আল্লাহ মহান, যাহা বলিব সত্য বলিব।
"আমি যদি তোমাদের হুকুম দিবার নাও পারি তোমরা সব বন্ধ করে দেবে। " - বঙ্গবন্ধু (৭ মার্চ ১৯৭১)
তারই নকল করে...
"যদি আমি আপনাদের পাশে থাকতে না পারি, তাহলেও আপনারা এই কর্মসূচি আন্দোলন চালিয়ে যাবেন" -খালেদা জিয়া (ডিসেম্বর ২০১৩)
‘গণতন্ত্র অভিযাত্রা’ কর্মসূচিতে বাধার কারণে নিজের উপস্থিতি অনিশ্চিত হয়ে পড়ার ইঙ্গিত দিয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া যে ভিডিও বার্তা দিয়েছেন তাতে দলের তৃণমূল নেতাকর্মীদের মধ্যে এক ধরনের হতাশা ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। প্রচণ্ড ক্ষোভ থাকলেও কেউ নাম প্রকাশ করতে চাইছেন না।
শুক্রবার বিকেলে গণমাধ্যমে খালেদা জিয়ার ভিডিও বার্তা প্রচার হলে দলের বিভিন্ন পর্যায়ের কয়েকজন নেতা তাদের হতাশা ব্যক্ত করেন।
পটুয়াখালী জেলা বিএনপির একজন গুরুত্বপূর্ণ নেতা মুঠোফোনে বলেন, ‘ম্যাডাম (খালেদা জিয়া) কী বার্তা দিল! যদি নাও আসতে পারি মানে কী? এই বক্তব্যের পর জনগণ তো দূরের কথা, নেতাকর্মীরাই মাঠে নামবে না। উনি যদি বলতেন, যতোই বাধা আসুক আমি থাকবো, দেশবাসীও থাকবেন, তাহলে নেতাকর্মীরা উজ্জীবিত হতো। ’
খুলনা মহানগরের একজন নেতার মতে, ‘কিছু দালাল ম্যাডামকে দিয়ে এই ভিডিওবার্তা তৈরি করেছে। এদের কারণেই দল সাংগঠনিকভাবে শক্তিশালী হতে পারেনি। আন্দোলনে নেতাকর্মীরা এখন আন্ডারগ্রাউন্ডে।
ভাড়াটে সংগঠনগুলো দিয়ে আন্দোলন হচ্ছে। ’
যুবদলের নির্বাহী কমিটির একজন সদস্য বলেন, ‘ম্যাডামকে দিয়ে কারা এ ধরনের কর্মসূচি দিয়েছে তা আমরা খুঁজে বের করার চেষ্টা করছি। কর্মসূচি বাস্তবায়নের ব্যাপারে আমাদের আশঙ্কা রয়েছে। ’
তবে স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় কমিটির একজন সম্পাদক বলেন, ‘কর্মসূচি বাস্তবায়নে ইতোমধ্যেই ঢাকার প্রবেশদ্বারগুলোতে নেতাকর্মীরা অবস্থান নিয়েছে। কর্মসূচি সফল হবেই।
’
বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির একজন সদস্য বলেন, ‘অবরোধ কর্মসূচিই ভালো ছিল। সরকারের প্রতি জনগণ ও আন্তর্জাতিক চাপ ছিল। বিরোধী দলকে অবরোধ কর্মসূচি থেকে ফেরাতে সরকার নানা ফন্দি ফিকির করছে। মার্চ ফর ডেমোক্রেসি কর্মসূচি সরকারের প্রেসক্রিপসন কর্মসূচি। ’
ভিডিওবার্তার ব্যাপারে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা মো. রফিক সিকদার বাংলামেইলকে বলেন, ‘কর্মসূচিতে ম্যাডাম ১০০ ভাগ আসবেন।
সরকার তাকে অবরুদ্ধ করে রেখেছে। এজন্য যদি কোনো কারণে না আসতে পারেন সে জন্যই তিনি এ কথা জানিয়েছেন। আমি মনে করি, ম্যাডামের বক্তব্যে আন্দোলনে নতুন মাত্রা যোগ হবে। ’
এ ব্যাপারে দলের সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারণী ফোরাম বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খানের মুঠোফোনে চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। এমনকি ক্ষুদেবার্তা পাঠালেও তার প্রতিউত্তর দেননি।
উল্লেখ্য, গত ২৫ ডিসেম্বর খ্রিস্টান অ্যাসোসিয়েশনের নেতাদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে বেগম খালেদা জিয়া নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলেছিলেন, ‘মার্চ ফর ডেমোক্রেসিতে আমিও থাকবো, আপনারাও রাজপথে থাকবেন। ’ পরদিন আবার ভিডিওবার্তায় বলেন, ‘কোনো কারণে আমি যদি নাও আসতে পারি, আপনারা আন্দোলন চালিয়ে নিয়ে যাবেন। ’
এতে করে নেতাকর্মীদের মধ্যে কোনো প্রভাব পড়বে কি না জানতে চাইলে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ড. এম ওসমান ফারুক বাংলামেইলকে বলেন, ‘না, কোনো ধরনের প্রভাব পড়বে না। কর্মসূচি সফল করতে আমাদের সব ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে। ’
একই প্রশ্নের উত্তরে স্থায়ী কমিটির সদস্য লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মাহাবুবুর রহমান বাংলামেইলকে বলেন, ‘আমি মনে করি, সরকার আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দিয়ে চেয়ারপারসনের অফিস এবং বাসা অবরুদ্ধ করে রেখেছে, তাই তিনি এ ধরনের বক্তব্য দিয়েছেন।
কর্মসূচি সফল হবে। ’
এদিকে দলের বিভিন্ন সূত্র জানিয়েছে, বিএনপি সাংগঠনিকভাবে এখনো শক্তিশালী হতে পারেনি। ২৪ অক্টোবর খালেদা জিয়া গণতন্ত্রের জন্য ঢাকামুখী অভিযাত্রা কর্মসূচি ঘোষণার পর দেশের কোথাও এই কর্মসূচির সমর্থনে কোনো মিছিল দেখা যায়নি। তাছাড়া আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বেপরোয়া অভিযানে নেতাকর্মীদের উদ্বেগ উৎকণ্ঠা বাড়িয়ে দিয়েছে। কেউ কেউ মনে করছেন, অবরোধ কর্মসূচিই সফল হচ্ছিল।
কিন্তু অভিযাত্রা কর্মসূচি কতটুকু সফল হয় তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।