের কাজে হাত দেন। বাড়িটি নির্মাণের পর পিটিআই রোডের নাম পর্যন্ত মুছে ফেলা হয়েছে। গোটা মহল্লার নাম দেওয়া হয়েছে হানিফনগর।
অন্যদিকে, সুনামগঞ্জ-১ (তাহিরপুর-জামালগঞ্জ-ধর্মপাশা) আসনে সরকারদলীয় এমপি মোয়াজ্জেম হোসেন রতনের অন্য তিনটি বাড়িকেই পেছনে ফেলে দিয়েছে তারই গড়ে তোলা নওধারের প্রাসাদটি। পুরো হাওর অঞ্চল খুঁজেও এত কারুকার্যখচিত বাড়ি পাওয়া দুষ্কর। তিনি ২০১০ সালে এটি নির্মাণ করেন। দ্বিতল বিশাল আকারের বাড়িটি রাজা-বাদশাহদের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়। গোটা বাড়ি শ্বেত পাথরে মোড়ানো।
রতনের এ প্রাসাদটি একনজর দেখার জন্য দূরদূরান্ত থেকে মানুষ আসে বলে স্থানীয়রা জানান। তারা আরও বলেন, রাজধানীর গুলশানে এমপি রতনের অত্যাধুনিক ২ হাজার ৬৪৪ বর্গফুটের অ্যাপার্টমেন্টের সৌন্দর্যও নওধারের এ প্রাসাদের কাছে পাত্তা পাবে না। সুনামগঞ্জ শহরের মলি্লকপুরে তার কেনা বাড়ির কথাও মানুষ ভুলে যেতে বসেছে। সুনামগঞ্জের মানুষ এখন 'এমপির বাড়ি' বলতে নওধারে সর্বশেষ নির্মিত বাড়িটির কথাই বোঝেন। মোয়াজ্জেম হোসেন রতন অবশ্য বাড়ি নির্মাণে মাত্র ৩৮ লাখ ৭ হাজার ৫৬১ টাকা ব্যয় হয়েছে বলে নির্বাচন কমিশনে (ইসি) দেওয়া হলফনামায় উল্লেখ করেছেন।
কিন্তু দর্শনার্থী আর নির্মাণ বিশেষজ্ঞদের ধারণা, কয়েক কোটি টাকার নিচে এমন প্রাসাদ নির্মাণের কথা ভাবা যায় না। এমপি রতন জানিয়েছেন, তিনি এ বাড়ির কাজ শুরু করেছিলেন ২০০৬ সালে। সেই সময়ের মূল্য ধরায় কিছুটা কম মনে হচ্ছে। পরে সংস্কার করে সৌন্দর্য বাড়ানো হয়েছে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।