ইহা কঠোরভাবে একটি রাজনীতি মুক্ত ব্লগ । ।
নান্দনিক সৌন্দর্যের হাতিরঝিল প্রকল্প আজ উদ্বোধন হতে যাচ্ছে।
এই প্রকল্পের মাধ্যমে ৬টি উদ্দেশ্য সাধিত হয়েছে। ঢাকা মহানগরীর জন্য পূর্ব-পশ্চিম সংযোগ রক্ষাকারী একটি নগর-মহাসড়ক বাস্তবায়িত হয়েছে।
বেগুনবাড়ি-হাতিরঝিল লেকের দু’পাশে নির্মিত সার্ভিস রোডের সাথে স্থানীয় রাস্তার সংযোগ স্থাপিত হয়েছে। হাতিরঝিল ও বেগুনবাড়ি খালের সাথে বনানী এবং গুলশান লেকের সংযোগের ফলে ঢাকা শহরের খালসমূহের জন্য প্রস্তাবিত লেকটি, একটি নিয়ন্ত্রিত হাইড্রোলিক সিস্টেম হিসেবে কার্যকর হয়েছে। ফলে এ এলাকার ড্রেনেজ ম্যানেজমেন্ট ক্যাপাসিটি অনেকাংশে বৃদ্ধি পাবে। এই প্রকল্প ঢাকা মহানগরীর একটি সুবিশাল নীল জলাধারবিশিষ্ট উন্মুক্ত স্থানের অভাব পূরণ করেছে। এর ফলে বিশ্বের কাছে এই মহানগরীর গ্রহণযোগ্যতা বাড়বে।
প্রস্তাবিত লেকের কারণে সংরক্ষিত পানি দ্বারা ভূ-গর্ভস্থ জলাধার-এর রিচার্জ করা সম্ভব হবে। একটি আধুনিক পয়ঃনিষ্কাশন নেটওয়ার্ক, পয়ঃবর্জ্য অপসারণে এই প্রকল্পটি কেন্দ্রীয় ভূমিকা রাখবে। প্রকৌশলী নুরুল হুদা বলেন, এই প্রকল্পে বিনোদন পার্ক, বিশ্বমানের থিয়েটারসহ নানা ধরনের ১৯টি স্থাপনা নির্মাণ করা হবে। লেকের এপার থেকে ওপার যাওয়ার জন্য থাকছে দৃষ্টিনন্দন সেতু, নজরকাড়া বাহারি ফোয়ারা, চমৎকার শ্বেতশুভ্র সিঁড়ি, বিনোদনের জন্য থাকবে সাংস্কৃতিক কেন্দ্র ও শিশু পার্ক। পর্যটকদের নামাজ আদায়ের জন্য থাকবে মসজিদ।
পাল তোলা নৌকায় নৌবিহার করার সুবিধাও থাকবে এখানে।
জানা গেছে, সম্পূর্ণ প্রকল্পটি দু’টি অংশে বিভক্ত। সোনারগাঁও হোটেল থেকে টঙ্গী ডাইভারশন রোড পর্যন্ত জলাশয়কে বলা হয় বেগুনবাড়ি খাল এবং টঙ্গী ডাইভারশন রোড থেকে রামপুরা ব্রিজের মধ্যবর্তী অংশের জলাশয়কে বলা হয় হাতিরঝিল। এই প্রকল্পের আওতায় বেগুনবাড়ি খাল সংস্কার ও পূর্ণ রাস্তা ছাড়াও খালের উত্তরদিকে রয়েছে নয়নাভিরাম ওয়াকওয়ে এবং দক্ষিণ দিকে রয়েছে টুওয়ে সার্ভিস রোড যা দিলু রোডকে সংযুক্ত করেছে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে টঙ্গী ডাইভারশন রোড হতে রামপুরা ব্রিজ পর্যন্ত একটি আধুনিক নেটওয়ার্ক গড়ে উঠবে।
যেখানে একদিকে চলাচলের জন্য এক্সপ্রেসওয়ে এবং পাশাপাশি টু ওয়ে সার্ভিস রোড থাকবে। এর মধ্যে সার্ভিসওয়ে ৮.৮০ কিলোমিটার এবং এক্সপ্রেসওয়ে ৮.০০ কিলোমিটার। প্রকল্পের রাস্তার পাশে রোপণ করা হয়েছে নয়নাভিরাম সারিবদ্ধ বিভিন্ন গাছপালা।
এই প্রকল্পের বেগুনবাড়ি খালটি ইস্কাটন সাইটে হোটেল সোনারগাঁও-এর পিছন থেকে শুরু হয়ে হাতিরঝিল এলাকা হয়ে রামপুরা ব্রিজ পর্যন্ত চলে গেছে। এই খাল দিয়ে গৃহস্থালি বর্জ্য এবং শিল্পবর্জ্য প্রবাহিত হওয়ায় হাতিরঝিল ও বেগুনবাড়ি এলাকার পরিবেশ বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।
লেকের পানি স্বচ্ছ রাখার জন্য এই খালকে ৬ ফিট ডায়া দুটি পাইপ দ্বারা রাস্তার পাশে নিচ দিয়ে রামপুরা ব্রিজ পর্যন্ত নিয়ে যাওয়া হবে এবং লিপটিং স্টেশনের মাধ্যমে পাম্প করে দাসিরকান্দি প্লান্টে প্রেরণ করা হবে।
তিনশ’ একরের এই নয়নাভিরাম লেক ঢাকাকে উপহার দেবে একটি অনন্য সাধারণ স্বাস্থ্যকর পরিবেশ। হাতিরঝিল ও বেগুনবাড়ি খালের সাথে বনানী এবং গুলশান লেকের সংযোগের ফলে ঢাকার খালগুলা একটি নিয়ন্ত্রিত হাইড্রোলিক লিংকে পরিণত হবে।
প্রাথমিক পর্যায়ে এই প্রকল্পের মূল পরিকল্পনা প্রণয়নের কাজ বুয়েট কর্তৃক সম্পাদিত হয়। রাজউক, এলজিইডি, ঢাকা ওয়াসা, বুয়েট বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ১৬ ইঞ্জিনিয়ার কনস্ট্রাকশন ব্যাটেলিয়ান-এই পাঁচটি সংস্থা কর্তৃক এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হয়েছে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।