আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

উত্তর কোরিয়ার একদলীয় ও পরিবারতন্ত্রের শাসনের ইতিকথা ( ১ম পর্ব)

স্বাধীনতা, সে তো আমার প্রিয় মানুষের এক সাগর রক্তের বিনিময়ে কেনা

সবার কাছে পরিচিত উত্তর কোরিয়া নামক দেশটির রাস্ট্রীয় নাম Democratic People's Republic of Korea (DPRK). দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরেই জাপানি উপনিবেশবাদের অবসানের পর কোরিয়া দ্বীপপুন্জের উত্তর অংশ দখল করে সোভিয়েত ইউনিয়ন ও দক্ষিণ অংশ দখল করে যুক্তরাস্ট্র । সোভিয়েত ইউনিয়ান পরবর্তীতে উত্তর কোরিয়ার নেতৃত্ব ছেড়ে দেয় কিমি ইল সাং- এর কাছে । কিম ইল সাং ছিলেন জাপান বিরোধী মার্ক্সিস্ট গেরিলা নেতা যিনি পরে এখন পর্যন্ত ক্ষমতাসীন উত্তর কোরিয়ার একমাত্র দল ওয়ার্কাস পার্টি প্রতিষ্ঠাতা। সোভিয়েত ইউনিয়ান কিম ইল সাং-কে শুধু উত্তর কোরিয়া নয় বরং পুরো কোরিয়ার নেতা হিসাবে স্বীকৃতি দেয়। কিম ইল সাং সোভিয়েত পরামর্শ ও অস্ত্র সহযোগিতায় গড়ে তুলেন বিশাল এক সুসজ্জিত ও সুপ্রশিক্ষত সেনাবাহিনী-উদ্দেশ্য ছিল দক্ষিন কোরিয়াকে নিজ দখলে আনা ।

এলক্ষ্যে ১৯৫০ সালে তিনি দক্ষিন কোরিয়াও আক্রমন করেণ। ফলে দুই দেশ জড়িয়ে পড়ে এক রক্তক্ষয়ি যুদ্ধে ও ১৯৫৩ সাল পর্যন্ত চলা এ যদ্ধে প্রায় ১৫ লক্ষ মানুষ নিহত হয়। জাতিসংঘের হস্তক্ষেপে যদিও দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধ বিরতি হয়েছে তথাপি যুদ্ধ বিরতি আনুষ্ঠানিক কোনো চুক্তি এখনো এই দুই দেশের মধ্যে সম্পাদিত হয়নি।

কিম ইল সাং ছিলেন আজকের কম্যুনিস্ট উত্তর কোরিয়ার স্টালিনিস্ট ভাবাদর্শের প্রতিষ্ঠাতা । তাকে উত্তর কোরিয়ার ফাদারও বলা হয়।

তিনি প্রথমে উত্তর কোরিয়ার প্রধানমন্ত্রী, এরপর প্রেসিডেন্ট ও সর্বশেষ সুপ্রিম লিডার হিসাবে নিজেকে ঘোষণা করেণ। এই সুপ্রিম লিডার পদটি উত্তর কোরিয়ায় এখন পর্যন্ত বিদ্যমান। বর্তমান সুপ্রিম লিডার হলেন কিম ইল সাং-এর নাতি কিম জং উন।

যদিও উত্তর কোরিয়ার রাস্ট্রীয় নাম Democratic People's Republic of Korea (DPRK) তারপরেও উত্তর কোরিয়া কোনো গণতান্ত্রিক রাস্ট্র নয় সেখানে চলছে এক দলীয় শাসন ও কিম পরিবারের রাজত্ব এবং ২০১৩ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে সংবিধানে পারিবারিক উত্তরাধিকারী শাসন অন্তর্ভুক্ত করা হয়। ক্ষমতাসীন দল ‘ওয়ার্কাস পার্টি অব কোরিয়া’র নেতৃত্বে আছেন কিম পরিবারের লোকজন।




উত্তর কোরিয়ার প্রতিষ্ঠাতা কিম ইল সাং ।



১৯৭২ সালের সংবিধান অনুসারে উত্তর কোরিয়ার উৎপাদন ও বিপিনন ব্যবস্থাসহ স্বাস্থ্য সেবা, শিক্ষা, হাউজিং, খাদ্য উৎপাদন রাস্ট্রনিয়ন্ত্রিত। সমাজের মধ্যে শ্রেণী বৈষম্য দুরিকরণের উদ্দেশ্যে সেখানে কালেক্টিভাইজড ফার্মের সৃষ্টি করা হয়েছে যা রাস্ট্র নিয়ন্ত্রিত। কিন্তু তারপরেও উত্তর কোরিয়ায় প্রচন্ডরকম খাদ্য ঘাটতি ও দেশটি খাদ্য সহায়তার জন্য বিদেশের উপর নির্ভরশীল। ২০১৩ সালের জাতিসংঘ রিপোর্ট মতে উত্তর কোরিয়ায় ১৬০ লক্ষ মানুষের জন্য খাদ্য সহায়তা প্রয়োজন আর এই বিপুল পরিমান খাদ্য ঘাটতির জন্য জাতিসংঘ উত্তর কোরিয়ার নীতিকে দায়ী করে।

১৯৯০ এর দশকে উত্তর কোরিয়ায় দুর্ভিক্ষও হয়েছিল।

উত্তর কোরিয়া নিজেকে আত্মনির্ভরশীল রাস্ট্র বলে দাবি করে এবং অনেক ক্ষেত্রে সেটা করে দেখিয়েছও । তবে উত্তর কোরিয়ার প্রথম অগ্রাধিকার খাত হলো - ’সামরিক’ যাকে বলে Military-first policy.

মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী রাস্ট্র হিসাবে উত্তর কোরিয়ার পরিচিতি সারা বিশ্বে। উত্তর কোরিয়াই বিশ্বে একমাত্র রাস্ট্র যে তার সমাজতান্ত্রিক আইডেন্টিটি ও নিজস্ব স্বকীয়তা শত প্রতিকুলতার মধ্যেও সামান্যতম পরিবর্তন আনেনি বরং দিন দিন তার নীতিকে সে আকঁড়ে ধরেছে। সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পরপরই উত্তর কোরিয়া যদিও অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিকভাবে ভাবে প্রতিকুলতার সম্মুখিন হয়েছিল তথাপি উত্তর কোরিয়া এতটুকুও বিচলিত হয়নি বরং সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর আজকের রাশিয়া যেমন পুজিবাদকে গ্রহন করেছে তেমনি সমাজতান্ত্রিক চীনও পুজিবাদের দিকে যাত্রা করেছে, কিন্তু উত্তর কোরিয়া তার জুছে(Juche Korean-style socialist republic) অর্থাৎ স্বনির্ভরতা নীতি থেকে সরে না এসে, মার্কিন যুক্তরাস্ট্রের মত পরাশক্তির রক্তচক্ষুর পরোয়া না করে বারবার নিজস্ব অস্তিত্ব জানান দিয়েছে ! উত্তর কোরিয়ার সফলতা এখানেই।

উত্তর কোরিয়ার সফলতা এই যে বন্ধুর পথ জেনেও, শত প্রতিকুলতার মাঝেও নিজের আত্মমর্যাদার এতটুকু হানি করতে সে রাজি নয়। উত্তর কোরিয়াকে এজন্য পশ্চিমা সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী, প্রতিরোধ ও স্বনির্ভরতার মডেল রাস্ট্র বলা যেতে পারে।

বর্তমানে উত্তর কোরিয়া উদীয়মান সামরিক শক্তির একটি দেশ। সামরিক প্রযুক্তিতে উত্তর কোরিয়া যথেষ্ট স্বয়ংসম্পূর্ণ । উত্তর কোরিয়ার সামরিক খাতের মধ্যে অগ্রাধিকার খাত হলো পরমানু কর্মসুচি ও ব্যালাস্টিক মিসাইল টেকনোলজি।

উত্তর কোরিয়া শুরু থেকেই সমাজতান্ত্রিক ব্লকের দেশ হওয়াতে যুক্তরাস্ট্রের সাথে তার সাপে নেউলে সম্পর্ক। যুক্তরাস্ট্র কখনোই সমাজতান্ত্রিক উত্তর কোরিয়াকে মেনে নিতে পারেনি। মূলত দক্ষিণ কোরিয়া, যুক্তরাস্ট্রের আক্রমন, নাক গলানো থেকে বিরত রাখা ও নিজের সমাজতান্ত্রিক আইডেন্টিটি বজায় রাখতে উত্তর কোরিয়া ষাটের দশকে পরমানু কর্মসুচি শুরু করে। তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়ন উত্তর কোরিয়াকে শান্তিপূর্ণ পরমানু কর্মসুচির নামে পরমানু স্থাপনা গড়তে কারিগরি সহায়তা দেয়। এতে যুক্তরাস্ট্র উত্তর কোরিয়ার উপর ক্ষিপ্ত হয়ে যায়।

উত্তর কোরিয়ার পরমানু সংকটের শুরু আশির দশক থেকে। যুক্তরাস্ট্র একের পর এক বিভিন্ন অবরোধ আরোপ করতে থাকে উত্তর কোরিয়ার উপর আর আক্রমনের হুমকি ধামকি তো ছিলই, সেই হুমকি তো এখনো দিচ্ছে । গোপনে উত্তর কোরিয়াও তার পরমানু অস্ত্র কার্যক্রম চালিয়ে যায়। অবশেষে যুক্তরাস্ট্রের সাথে উত্তর কোরিয়ার তীব্র বাদানুবাদের একপর্যায়ে ২০০৩ সালে উত্তর কোরিয়া নিজেকে NPT থেকে প্রত্যাহারের ঘোষণা দেয় ও অবশেষে ২০০৬ সালে উত্তর কোরিয়া তার প্রথম পরমানু অস্ত্রের পরীক্ষামূলক বিষ্ফোরণ ঘটায়। এরপ্রতিবাদে জাতিসংঘ উত্তর কোরিয়ার উপর কঠোর অর্থনিতক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে।

এপর্যন্ত উত্তর কোরিয়া তিনবার পরমানু অস্ত্রের সফল পরীক্ষা চালায়।

শুধু তাই নয় একই সঙ্গে উত্তর কোরিয়া তার মিসাইল প্রযুক্তিরও উন্নয়ন ঘটায়। যুক্তরাস্ট্রে আঘাত হানার মত পর্যাপ্ত ব্যালাস্টিক মিসাইল এখন উত্তর কোরিয়ার হাতে! উত্তর কোরিয়া একই সঙ্গে তার মহাকাশ প্রযুক্তিরও উন্নয়ন ঘটায়। নি:সন্দেহে উত্তর কোরিয়ার পরমানু অস্ত্র ও ব্যালাস্টিক মিসাইল যুক্তরাস্ট্রকে বিরত রেখেছে উত্তর কোরিয়াকে আক্রমন করতে অন্তত সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর। কারণ উত্তর কোরিয়ার সামনে এখন জ্বলন্ত উদাহরণ আফগানিস্থান, ইরাক ও লিবিয়া ।

তাই আক্রান্ত হলে, পাল্টা আক্রমণ ব্যাতীত তার কাছে কোন বিকল্প নাই। পারমাণবিক যুদ্ধ শুরু হলে উত্তর কোরিয়া যা করবে তাতে দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপানের পুরো ভূখন্ড হিরোশিমা ও নাগাসাকির মত জ্বলে পুড়ে ছারখার হয়ে যাবে। তাদের কাছে ক্ষেপনাস্ত্র প্রতিরোধ প্রযুক্তি থাকলেও তা খুব একটা কাজে আসবে না।

অপরদিকে আমেরিকা দূরে অবস্থিত হওয়ায়, ক্ষেপনাস্ত্র প্রতিরোধ প্রযুক্তি ব্যবহার করে উত্তর কোরিয়ার নিক্ষিপ্ত কিছু ক্ষেপনাস্ত্র হয়ত ধ্বংস করার সময় পাবে এবং ধ্বংশ করতে সক্ষম হবে। কিন্তু উত্তর কোরিয়া থেকে ধেয়ে আসা সবগুলো ক্ষেপনাস্ত্র তারা ধ্বংস করতে পারবে এমন নিশ্চয়তা আমেরিকান সমর বিশেষজ্ঞরাও দিতে পারছেন না।

আমেরিকাতে মাত্র চার পাঁচটি পারমাণবিক বোমা আঘাত হানলে তাতে যে ধ্বংসাত্মক ফলাফল ঘটবে, তাতে বিশ্বে বড় ধরনের রাজনৈতিক ও সামাজিক পরিবর্তন ঘটে যাওয়ার সম্ভবনা রয়েছে, যা সম্ভবত মার্কিনীদেরও কাম্য নয়।

উত্তর কোরিয়ার মিলিটারী অফিসিয়াল নাম দ্য কোরিয়ান পিপলস আর্মি (KPA)। পাঁচটি শাখার সমন্বয়ে গঠিত এ সংস্থা। শাখা পাঁচটি হচ্ছে­ আর্মি গ্রাউন্ড ফোর্স, নেভি, এয়ার ফোর্স, আর্টিলারি গাইডেন্স ব্যুরো ও স্পেশাল অপারেশন ফোর্স। কেপিএকে নিয়ন্ত্রণ করে দেশটির ন্যাশনাল ডিফেন্স কমিশন।

কমিশনের চেয়ারম্যান ও কেপিএ’র বর্তমান সুপ্রিম কমান্ডার দেশটির সর্বোচ্চ নেতা মার্শাল কিম জং-উন। দেশটিতে বর্তমান আর্মির সংখ্যা প্রায় ১ দশমিক ২ মিলিয়ন। এই সংখ্যা বিশ্বে চতুর্থ। রিজার্ভ সৈন্যের দিক দিয়ে উত্তর কোরিয়া বিশ্বে প্রথম। উত্তর কোরিয়ার সকল নাগরিকদের অন্তত পাঁচ বছর সামরিক বাহিনীতে চাকুরী করা বাধ্যতামূলক।



পুর্বেই বলেছি সমাজতান্ত্রিক ও মার্ক্সবাদী নেতা কিম ইল সাংয়ের নেতৃত্বাধীন কোরিয়ার ওয়ার্কার্স পার্টির নিয়ন্ত্রণে উত্তর কোরিয়ায় একদলীয় শাসন চালু হয় ও এরপর থেকেই মূলত আধুনিক উত্তর কোরিয়ার যাত্রা শুরু হয়, কিন্তু পুজিবাদী অর্থনীতির দেশ যুক্তরাস্ট্র তা কিছুতেই মেনে নিতে পারেনি। যুক্তরাস্ট্রের সাথে সাপে নেউলে সম্পর্ক ও পরমানু কর্মসুচি নিয়ে জাতিসংঘ, যুক্তরাস্ট্র ও ইউরোপিয় ইউনিয়নের একের পর এক কঠোর অবরোধ উত্তর কোরিয়াকে সামরিকভাবে উন্নত করলেও অর্থনৈতিকভাবে করেছে নিস্ব। বর্হিবিশ্বে উত্তর কোরিয়া পরিচিতি বিচ্ছিন্ন, দরিদ্র প্রধান ও শাসকগোষ্ঠী দ্বারা নিপীড়িত একটি দেশ। চীন ও সোভিয়েত ইউনিয়ন ছিল উত্তর কোরিয়ান প্রধান মিত্র । চীন এখনো উত্তর কোরিয়ার প্রধান ও অন্যতম মিত্র হলেও জাতিসংঘ অবরোধে চীন উত্তর কোরিয়ার জন্য কোনো ভেটো প্রদান করেনি।

১৯৬০ ও ৭০ এর দশকে উত্তর কোরিয়ার অর্থনীতি তার প্রতিবেশী দক্ষিণ কোরিয়ার চেয়ে অনেক উন্নত ছিল কিন্তু ১৯৮০ এর দশকে উত্তর কোরিয়ার অর্থনীতি ভেঙ্গে পড়তে শুরু করে ও সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর উত্তর কোরিয়ার অর্থনীতিরও ধ্বস নামে। ১৯৯০ এর দশকে অর্থনীতিতে মহাসংকট দেখা দেয় ও সারা দেশে মহামারি আকারে দুর্ভিক্ষ ছড়িয়ে পড়ে ! ১৯৯০ এর দশকে দক্ষিণ কোরিয়া উদার গণতন্ত্রের পথে যাত্রা শুরু করে ও অন্যদিকে ১৯৯৪ সালে উত্তর কোরিয়ার শাসনভার গ্রহন করে কিম ইল সাংয়ের এর পুত্র কিম জং ইল।


কিম জং ইল।

১৯৯৪ সালের ৮ জুলাই উত্তর কোরিয়ার প্রতিষ্ঠাতা কি ইল সাং হার্ট অ্যাটাকে মারা গেলে দায়িত্বভার গ্রহন করেণ তার পুত্র কিম জং ইল। তিনি ২০০৯ সালে সংবিধান সংশোধন করে নিজেকে উত্তর কোরিয়ার সুপ্রিম লিডার হিসাবে ঘোষণা করে নিজের ক্ষমতা সংহত করেণ।

নিজের ক্ষমতা সংহত করতে তাকে তিন বছর ব্যয় করতে হয়েছিল।

৯০ এর দশকে অর্থনৈতিক সংকট ও দুর্ভিক্ষের কারণে ও যুক্তরাস্ট্রের শত্রুতার কারণে উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং ইল তার শাসনযন্ত্রের ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েন। তাই তিনি নাগরিকের মৌলিক চাহিদা মেটানোর চেয়ে নিজের ক্ষমতা সংহত ও কমিউনিস্ট শাসনযন্ত্রকে শক্তিশালীকরণে মনোনিবেশ করেণ। এ লক্ষ্যে তিনি 'Military-First policy' গ্রহন করেণ ও এরফলে তিনি জনতার চেয়ে সেনাবাহিনীর উপর নির্ভর করে ক্ষমতা সুসংহত করেণ। উত্তর কোরিয়া বাইরের শত্রু বিশেষ করে যুক্তরাস্ট্রকে প্রধান শত্রুরাস্ট্র মনে করে ও যুক্তরাস্ট্র যাতে দূর বা অদূর ভবিষ্যতে উত্তর কোরিয়ায় সামরিক হামলা না করে এলক্ষ্যে পরমানু বোমা ও ব্যালাস্টিক মিসাইল প্রযুক্তি করায়ত্ব করে যা আগের পর্বেই আলোচনা করা হয়েছে তারপরেও গ্লোবার ফায়ার পাওয়ার রিপোর্ট অনুসারে বিশ্বে সামরিক শক্তিতে উত্তর কোরিয়ার অবস্থান ২৯ যেখানে তার নিকটতম প্রতিবেশী দক্ষিণ কোরিয়ার অবস্থান ৮ ! সামরিক নীতিকে প্রধান্য দিলেও তা শুধুমাত্র ব্যবহার হয়েছে কিম পরিবার ও ক্ষমতাসীন ওয়ার্কাস পার্টির ক্ষমতা সুসংসহত করতে তথা দেশের ভিতর ও বাইরের শত্রু মোকাবেলা করতে।

এরপরেও কিম জং ইল অর্থনীতি সংস্কারে কিছু পদেক্ষেপ নিয়েছিলেন, কিন্তু জাতিসংঘ ও যুক্তরাস্ট্রের কঠোর অবরোধ আরোপের কারণে সেগুলো তেমন সফলতা লাভ করেনি। কিম জং ইল তার ১৭ বছরের শাসনকালে মাত্র চীন ও রাশিয়া দুটি দেশে রাস্ট্রীয় সফরে গিয়েছিলেন। অবশ্য চীন, রাশিয়া ছাড়াও উত্তর কোরিয়ার সাথে বিশেষ করে মার্কিন বিরোধী দেশগুলি যেমন কিউবা, ভিয়েতনাম ও ইরানের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বিদ্যমান।
(......চলবে)

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.