আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

টিউমারের বদলে ব্রেন অপসারণ করলেন চিকিৎসক

টিউমারের বদলে মাইক্রো লেজারের মাধ্যমে ব্রেন অপসারণ করলেন চিকিৎসক। ঘটনাটি ঘটেছে রাজধানীর স্বনামধন্য স্কয়ার হাতপাতালে। অভিযোগ পাওয়া গেছে ভারত থেকে ভাড়ায় আনা চিকিৎসক ডা. পার্থ প্রতিম বিষ্ণু এই ঘটনাটি ঘটিয়েছেন। অভিযোগ সূত্রে প্রকাশ, স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটি হতে এমবিএ পাশ করা মেধাবী ছাত্র, বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ইউপিএস এর রেমিটেন্স কর্মকর্তা মো. রেজাউল করিম চিকিৎসকের ভুল চিকিৎসার স্বীকার হয়ে দীর্ঘ ৪ মাস যাবৎ অজ্ঞান অবস্থায় মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছেন। এ বিষয়ে মো. রেজাউল করিমের পিতা ফজলুল হক মাস্টার জানান, তার ছেলে গত ৪ সেপ্টেম্বর ২০১২ ইং তারিখে হঠাৎ বমি করে।

আমরা তাকে সাথে সাথে একটি হাসপাতালে নেওয়ার পর ডাক্তাররা বলেন তার ব্রেন টিউমার হয়েছে। আমরা ১২ সেপ্টেম্বর রেজাউলকে স্কয়ার হাসপাতালে ডা. পার্থ প্রতিম বিষ্ণুর কাছে নিয়ে গেলে তিনি বলেন, আপনাদের রোগী রেজাউল করিমের ব্রেন টিউমার হয়েছে, এটি বড় ধরনের কোন সমস্যা নয়। অপারেশন করলে ২/৩ দিনের মধ্যেই সম্পূর্ন ভালো হয়ে যাবে। স্কয়ার হাসপাতালে ভর্তি করিয়ে দিন। তিনি বলেন, ‘আমরা তার কথা মত স্কয়ার হাসপাতালে ভর্তি করাই।

১৩ সেপ্টেম্বর ২০১২ইং তারিখে আমার ছেলেকে রাতের খাবার খাইয়ে স্কয়ার হাসপাতাল থেকে বাসায় চলে যাই এবং ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১২ইং তারিখে সকালে স্কয়ার হাসপাতালে গিয়ে দেখি আমার ছেলে অজ্ঞান অবস্থায় পড়ে আছে। আমরা ডাক্তারের সাথে আলাপ করলে তিনি বলেন, আপনাদের রোগীকে আইসিইউতে রাখতে হবে। তার কথা মত ১৪ সেপ্টেম্বর হতে ১৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আইসিইউতে রাখি। ’ ১৭ সেপ্টেম্বর ডা. পার্থ প্রতিম বিষ্ণু আমাদেরকে বলেন, আপনাদের রোগীকে জ্ঞান ফেরার জন্য যে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে তা তার টিউমার চুষে নিচ্ছে। অপারেশন করে তার টিউমার ফেলে দিলে সে আগের অবস্থায় ফিরে আসবে।

ডাক্তার ১৮ সেপ্টেম্বর অপারেশন করেন। দীর্ঘ ১ মাস ২২ দিন স্কয়ার হাসপাতালে রাখার পর ডা. পার্থ প্রতিম বিষ্ণু আমাদেরকে বলেন, আপনাদের রোগী আর কোন দিন ভালো হবে না আপনারা রোগীকে বাসায় নিয়ে যান। মো. রেজাউল করিমের পিতা ফজলুল হক মাস্টার জানান, আমরা নিরূপায় হয়ে স্কয়ার হাসপাতালের ধার্য করা বিল ৯,৪৪,১০২.৯৯ (নয় লক্ষ চুয়াল্লিশ হাজার একশত দুই টাকা নিরানব্বই পয়সা) পরিশোধ করে ডা. পার্থ প্রতিম বিষ্ণুর কথা মতো আমার ছেলেকে হাসপাতাল থেকে নিয়ে যাই। পরবর্তীতে আমরা কয়েকজন ডাক্তারের সাথে আলাপ করে তাদেরকে কাগজপত্র দেখালে ডাক্তাররা বলেন, রোগীর ব্রেন টিউমারের যে অপারেশন করা হয়েছে তা সঠিকভাবে করতে পারেনি। অপারেশন করাকালে টিউমার বের না করে মাইক্রো লেজারের মাধ্যমে রোগীর ব্রেন নিয়ে আসা হযেছে, যার কারণে তার ব্রেন ডেমেজ হয়ে গেছে।

ফজলুল হক মাস্টার আরও বলেন, এখন আমাদের প্রশ্ন ডাক্তার পার্থ প্রতিম বিষ্ণু কেন আমার ছেলেকে ১ মাস ২২ দিন রাখার পর আমাদের কাছ থেকে প্রায় ১০ লক্ষ টাকা নিয়ে কেন এত বড় ক্ষতি করলো? কেন ডাক্তার পার্থ প্রতিম বিষ্ণু অনাবিজ্ঞ ডাক্তার হয়েও এত বড় ঝুঁকি নিল? ফজলুল হক মাস্টার বলেন, ‘আমরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও স্বাস্থ্যমন্ত্রীর কাছে ঐ ডাক্তার পার্থ প্রতিম বিষ্ণুর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। আমার ছেলে মো. রেজাউল করিমকে সুস্থ করে ফিরিয়ে দিন। তিনি বলেন, আমার ছেলে এবং আমাদের টাকা-পয়সা হারিয়ে আমরা এখন নিঃস্ব হয়ে গেছি। এ ব্যাপারে বুধবার ঢাকা ক্রাইম রিপোর্টার্স এসোসিয়েশন মিলনায়তনে মো. রেজাউল করিমের পিতা ফজলুল হক মাস্টার সংবাদ সম্মেলন করবেন বলে জানিয়েছেন। এবিষয়ে স্কয়ার হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. পার্থ প্রতিম বিষ্ণু’র সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে হাসপাতাল থেকে তার নাম্বার দিতে অপারগতা প্রকাশ করা হয়।

এ ব্যাপারে হাসপাতালে জনসংযোগ কর্মকর্তা জামশেদ হোসেন জানান, বিষয়টি তিনি অবগত নন। এবিষয়ে স্কয়ার হাসপাতালের মেডিকেল সার্ভিস বিভাগের উপ-পরিচালক ডা. মির্জা নাজিম উদ্দিনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘আমি এই মুহূর্তে রোগী দেখায় ব্যস্ত। আপনি আধা ঘণ্টা পরে ফোন করেন। ’ লিঙ্ক এখানে ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।