আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ভয়ঙ্কর প্রস্তুতি জামায়াতের একযোগে হামলার আশঙ্কা

আল্লাহ মহান, যাহা বলিব সত্য বলিব।

১৮ দলীয় জোটের ঢাকা অভিযাত্রা কর্মসূচি আজ। ঢাকার প্রাণকেন্দ্র রাজধানীকে কেন্দ্র্র করে জোটের এ কর্মসূচি পালিত হবে। একে কেন্দ্র করে সরকার পতনের টার্গেট নিয়ে রাজধানীকেন্দ্রিক চূড়ান্ত লড়াইয়ে নামছে জামায়াত-শিবির। নির্বাচনের আগে এটাই শেষ সুযোগ মনে করছেন তাদের নেতাকর্মীরা।

এজন্য জোটের কর্মসূচির আড়ালে আজ পরিকল্পনা বাস্তবায়নে তাদের ভয়ঙ্কর প্রস্তুতি রয়েছে বলে জানা গেছে।
অন্যদিকে জোটের আজকের কর্মসূচিতে না থাকার ঘোষণা দিলেও হেফাজতের মূল চালিকা শক্তি ও জোটের শরিক ইসলামী দলগুলোর নেতাকর্মীরা আজ সর্বাত্মক প্রস্তুতি নিয়ে মাঠেই থাকছেন, সংশ্লিষ্ট সূত্র এমন তথ্যই জানিয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মহানগর জামায়াতের এক কর্মপরিষদ সদস্য বর্তমানকে বলেন, ‘যত বাধাই আসুক না কেন সব বাধা মোকাবিলা করেই নেতাকর্মীরা আজকের কর্মসূচি থেকে সরকার পতনে ঝাঁপিয়ে পড়বে। তিনি বলেন, আমাদের লাখ লাখ নেতাকর্মী মাঠে থাকবে। পুরো রাজধানী আমাদের দখলে থাকবে।


আমরা শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালনের চেষ্টা করব, এরপরও যদি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বাড়াবাড়ি করে তাদের শক্তহাতে প্রতিহত করা হবে। ’ সরকারের পতন না হওয়া পর্যন্ত নেতাকর্মীরা ঘরে ফিরে যাবে না বলেও মন্তব্য করেন জামায়াতের এ নেতা।
তাদের মাঠ পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ১৮ দলীয় জোটের আজকের কর্মসূচিকে ঘিরে বড় ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছে জামায়াত-শিবির। নাশকতার চালিয়ে রাজধানী অচল ও গুরুত্বপূর্ণ স্পট ও স্থাপনা দখলের পরিকল্পনা রয়েছে। এসব পরিকল্পনা বাস্তবায়নে নির্দেশনা দিতে ব্যবহার করা হচ্ছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম।


সরকারের গোয়েন্দা চোখ ফাঁকি দিতে ফেসবুক, টুইটার, ব্লগের মাধ্যমে একাধিক পেজ খুলে নেতাকর্মীদের প্রতিনিয়ত নির্দেশনা দেয়া হচ্ছে। এছাড়া আজকের কর্মসূচি চলাকালে দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের একাধিক আইডির দিকেও চোখ রাখতে বলা হয়েছে মাঠ পর্যায়ের নেতাদের।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম নির্দেশনার জন্য অনেকটা নিরাপদ মনে করছে জামায়াত-শিবির। সম্প্রতি বাঁশের কেল্লাসহ বেশ কয়েকটি পেজ জামায়াত-শিবিরের বলে পরিচিতি পাওয়ায় নতুন করে আরও বেশ কয়েকটি পেজ খুলে জোটের কর্মসূচি সম্পর্কে প্রচার চালানোর পাশাপাশি নেতাকর্মীদের কাছে সাঙ্কেতিকভাবে নানা রকম নির্দেশনা পৌঁছে দেয়া হচ্ছে। এসব আইডি থেকে আজকের কর্মসূচিতে নেতাকর্মীদের তাত্ক্ষণিক নির্দেশনা দেয়া হবে বলেও তাদের ঘনিষ্ঠ সূত্র জানিয়েছে।


জানা গেছে, জোটের কর্মসূচিকে ঘিরে জামায়াত-শিবিরের প্রথম টার্গেট আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে দুর্বল করে রাজধানীর কমপক্ষে ৩০টি গুরুত্বপূর্ণ স্পটে শক্ত অবস্থান নেয়া। তার মধ্যে জাতীয় প্রেসক্লাব, সচিবালয়, বঙ্গভবনের আশপাশে, পল্টন, বিজয়নগর, কাকরাইল, শান্তিনগর, মগবাজার, রামপুরা, বায়তুল মোকাররম, নয়াপল্টন, মতিঝিল, গুলিস্তান, পুরান ঢাকা, কমলাপুর, যাত্রাবাড়ী এলাকায় তারা শক্তভাবে অবস্থানের চেষ্টা করবে।
এসব স্পট ছাড়াও রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় ছোট ছোট গ্রুপ থাকবে বোমাবাজিতে। তারা সরকারের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে ব্যতিব্যস্ত করে রাখার চেষ্টা চালাবে। এছাড়া বেশ কয়েকটি বড় গ্রুপ থাকবে রাজধানীর প্রবেশপয়েন্টে।

তাদের সহায়তা করবে আটকে পড়া বিএনপি জোটের নেতাকর্মীরা।
তবে তাদের প্রায় লক্ষাধিক নেতাকর্মী জড়ো হওয়ার চেষ্টা করবে বিএনপির নয়াপল্টন এলাকায়। কর্মসূচি বাস্তবায়নে কমপক্ষে অর্ধলক্ষাধিক প্রশিক্ষিত ক্যাডার এবং তাদের আরও তিন লাখ নেতাকর্মী একাধিক গ্রুপে বিভক্ত হয়ে আজ রাজধানীজুড়ে মাঠে থাকার কথা রয়েছে।
সূত্র জানায়, সরকারের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতিরোধের মুখে বিচ্ছিন্নভাবে রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে অবস্থান করতে না পারলে জামায়াত-শিবির জোটের নেতাকর্মীদের ছদ্মবেশে রাজধানীতে বড় ধরনের নাশকতা চালিয়ে যাবে। পরিকল্পনা বাস্তবায়নে রাত থেকেই তাদের অবস্থান নেয়ার কথা রয়েছে।

না পারলে ভোররাত থেকেই নিজ নিজ অবস্থানে চলে যাবেন এসব নেতাকর্মী।
সূত্রমতে, একের পর এক হামলা-নাশকতা চালিয়ে তাদের নেতাকর্মীরা প্রথমেই রাজধানী অচল করে দেয়ার চেষ্টা করবে। সম্ভব হলে তারপর শক্তিপ্রদর্শনের মাধ্যমে রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট ও স্থাপনা দখলে নেবে। একযোগে একাধিক স্পটে ঝটিকা মিছিল করে হামলা চালাতে পারে, আবার স্পট বদল করেও হামলা করতে পারে তারা।
হামলার সময় তাদের প্রথম টার্গেট থাকবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

জাতীয় পতাকা হাতে তাদের কাছে থাকবে বড় বাঁশ, লাঠিসহ দেশীয় অস্ত্র। প্রয়োজনে পেট্রোলবোমা ও ভারি অস্ত্রের ব্যবহার করতে পারে। কর্মসূচির সময় তাদের নেতাকর্মীরা সরকারি দল এমনকি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ছদ্মবেশ নিতে পারে বলেও জানা গেছে।
জামায়াত নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কর্মসূচির পরিকল্পনা বাস্তবায়নে অগ্রভাগে থাকবে ঢাকার বাইরে থেকে আসা অর্ধলক্ষাধিক প্রশিক্ষিত ক্যাডার। জামায়াত সমর্থিত বিভিন্ন ব্যবসা ও সেবামূলক প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা, কর্মচারী সেজে আগেভাগেই রাজধানীতে প্রবেশ করেন।

এসব ক্যাডার পেশাজীবীর ছদ্মবেশে পুলিশের চোখ এড়িয়ে জামায়াত নেতার বাসাবাড়ি, মেস, বিভিন্ন আবাসিক হোটেলে অবস্থান করছেন।
তাদের বেশিরভাগই রাজশাহী, বগুড়া, রংপুর, সাতক্ষীরা, চট্টগ্রাম অঞ্চলের বলে জানা গেছে। তাদের সঙ্গে যোগ দেবে ঢাকা মহানগরীর তিন লাখ নেতাকর্মী। ইতিমধ্যে তাদের দায়িত্ব বুঝে দেয়া হয়েছে। এক সপ্তাহ ধরে পরিকল্পনা সম্পর্কে নেতাকর্মীদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।


সবকিছুর সমন্বয় করছেন দীর্ঘদিন ধরে পলাতক জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত আমির মকবুল আহমাদ, ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল ডা. শফিকুর রহমান, কেন্দ্রীয় নেতা ডা. আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের, ঢাকা মহানগর আমির মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান, এইচএম হামিদুর রহমান আযাদ এমপি, ড. সফিকুল ইসলাম মাসুদ, মঞ্জুরুল ইসলাম ভূঁইয়া, ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি জেনারেল মুহাম্মদ আবদুল জব্বার।
শনিবার জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল ডা. শফিকুর রহমান এবং ঢাকা মহানগরীর আমির মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান পৃথক বিবৃতিতে দলের নেতাকর্মীসহ দেশবাসীকে জোটের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে অংশ নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। তাদের বিবৃতিতেও নয়াপল্টন এলাকায় নেতাকর্মীদের যে কোনো মূল্যে জমায়েতের ইঙ্গিত দেয়া হয়েছে।
জানা গেছে, পরিকল্পনা বাস্তবায়নে ব্যর্থ হলে সর্বশেষ জোটের নেতাকর্মীদের সঙ্গে জামায়াত-শিবির নয়াপল্টন এলাকা দখলে রাখার চেষ্টা করবে। সরকারের পতন না হওয়া পর্যন্ত তারা সেখানে অবস্থান নিতে পারে বলেও সূত্র জানিয়েছে।


এদিকে আজকের কর্মসূচিতে হেফাজতে ইসলামের নেতাকর্মীরা গোপনে নানা ছদ্মবেশে অংশ নিচ্ছে বলে জানা গেছে।
ইতিমধ্যে রাজধানীর একাধিক কওমি মাদ্রাসা ও প্রতিষ্ঠানে তাদের বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী অবস্থান নিয়েছেন। এসব নেতাকর্মীকে সতর্কভাবে মাঠে থাকার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। রাজধানীর বায়তুল মোকাররম, পল্টন এলাকা, পুরান ঢাকা, বাড্ডা, গুলশান ছাড়াও ঢাকার গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে তাদের দেখা যেতে পারে।
এ কর্মসূচিতে হেফাজতের কোনো নেতাকর্মী অংশ নিচ্ছে না বলে দাবি করলেও শনিবার ঢাকা মহানগর হেফাজতের আমির মাওলানা নূর হোসাইন কাসেমী জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম, হেফাজতের নায়েবে আমির মাওলানা আহমাদুল্লাহ আশরাফ ও ঢাকা সমন্বয়কারী মাওলানা জাফরুল্লাহ খান বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন, হেফাজতের উপদেষ্টা মুফতি আবদুল লতিফ নেজামী ও যুগ্ম মহাসচিব মুফতি ফয়জুল্লাহ ইসলামী ঐক্যজোট, হেফাজতের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আবদুর রব ইউসুফী, মাওলানা মাহফুজুল হক, হুমায়ুন কবির বাংলাদেশ খেলাফত মজলিশ, হেফাজত কেন্দ্রীয় নেতা মাওলানা ইছহাক খেলাফত মজলিস, হেফাজতের মহানগর নেতা মাওলানা আবুল হাসানাত আমিনী, মুফতি তৈয়ব, আহলুল্লাহ ওয়াসেল খেলাফতে ইসলামীর ব্যানারে বিবৃতি দিয়ে আজকের জোটের ঢাকা অভিযাত্রা কর্মসূচিতে নেতাকর্মীদের ঝাঁপিয়ে পড়ার আহ্বান জানিয়েছেন।

সুত্র
 

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.